ভোল বদলাবে বিমানবন্দরের, হচ্ছে টার্মিনাল

জায়গার সঙ্কুলান হচ্ছে না। তাই ২০২৮ সালকে মাথায় রেখে কলকাতা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ পরিকল্পনা জমা পড়েছে দিল্লিতে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:০১
Share:

কলকাতা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ পরিকল্পনা জমা পড়েছে দিল্লিতে।

হু হু করে বাড়ছে যাত্রী সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উড়ানও।

Advertisement

জায়গার সঙ্কুলান হচ্ছে না। তাই ২০২৮ সালকে মাথায় রেখে কলকাতা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ পরিকল্পনা জমা পড়েছে দিল্লিতে। কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ হবে সেই সম্প্রসারণে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র শুক্রবার বলেন, ‘‘যে হারে যাত্রী ও উড়ানের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে সারা দেশ জুড়েই সম্প্রসারণ হচ্ছে। কলকাতা সেই তালিকায় রয়েছে।’’ জানা গিয়েছে, ২০২৮ সালের পরেও সম্প্রসারণের প্রয়োজন হবে। কিন্তু তা জমির অভাবে করা যাবে না। তখন বিকল্প বিমানবন্দর ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।

কয়েক মাস ধরে মার্কিন সংস্থা ল্যানড্রাম অ্যান্ড ব্রাউনকে দিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরের একটি সমীক্ষা করান কর্তৃপক্ষ। তারাই সম্প্রতি একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, হাতে থাকা জমি কী ভাবে সদ্ব্যবহার করা যায়, তারই রিপোর্ট দিয়েছে ওই সংস্থা।

Advertisement

কলকাতায় সমান্তরাল রানওয়েতে একসঙ্গে বিমান ওঠানামা করা যাবে না বলে আপাত ভাবে ঠিক হয়েছে। তবে, এখন ঘণ্টায় যতগুলি বিমান প্রধান রানওয়ে দিয়ে ওঠানামা করে, তার চেয়ে বেশি যাতে ওঠানামা করতে পারে, সে জন্য কিছু প্রযুক্তিগত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একটি ট্যাক্সি ওয়েকে সম্প্রসারণ করে রানওয়ের শেষে যোগ করা হবে বলেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে দ্বিতীয় রানওয়ে থেকে তুলনায় বেশি বিমান ওঠানামা করতে পারবে। ঠিক হয়েছে, পার্কিং বে-র সংখ্যা বাড়ানো হবে। এখন কলকাতায় ৫১টি পার্কিং বে আছে। ২০২৮ সালের মধ্যে তা ১২৪টি করতে হবে। ইতিমধ্যেই গত বছরে দু’টি নতুন হয়েছে। আরও ২০টি পার্কিং বে ২০২০ সালের মধ্যে তৈরি হবে।

এখন যেখানে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার রয়েছে, তা সরিয়ে ফেলা হবে সেখান থেকে। তার পাশে রয়েছে পুরনো ডোমেস্টিক টার্মিনাল। আপাতত এই এটিসি ও পুরনো ডোমেস্টিক বিল্ডিং ভেঙে সেখানে আরও একটি নতুন ঝাঁ চকচকে যাত্রী টার্মিনাল তৈরি হবে। সেখানে কমপক্ষে ৩০টি নতুন এরোব্রিজ বসানো হবে। এখন কলকাতায় ১৮টি এরোব্রিজ রয়েছে।

কৈখালি পেরিয়ে যে উড়ালপুলটি এখন বিমানবন্দরের দিকে ঢুকে আসে, তাকেও আরও চওড়া করতে হবে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। সেই উড়ালপুল থেকে একটি বাহু নতুন টার্মিনালকে যুক্ত করবে। আশা করা হচ্ছে, এর মধ্যে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর কাজও শেষ হবে। সে ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের মেট্রো স্টেশন থেকে একটি এরোব্রিজ প্রস্তাবিত টার্মিনালের সঙ্গে যোগ করা হবে।

যে টার্মিনালটি রয়েছে, ২০১৩ সালে সেটি চালু হওয়ার সময়ে বলা হয়েছিল, বছরে ২ কোটি যাত্রী ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে সেই সংখ্যা ১ কোটি ৯৮ লক্ষ ছুঁয়েছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘এই হারে বৃদ্ধি হলে চলতি বছরে যাত্রী সংখ্যা বেড়ে ২ কোটি ৫০ লক্ষ হবে। আগামী ২-৩ বছরে সাড়ে ৩ কোটি ছুঁয়ে যাবে।’’

ওই কর্তার আরও বক্তব্য, ২০২৮ সালকে লক্ষ্য রেখেই পাঁচ কোটি যাত্রী ধারণের নতুন টার্মিনাল বানানো হবে। তিনি জানান, বিমান সংখ্যাও বাড়ছে। ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে প্রায় দেড় লক্ষ উড়ান যাতায়াত করেছে শহর থেকে। ওই কর্তা জানিয়েছেন, বহু সংস্থা কলকাতায় রাতে বিমান পার্ক করে রেখে ভোরে উড়ান চালাতে চাইছে। কিন্তু পার্কিং বে-র অভাবে তা দেওয়া যাচ্ছে না।

তবে, ২০২৩ সালের আগে প্রস্তাবিত নতুন এই টার্মিনাল সম্পূর্ণ করা যাবে না। তার আগে আপাতত ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে ট্যাক্সি ওয়ে সম্প্রসারণ, ২০টি পার্কিং বে তৈরি এবং বিমানবন্দরের নিকাশি ব্যবস্থার কিছু কাজ করা হবে বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন