—ফাইল চিত্র।
কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ভাগাড়ে আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত হয়নি পুরসভাগুলি। প্রকল্পের জন্য জায়গা বার করার পরেও সেখানেই ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। ফলে থমকে গিয়েছে প্রকল্পের কাজ। এই সমস্যার সমাধানে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দ্বারস্থ হলেন কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা।
দক্ষিণ দমদমের প্রমোদনগরে দক্ষিণ দমদম, দমদম, উত্তর দমদম, বরাহনগর এবং কামারহাটি পুরসভাকে নিয়ে কঠিন বর্জ্য অপসারণে একটি প্রকল্পের কাজ করছে কেএমডিএ। সংস্থা সূত্রের খবর, প্রকল্পটি চালু হলে পচনশীল এবং অপচনশীল আবর্জনা থেকে অপ্রচলিত শক্তি তৈরির পাশাপাশি, ব্যবহারযোগ্য সামগ্রীও তৈরি করা যাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পটি তিন ভাগে বিভক্ত— কমপোস্ট প্ল্যান্ট, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট স্যানিটারি ল্যান্ড ফিলসাইট এবং বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক জানান, সার তৈরির লক্ষ্যে কমপোস্ট প্ল্যান্ট তৈরির কাজ শেষের মুখে। কিন্তু তার পরেই প্রকল্পের কাজ থমকে গিয়েছে।
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, প্রতি দিন পাঁচটি পুরসভার প্রায় ৬০০ মেট্রিক টন জঞ্জাল প্রমোদনগরের ভাগাড়ে ফেলা হয়। খাতায়-কলমে পাঁচটি পুরসভা হলেও, অলিখিত ভাবে নিউ ব্যারাকপুর এবং পানিহাটি পুরসভার জঞ্জালও সেখানে ফেলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জঞ্জালের স্তূপ সরিয়ে প্রকল্পের জন্য জায়গা বার করাই মুশকিল। দফতরের এক আধিকারিক জানান, প্রকল্পটি হলে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলি উপকৃত হবে। অথচ বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও পুর কর্তৃপক্ষদের কাছে আশানুরূপ সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছিল না। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘১২ মিটার উঁচু জঞ্জালের পাহাড় সরিয়ে কমপোস্ট প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছে। বাকি কাজগুলির জন্য বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা জঞ্জাল সরিয়ে জায়গা বার করছে। কিন্তু পর দিনই সেখানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এ ভাবে কি প্রকল্পের কাজ সম্ভব?’’ সমস্যা সমাধানে পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদদের নিয়ে চলতি মাসে বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে এক চেয়ারম্যান পারিষদের বক্তব্য ছিল, প্রকল্প যখন কেএমডিএ-র, তখন জঞ্জাল কোথায় ফেলা হবে তা তারাই বুঝে নিক! এর পরেই বিষয়টি মন্ত্রীর গোচরে আনা শ্রেয় মনে করেন দফতরের কর্তারা।
সম্প্রতি পুরসভাগুলির প্রতিনিধিদের তলব করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ। সূত্রের খবর, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রতি দিনের পচনশীল বর্জ্য উত্তরপাড়ার সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্টে চলে যাবে। অপচনশীল বর্জ্য বৈদ্যবাটীতে জমি ভরাটের কাজে ব্যবহৃত হবে। এর জন্য গাড়ির খরচ দেবে কেএমডিএ। বরাহনগর পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ দিলীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘কেএমডিএ আমাদের জন্য প্রকল্পটি করছে। এটা সকলকে বুঝতে হবে।’’