টাওয়ার জটে কাজ আটকে মিউটেশনের

পুরসভা সূত্রের খবর, পুরনো কলকাতার কোন জমির কী চরিত্র, তার রেকর্ড পুরসভার কাছে রয়েছে। তবে ১৯৮৫ সালের পরে যে সব অঞ্চল কলকাতা পুর এলাকার মধ্যে ঢুকেছে, তা আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের অধীনে ছিল।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

কলকাতা শহরে জমি, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মিউটেশন এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার দাবি বহু দিনের। কারণ, শহরের এক থেকে একশো নম্বর ওয়ার্ডের মিউটেশন পুর ভবনে হলেও সংযোজিত এলাকা, অর্থাৎ ১০১ থেকে ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিউটেশন করাতে হলে ছাড়পত্র নিতে ছুটতে হত দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনের কাছে। তাতে অকারণে ভোগান্তি বাড়ত শহরবাসীর। গত কয়েক বছরে বাসিন্দারা এ নিয়ে বেশ কয়েক বার দরবার করলেও কোনও ফল হয়নি। সম্প্রতি মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুর ভবনে জেলা প্রশাসনের ওই দফতর, অর্থাৎ ভূমি ও ভূমি সংস্কার (বিএলআরও) দফতরের একটি শাখা চালু করেছেন। এর ফলে বহু মানুষেরই সুবিধা হবে। কিন্তু অফিস চালু হলেও সেখানে প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, পুরনো কলকাতার কোন জমির কী চরিত্র, তার রেকর্ড পুরসভার কাছে রয়েছে। তবে ১৯৮৫ সালের পরে যে সব অঞ্চল কলকাতা পুর এলাকার মধ্যে ঢুকেছে, তা আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের অধীনে ছিল। ফলে ওই সব এলাকার কোনও জমি বা বাড়ির চরিত্র কেমন, তা পুরসভার জানা নেই। পুরসভার জমি জরিপ বিভাগের এক আধিকারিক জানান, মিউটেশন করানোর ছাড়পত্র দেওয়ার আগে বিএলআরও অফিসের কাজ হল জমি, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের চরিত্র নির্ধারণ করা। অর্থাৎ, ওই জমিতে আগে পুকুর বা জলাভূমি ছিল কি না, তা খুঁজে বার করা অথবা সেটি সরকার বা সরকারের বাজেয়াপ্ত করা জমি কি না, তা খতিয়ে দেখা। সেই সমস্ত রেকর্ড একমাত্র সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের কাছেই সংরক্ষিত থাকে। রেকর্ডে তা দেখেই মিউটেশনের আবেদনে ছাড়পত্র দেয় সংশ্লিষ্ট দফতর।

পুর ভবনে সদ্য চালু হওয়া বিএলআরও দফতর সূত্রের খবর, তাদের সমস্ত রেকর্ড রাখা আছে ই-প্রযুক্তিতে। যা একটি বিশেষ মোবাইল সংস্থার টাওয়ার না থাকলে বার করা সম্ভব নয়। সেটা বুঝেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) গত সোমবার পুরসভাকে একটি চিঠি দিয়ে জানান, পুর ভবনে বিএলআরও অফিসে কাজ শুরু করতে গেলে পুর ভবনের ছাদে ৯ মিটার উচ্চতার একটি টাওয়ার বসাতে হবে। না-হলে ই-প্রযুক্তিতে সংরক্ষিত জমির রেকর্ড দেখা যাবে না। পুর ভবনে আসা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসারও এ নিয়ে পুর প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

Advertisement

এখন প্রশ্ন হল, পুর ভবনের ছাদে ৯ মিটার (প্রায় ৩০ ফুট) উঁচু লোহার টাওয়ার বসানো বিপজ্জনক হবে না তো? জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে চিঠি পেয়ে পুর প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরসভারই বিল্ডিং এবং ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের পরামর্শ চাওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট দুই দফতর থেকে বলা হয়, পুর ভবন হেরিটেজ তালিকাভুক্ত। বহু পুরনো। তার উপরে অত উঁচু টাওয়ার বসানো ঠিক হবে না। এর পরেই পুরসভার পক্ষ থেকে ওই মোবাইল সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুরোধ করা হয়, মাটির নীচ দিয়ে কেবল্ বসিয়ে ব্যবস্থা করা হোক। পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিক জানান, ওই সংস্থা সম্মত হলেই বাকি কাজ শুরু করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন