Coronavirus

ছোঁয়াচ এড়াবে কী ভাবে, চিন্তা কালীঘাট মন্দিরে

লকডাউন পর্বে দু’দিনের ব্যবধানে বন্ধ হয়েছিল দক্ষিণেশ্বর ও কালীঘাট মন্দির।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ০৩:৫০
Share:

সতর্কতা: কালীঘাট মন্দিরে চলছে জীবাণুনাশের কাজ। নিজস্ব চিত্র

বছরখানেক আগে সংস্কারের জন্য কালীঘাট মন্দির চত্বরে ভাঙাচোরার কাজ হয়েছিল। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেই কাজ শেষ না-হওয়ায়, মূল মন্দির ও নাটমন্দির ছাড়া কালীঘাট মন্দির চত্বর কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে আছে। ইতিমধ্যে আনলক-১ পর্বে এসে মন্দির খোলার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কিন্তু মন্দির কমিটিকে ভাবাচ্ছে ছোঁয়াচ এড়িয়ে ভক্তের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি। তার জন্য লালবাজারের সঙ্গে আলোচনাও চলছে মন্দির কমিটির। মন্দির কমিটির কর্তারা জানান, মন্দির খুললে পরিস্থিতির উপরে নজর রেখেই নিরাপত্তার বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হবে।

Advertisement

আগামী শনিবার থেকে দক্ষিণেশ্বর মন্দির খুলে যাওয়ার কথা। লকডাউন পর্বে দু’দিনের ব্যবধানে বন্ধ হয়েছিল দক্ষিণেশ্বর ও কালীঘাট মন্দির। দক্ষিণেশ্বর ২১ মার্চ, আর কালীঘাট মন্দির ২৩ মার্চ বন্ধ হয়।

করোনা প্রতিরোধে হাত-পা ধোয়ায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মন্দির চত্বরে বিদ্যুতের সংযোগ না-থাকায় জলের ব্যবস্থাও নেই। পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে। মূল মন্দির ও নাটমন্দির ছাড়া সর্বত্রই ভাঙা দোকানের ধ্বংসাবশেষ ও আবর্জনায় ভরে রয়েছে।

Advertisement

এই অবস্থায় কী ভাবে মন্দির চালু করা যায়, তা নিয়ে নিয়মিত বৈঠক চলছে কালী টেম্পল কমিটির। সরকারি নির্দেশ মেনে সংক্রমণ এড়িয়ে মন্দিরে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করানো নিয়ে চিন্তায় কালী টেম্পল কমিটি ও সেবায়েত কাউন্সিলের কর্তারা। মন্দির সূত্রের খবর, আপাতত পাঁচটি গেটে জীবাণুমুক্তকরণ সুড়ঙ্গ বসবে। ওই ধরনের গেট তৈরি করতে দেওয়া হয়েছে। কালীঘাট মন্দিরে মূলত ছ’টি গেট রয়েছে। আপাতত পাঁচটি গেটের সামনে ওই সুড়ঙ্গ বসানো হবে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে দু’টি গেট ব্যবহার করা হবে। পরিকল্পনা করা হচ্ছে, দূরত্ব-বিধি মেনে দশ জন করে দর্শনার্থীকে একটি দরজা দিয়ে প্রবেশ করিয়ে অন্য একটি দরজা দিয়ে মন্দিরের বাইরে বার করার। ধ্বংসস্তূপ ও আবর্জনাও সরানো হবে।

মন্দিরের তরফে কল্যাণ হালদার বলেন, ‘‘জীবাণুমুক্তকরণ গেট বসানোর পাশাপাশি মন্দির চত্বরে বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে। গেট বসানোর পরে ওই সব কাজ হবে।’’ কালীঘাট মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হয় কালীঘাট থানা থেকেই। মন্দির খুললে বিভিন্ন দিনে ভক্তের ঢল নামবে। করোনার পরিস্থিতিতে সেই সময়ে কী ভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সে দিকে চেয়ে আছেন মন্দির কর্তৃপক্ষও।

মন্দির বন্ধ থাকলেও প্রতিদিনই কালীমূর্তির নিত্যপুজো হচ্ছে। কালী টেম্পল সেবায়েত কাউন্সিলের সম্পাদক দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভোগ রান্না ও নিত্যপুজার কারণে মন্দিরে বহিরাগতদের যাতায়াত রয়েছে। সেই কারণে দু’টি স্যানিটাইজ়ার স্প্রে করার যন্ত্র ও দেহের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রও কেনা হয়েছে। নিয়মিত মূল মন্দির জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার তরফেও মাঝেমধ্যে মূল মন্দির ও নাটমন্দির জীবাণুমুক্তকরণ করা হচ্ছে। বহিরাগতদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’

মন্দির কমিটি জানাচ্ছে, সরকারি বিধি মেনে ফুল, সিঁদুর, প্রসাদের ঝুড়ি, শালপাতার উপরেও নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মন্দির কমিটির তরফে কল্যাণ হালদার বলেন, ‘‘গেট বসানোর পরে সব ব্যবস্থা নিয়েই দিন সাতেকের মধ্যে মন্দির সাধারণের জন্য খুলতে আমরা আশাবাদী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন