Minor Illegal Construction

ছোটখাটো বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন ডিজি, চাইছে কলকাতা পুরসভা, সংশোধন হতে পারে পুর আইন

গত কয়েক বছরে বেআইনি নির্মাণ রুখতে পুর-প্রশাসন কড়াকড়ি বাড়িয়েছে। এর ফলে বিল্ডিং বিভাগে ‘মাইনর ডেভিয়েশন রেগুলারাইজ়েশনে’র আবেদন উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৪৭
Share:

ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

কলকাতায় অনুমোদিত নকশার বাইরে গিয়ে ছোটখাটো নির্মাণ প্রায় ঘরোয়া অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বাড়তি কার্নিস, সিঁড়িঘর, ছাদের এক কোণে ছোট ঠাকুরঘর— বহু ক্ষেত্রে এগুলি মূল নকশায় না থাকলেও বাড়ির মালিকেরা নির্মাণ করেন। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং আইনে এমন পরিবর্তনকে ‘মাইনর ডেভিয়েশন’ বলা হয়। এত দিন এই ধরনের অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হবে, না কি রেগুলারাইজ় করা হবে, সে সিদ্ধান্তের দায়িত্ব ছিল মেয়র এবং মেয়র পরিষদের। কিন্তু এ বার সেই ক্ষমতার কিছুটা সরাসরি বিল্ডিং বিভাগের ডিজির হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ করতে চলেছে পুরসভা। সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক মেয়র পারিষদদের বৈঠকেই এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিমের প্রস্তাবে অধিকাংশ মেয়র পারিষদ সায় দিয়েছেন।

Advertisement

গত কয়েক বছরে বেআইনি নির্মাণ রুখতে পুর-প্রশাসন কড়াকড়ি বাড়িয়েছে। এর ফলে বিল্ডিং বিভাগে ‘মাইনর ডেভিয়েশন রেগুলারাইজ়েশনে’র আবেদন উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে, মেয়র পরিষদের প্রতি মাসের বৈঠকে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ফাইলই আসছে এই সংক্রান্ত বিষয়ে। ফলে অন্যান্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময় পাওয়া যাচ্ছে না। পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “মেয়র পারিষদদের বৈঠকের অধিকাংশ সময় চলে যাচ্ছে ছোটখাটো অবৈধ নির্মাণের ফাইল নিয়ে আলোচনা করতে। এতে অন্যান্য জরুরি নীতি-সংক্রান্ত বিষয়গুলির আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটছে।”

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়ভার ডিজি বিল্ডিং-এর উপর দেওয়ার প্রস্তাব উঠে এসেছে। ডিজি-কে ক্ষমতা দিলে রেগুলারাইজ়েশন প্রক্রিয়া দ্রুত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে পুর প্রশাসনের একাংশের আশঙ্কা, এমন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে। কারণ, পুর-আইন অনুযায়ী মাইনর ডেভিয়েশন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বর্তমানে শুধুমাত্র মেয়র এবং মেয়র পরিষদের। আগের মেয়রের আমলে অনেক সময় ব্যক্তিগত ভাবে ফাইলে সই করে অনুমোদন দেওয়া হত— যা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। সেই বিতর্ক এড়াতেই বর্তমান মেয়র সমস্ত সিদ্ধান্তকে পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের নিয়মে বেঁধে দেন। এখন ডিজি-কে ক্ষমতা দিলে পুর-আইনে সংশোধনের প্রয়োজন পড়তে পারে। সেই কারণে পুরসভা এখন আইনি দিকগুলি বিস্তারিত খতিয়ে দেখছে। সিদ্ধান্ত হলে রেগুলারাইজ়েশন প্রক্রিয়া যেমন দ্রুত হবে, তেমনই মেয়র পরিষদের বৈঠকও মুক্ত হবে অনেক ফাইলের চাপ থেকে। তবে শেষ পর্যন্ত এই পরিবর্তন বাস্তবায়িত হবে কি না, তা নির্ভর করছে আইনি মতামত এবং পরিষদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের উপর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement