ওদের ঘুম না ভাঙিয়ে কাজ করছে পুরসভা

ওরা মানে, বাঘ, ভল্লুক, হাতি, রং-বেরঙের পাখি থেকে মাস কয়েক আগে আসা ক্যাঙারু। ওদের সঙ্গে দেখা করতে বছরভর আলিপুর চিড়িয়াখানায় আসেন হাজার হাজার দর্শনার্থী।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৬
Share:

উদ্যোগ: চিড়িয়াখানার সামনে ফুটব্রিজের কাজ চলছে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

ওরা নিদ্রা গিয়েছে। গোলযোগ সইতে পারবে না। তাই নির্মাণ কৌশলই বদলে ফেলল কলকাতা পুরসভা।

Advertisement

ওরা মানে, বাঘ, ভল্লুক, হাতি, রং-বেরঙের পাখি থেকে মাস কয়েক আগে আসা ক্যাঙারু। ওদের সঙ্গে দেখা করতে বছরভর আলিপুর চিড়িয়াখানায় আসেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। উৎসব বা শীতের মরশুমে সংখ্যাটা বহুগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু এই বিপুল দর্শনার্থীর চাপ সামলাতে চিড়িয়াখানার সামনে গাড়ির গতি মন্থর হয়ে যায়। কখনও কখনও দুর্ঘটনাও ঘটে। তাই কলকাতা পুরসভা বছর কয়েক আগেই চি়ড়িয়াখানার সামনে একটি ফুটব্রিজের পরিকল্পনা করেছিল। সম্প্রতি সে কাজ গতি পেয়েছে।

এ বার ওদের কথা ভেবে সেই কাজের নির্মাণ কৌশলই বদলে ফেলল পুরসভা। এক পুর আধিকারিক জানান, রাতেই প্রধানত নির্মাণের কাজ চলবে। ওই সময়ে নিদ্রায় যায় পশু-পাখি। ঝালাই, ধাতব জিনিস কাটা বা নির্মাণসামগ্রী ক্রমাগত ওঠানো-নামানোয় আওয়াজ হবে। তাতে ক্ষতি হতে পারে পশু-পাখিদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তাই ওই সব কাজ চিড়িয়াখানার সামনে করছে না পুরসভা। বরং ফুটব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় সব ‘পার্টস’ কারখানা থেকেই তৈরি করে আনা হচ্ছে। চিড়িয়াখানার সামনে এনে শুধু সেগুলি জোড়া লাগানোর কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি অন্য নির্মাণস্থলে যেমন জেনারেটর চালিয়ে ঝালাই বা কাটিংয়ের কাজ করা হয়, এ ক্ষেত্রে সেটাও বন্ধ রাখছে পুরসভা। এখানে শুধু ধাতব সামগ্রী একত্রিত করে কাঠামো খাড়া করা হচ্ছে।

Advertisement

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সার্ভে এবং ফুটব্রিজের নকশার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। পাইলিংয়ের কাজও শেষ। পুরসভা সূত্রের খবর, চিড়িয়াখানার সামনের ওই ফুটব্রিজটি ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং সাড়ে ছ’মিটার উচ্চতার। ব্রিজের দু’প্রান্তেই সিঁড়ির পাশাপাশি চলমান সিঁড়ি থাকবে। এটি তৈরি করতে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘তবে এ জন্য পুরসভাকে একটি টাকাও খরচ করতে হবে না। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের এই প্রকল্পে কাজের বরাত পাওয়া বেসরকারি সংস্থা ওই টাকা দেবে। এমনকী, ব্রিজটি তৈরির পরে তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও ওই সংস্থাকেই নিতে হবে। এমনটাই চুক্তি হয়েছে পুরসভার সঙ্গে।

প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই এই কাজ কতদূর এগিয়েছে, তা নিয়ে ব্রিজ নির্মাণকারী সংস্থার কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল পুর প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফে ফুটব্রিজ নির্মাণের বিস্তারিত রিপোর্ট পুর প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। ফুটব্রিজটি তৈরি হলে ওই এলাকার যানজটের সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে বলে জানাচ্ছেন পুর আধিকারিক এবং কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। তাঁদের কথায়, প্রতিদিন ওই এলাকায় প্রায় কয়েক হাজার লোক আসেন। শীত বা উৎসবে সেই সংখ্যাটা বহুগুণ বেড়ে যায়। ফলে ফুটব্রিজ হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা যেমন কমবে, তেমনই এলাকায় যানজট কম হবে। স্থানীয় কাউন্সিলর দেবলীনা বিশ্বাস জানান, ফুটব্রিজের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন