KMC Result 2021

KMC Election Result 2021: পুরভোটে জয়জয়কার তৃণমূলের দ্বিতীয় প্রজন্মের, নতুন যাত্রায় শাসক রাজনীতি

এ বার দলের নেতাদের পরবর্তী প্রজন্মের অনেককেই প্রার্থী করেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। কলকাতা পুরভোটের ফল বলছে, সেই সিদ্ধান্তে ভুল ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩:০৪
Share:

পুরভোটে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খানের ছেলে ফৈয়াজ, রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার মেয়ে পূজা, নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভ, প্রয়াত বামনেতা ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরাকে প্রথম বার লড়তে দেখা গিয়েছে। ফাইল চিত্র।

ছোট লালবাড়ি দখলের লড়াইয়ে এ বার দলের নেতাদের পরবর্তী প্রজন্মের অনেককেই প্রার্থী করেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। কলকাতা পুরভোটের ফল বলছে, সেই সিদ্ধান্তে ভুল ছিল না।

Advertisement

পুরভোটে রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার মেয়ে পূজা, নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খানের ছেলে ফৈয়াজ, প্রয়াত বামনেতা ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরাকে প্রথম বার লড়তে দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের তালিকায় ছিলেন এন্টালির বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহার ছেলে সন্দীপন এবং প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা প্রাক্তন বিধায়ক ইকবাল আহমেদের কন্যা সানার মতো বিদায়ী কাউন্সিলররাও।

প্রয়াত অজিত পাঁজার পুত্রবধূ হিসেবে রাজনীতিতে আগমন হয়েছিল শশীর। গত ১০ বছরের তৃণমূল জমানায় রাজ্য রাজনীতিতে নিজস্ব পরিচিতি অর্জন করেছেন শ্যামপুকুরের বিধায়ক। এ বার শ্যামপুকুরেরই ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর আইনজীবী কন্যা পূজাকে প্রার্থী করেছিল দল। বাদ-পড়া বিদায়ী কাউন্সিলর পার্থ মিত্র বিদ্রোহ করেছিলেন। কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম ঘোষণাও হয়েছিল। কিন্তু তাঁর পরেই বিদ্রোহে ইতি টেনে জোড়াফুল শিবিরে ফেরেন পার্থ।

Advertisement

দক্ষিণ কলকাতার ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে রাজ্যের আর এক মন্ত্রী চন্দ্রিমার ছেলে সৌরভকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। ২০১৫-র পুরভোটে সেখানে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী, সদ্যপ্রয়াত তিস্তা দাস। রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই ওয়ার্ডটি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে অবশ্য কিছু দিন আগে থেকেই ‘সক্রিয়’ হয়েছিল শাসক শিবির। সেই লক্ষ্যে সৌরভকে দলের ব্লক সভাপতির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল। তিস্তার মৃত্যুর পর টিকিট নিয়ে ওই ওয়ার্ডে বিজেপি-তে ‘গৃহযুদ্ধ’ লড়াইয়ের ময়দানে সৌরভকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

কসবার বিধায়ক তথা মন্ত্রী জাভেদ খানের ছেলে ফৈয়াজ আহমেদ খান গত বারের মতোই এ বারেও ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন। ওই ওয়ার্ডেই ১৫ বছর কাউন্সিলর ছিলেন তাঁর বাবা, পাঁচ বছর ছিলেন তাঁর মা-ও। অস্ট্রেলিয়া থেকে ম্যানেজমেন্টের ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফৈয়াজ বস্তিবাসীর সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোটের ময়দানে নেমেছিলেন।

প্রয়াত আরএসপি নেতা তথা বাম জমানার মন্ত্রী ক্ষিতির মেয়ে বসুন্ধরা পুরনির্বাচনে ঘাসফুলের প্রার্থী হয়েছিলেন। যাদবপুর এলাকার ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি তাঁর প্রচার নজরও কেড়েছিল এ বার। বস্তুত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর ক্ষিতির প্রয়াণের পরই বসুন্ধরার তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা ছড়িয়েছিল। অনেকে বলেন, তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগও দিয়েছিলেন। যদিও তার কোনও সরকারি সমর্থন মেলেনি। প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তার সমর্থনে তৃণমূলের মুখপত্রে বসুন্ধরা কলম ধরেছিলেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর তৃণমূল রাজনীতিতে প্রবেশ পুরভোটে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই।

সানাকে গতবারের মতোই এ বারও ৬২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তাঁর বাবা ইকবালও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুলতান আহমেদের ভাইঝি সানার ওয়ার্ডেই রয়েছে মিশনারিজ অফ চ্যারিটি, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রাজ্য সিপিএমের সদর দফতর, হাজি মহম্মদ মহসিন স্কোয়ারের প্রদেশ কংগ্রেসের একদা সদর দফতর, রিপন স্ট্রিট, রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড এবং এজেসি বসু রোডের মতো মিশ্র জনবসতি এলাকা। লরেটোর প্রাক্তনী সানা সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকেই বিপুল সমর্থন পেয়েছেন বলে ভোটের ফলে প্রমাণিত।

স্বর্ণকমলের ছেলে সন্দীপন বিদায়ী পুরবোর্ডে ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। এ বার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হন তিনি। আইআইএম জোকার প্রাক্তনী তথা বহুজাতিক সংস্থার প্রাক্তন আধিকারিক সন্দীপনের কাছে এই ওয়ার্ডটি নতুন ছিল। তাঁর বাবা স্বর্ণকমল এবং মা সুনীতা দু’দশকেরও বেশি সময় ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর থাকায় গত বার তাঁর লড়াই অপেক্ষাকৃত সহজ ছিল।

ভোটের ফলাফল বলছে, তৃণমূলের পরবর্তী প্রজন্মের যাত্রা পুরভোট থেকেই শুরু হয়ে গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন