স্বাস্থ্যকর্মীদের রোষের মুখে জুনিয়র ডাক্তারেরা

ফার্মাসিস্টদের অভিযোগ, বিনা প্রেসক্রিপশনে ওষুধ দিতে না-চাওয়ায় মঙ্গলবার অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারের রোষের মুখে পড়েন কর্তব্যরত ফার্মাসিস্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

নিরাপত্তার অধিকার রক্ষায় মাস চারেক আগে এন আর এস থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন সারা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই এন আর এসেই জনৈক জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে ফার্মাসিস্টকে মারধরের অভিযোগ ঘিরে টানাপড়েন তৈরি হল বুধবার।

Advertisement

ফার্মাসিস্টদের অভিযোগ, বিনা প্রেসক্রিপশনে ওষুধ দিতে না-চাওয়ায় মঙ্গলবার অভিযুক্ত জুনিয়র ডাক্তারের রোষের মুখে পড়েন কর্তব্যরত ফার্মাসিস্ট। উল্টো দিকে, সেই অভিযোগের সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। জুনিয়রদের পাশে দাঁড়িয়ে হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ ‘ইনজুরি রিপোর্ট’ প্রকাশের দাবি তুলেছেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত জুনিয়র চিকিৎসক ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগে এক মহিলা ইন্টার্নের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে জয়দেবেরই বিরুদ্ধে। জুনিয়র চিকিৎসকদের বক্তব্য, ওই ইন্টার্ন প্রথমে ওষুুধ আনতে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে অভিযুক্ত পিজিটি ফার্মাসিতে আসেন। ফোনে প্রেসক্রিপশন দেখানো হলেও ওষুধ দেওয়া হয়নি। উল্টে তাঁদের ঘিরে ১০-১২ জন হুমকি দেয় ও হেনস্থা করে বলে অভিযোগ।

ফেসবুকে পোস্টটি করেছিল তৃণমূল সমর্থিত ‘প্রোগ্রেসিভ ফার্মাসিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’। ওই সংগঠন তথা এন আর এসের রোগী-কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হলেন তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা নির্মল মাজি। ফলে গোটা ঘটনার পিছনে রাজনীতির যোগও উড়িয়ে দিচ্ছেন না চিকিৎসকদের একাংশ।

Advertisement

যদিও পত্রপাঠ তা খারিজ করে ফার্মাসির ইন-চার্জ সমীর মান্না জানান, চিকিৎসকেরাই জয়দেবকে সিসিইউয়ে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। এ দিনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষোভের কথা জানান ফার্মাসিস্টরা। সেখানে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ্যে আনার দাবি জানানো হয়েছে। সমীরবাবুর কথায়, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে আমরাও শামিল হয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরাই যদি এ ভাবে মারমুখী হন, তা হলে কোথায় যাব? এঁরা কি চিকিৎসক?’’

কী বলছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি? ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম’-এর বক্তব্য, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে কোনও হিংসাত্মক ঘটনার বিরোধী তারা। তা ছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কী বলছে তার ভিত্তিতে কোনও সিদ্ধান্তে আসা ঠিক নয়।

নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেছেন ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’-এর সম্পাদক সজল বিশ্বাস। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনায় যাতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী সম্পর্ক ক্ষুণ্ণ না হয়, সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে।’’

এন আর এসের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী নির্মল মাজি বলেন, ‘‘হাসপাতাল সেবার জায়গা। তদন্ত করে বিষয়টি মিটিয়ে নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন