সেনার জমিতে নির্মাণে লাগবে না পুর অনুমতি, জানাল হাইকোর্ট

হাইকোর্টে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ জানান, আলিপুরে ৪/১ বেলভেডিয়ার রোডের ঠিকানায় সেনাবাহিনীর দু’একর জমি রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০২:৫০
Share:

সেনাবাহিনী নিজেদের জমিতে কোনও নির্মাণ করতে চাইলে তার জন্য রাজ্য সরকার বা কলকাতা পুরসভার কোনও অনুমতি লাগবে না বলে নিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বেলভেডিয়ার রোডের একটি নির্মাণ বন্ধ রাখতে বছর দু’য়েক আগে নোটিস দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। তার জেরে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের বিরুদ্ধে গত মে মাসে মামলা দায়ের করে হাইকোর্টে। সেই মামলায় বুধবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক পুরসভার নোটিস খারিজ করে ওই কথা জানিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পুলিশের কোনও অধিকার নেই কেন্দ্রের ঠিকাদার সংস্থাকে কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়ার।

Advertisement

হাইকোর্টে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ জানান, আলিপুরে ৪/১ বেলভেডিয়ার রোডের ঠিকানায় সেনাবাহিনীর দু’একর জমি রয়েছে। সেই জমিতে অফিস ও আবাসন গড়তে চেয়ে চার বছর আগে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন চান সেনা কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রপতিকে বলা হয়, ১৩ নম্বর ক্যামাক স্ট্রিটের যে ঠিকানায় সেনাবাহিনীর অফিস ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, সেখানকার মালিক সেনাবাহিনীকে আর ভাড়া দিতে রাজি নন। ওই বছরই রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেয়ে ওই জমিতে একটি পাঁচতলা ও দু’টি চারতলা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী।

কৌশিকবাবু জানান, ওই জমিতে ১৭টি বড় গাছ ছিল। ২০১৫ সালে কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে সেই সব গাছ কাটার অনুমতি চাওয়া হয়। পুরসভার অনুমতি নিয়ে নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে শুরু হয়। ২০১৬ সালে রাজ্য সরকার সেনা কর্তৃপক্ষকে জানায়, ওই জমিতে নির্মাণ হলে আলিপুর জেলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই নির্মাণ বন্ধ করা হোক। ওই বছরই পুর কর্তৃপক্ষ সেনাকে জানান, ওই নির্মাণের জন্য কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই কাজ বন্ধ রাখতে হবে। আলিপুর থানার পুলিশ কোন অধিকারে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিল, সেই প্রশ্নও তোলা হয় মামলার আবেদনে।

Advertisement

সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে কেন্দ্র। মামলার শুনানিতে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল জানান, কেন্দ্রীয় ভবন আইন (সেন্ট্রাল বিল্ডিং অ্যাক্ট) অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর প্রয়োজনে কোনও বাড়ি বা নির্মাণ হলে তার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার বা পুর কর্তৃপক্ষের কোনও অনুমতি নিতে হয় না। নিরাপত্তা বা গোপনীয়তার প্রশ্নে সেনাবাহিনী দেশের যে কোনও জায়গায় নির্মাণ করতে পারে।

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত আদালতে জানান, কেন্দ্রীয় সরকার মামলার আবেদনে কোথাও জানায়নি যে, সেনাবাহিনী নিরাপত্তা বা গোপনীয়তার প্রয়োজনে ওই জমিতে নির্মাণ করছে। নিরাপত্তা বা গোপনীয়তার জন্য নিশ্চয়ই আবাসন তৈরি হচ্ছে না। তা ছাড়া, সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নেওয়ার তো কোনও প্রশ্ন নেই।

পুরসভার আইনজীবী অলক ঘোষ আদালতে জানান, রাজ্যের যে কোনও এলাকায় যে কোনও নির্মাণ করতে হলে সংশ্লিষ্ট পুরসভা বা গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুমতি লাগে। সেই কারণেই বলা হয়েছে, অনুমতি নেওয়া দরকার। তা ছাড়া, ওই জমির ক্ষেত্রে সেন্ট্রাল বিল্ডিং অ্যাক্ট কার্যকর হবে কি না, তা পুর কর্তৃপক্ষই বা জানবেন কী করে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন