বিনা পয়সায় জমি! পুর আর্জি খারিজ কেএমডিএ-র

সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দাম দিয়েই জমি নেওয়া হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় চুক্তিপত্রও তৈরি করা হবে দুই সংস্থার মধ্যে।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০২:০৬
Share:

কেএমডিএ ভবন। ফাইল চিত্র

মাত্র দেড়শো বর্গফুটের জায়গা। তাতে শৌচালয় হবে। কিন্তু তা নিয়েই টানাপড়েন শুরু হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। দুই যুযুধান পক্ষ হল কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)।

Advertisement

পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কসবায় রাসবিহারী কানেক্টরে একটি বেসরকারি স্কুলের পাশের প্রায় দেড়শো বর্গফুট জায়গায় শৌচালয়ের জন্য জমি চিহ্নিত করেছিল পুরসভা। জমির মালিক কেএমডিএ-র কাছ থেকে বিনা পয়সায় সে জমিও চাওয়া হয়েছিল। পুরসভার দাবি ছিল, জনস্বার্থে কাজের জন্য বিনা পয়সায় জমি দেওয়া হোক তাদের। কিন্তু কেএমডিএ পত্রপাঠ সে দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। সংস্থা স্পষ্ট জানিয়েছে, দাম ছাড়া সংশ্লিষ্ট জমি দেওয়া সম্ভব নয়। যা নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে পুরসভার অন্দরে। আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, পুরসভা তো নিজে ব্যবহারের জন্য কিছু করছে না। জনস্বার্থেই ওই কাজ করছে। তার জন্য দাম নেওয়ার কী দরকার! বিশেষ করে অপর সংস্থাটিও যখন সরকারি। কিন্তু কেএমডিএ-র তরফে সে সব কোনও যুক্তিই গ্রাহ্য করা হয়নি।

পুরসভা সূত্রের খবর, ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত কসবার ওই বেসরকারি স্কুলের পশ্চিম প্রান্তে ১৬২ বর্গফুটের একটি জায়গা পুর কর্তৃপক্ষের তরফে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেখানে সাংসদ সুব্রত বক্সির সাংসদ তহবিলের টাকায় ‘পে অ্যান্ড ইউজ টয়লেট’ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তা-ও প্রায় দু’বছর আগে। সেই মতোই জমির
মালিক কেএমডিএ-কে চিঠি দিয়ে পুরসভা জমিটি হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ করে। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট জমিটি দিতে রাজি হন। কিন্তু জানিয়ে দেন যে, ওই জমির মূল্য বাবদ পুরসভাকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এই ঘটনার পরেই আধিকারিকদের একাংশ প্রশ্ন তোলেন, শৌচালয় তৈরিতে ওইটুকু জমির জন্য কেন অর্থ দিতে হবে! পুরসভা তো নিজস্ব ব্যবহারের জন্য জমি চাইছে না!

Advertisement

এই টানাপড়েনের জন্য বিষয়টি কিছুদিন থমকে থাকে। তার পর কয়েক মাস আগে ফের পুরসভা বিষয়টি নিয়ে উঠেপড়ে লাগে। পুরসভার তরফে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়, বিনা পয়সায় জমিটি দিয়ে দিতে। কিন্তু সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, পুরসভার আবেদন মঞ্জুর করা সম্ভব নয়। ফলে পুরো দামই দিতে হবে জমির। আর তাতেই ক্ষুব্ধ পুর প্রশাসনের একাংশ।

যদিও সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দাম দিয়েই জমি নেওয়া হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় চুক্তিপত্রও তৈরি করা হবে দুই সংস্থার মধ্যে। সেই মতোই ১৬২ বর্গফুট ওই
জায়গার দাম বাবদ কেএমডিএ’কে ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ২৯২ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর প্রশাসন। পুরসভার পদস্থ এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমরা বিনা পয়সায় জমি দিতে বলেছিলাম। কেএমডিএ সেটা মানেনি। এটা হতেই পারে। এতে কোনও বিতর্ক নেই। দাম দিয়েই পুরসভা ওই জমি নেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন