গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পণ্ডিতিয়া রোডে মহিলাদের লক্ষ্য করে রাসায়নিক ছিটিয়ে চলে গিয়েছিল যে ট্যাক্সির চালক, সে ডাকাতির একটি মামলায় সাত বছর জেল খেটে মাত্র মাস দুই আগে আলিপুর সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেয়েছে। রিকি মণ্ডল নামে ওই ট্যাক্সিচালকের খোঁজে বেশ কয়েক জায়গায় তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শেক্সপিয়র সরণি, লেক এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় অভিযু্ক্ত ছিল সে।
ওই ট্যাক্সির মালিক জয়ন্ত মণ্ডল অবশ্য পুলিশকে জানিয়েছেন, চালকের আগের অপরাধমূলক কাজকর্ম সম্পর্কে তিনি জানতেন না। আরও জানিয়েছেন, গত দু’মাস ধরে রিকি তার ট্যাক্সি নিয়ে কোনও গড়বড় করেনি। প্রতিদিন সকালে সময় মতোই ট্যাক্সি তাঁর বাড়ি থেকে নিয়ে যেত ও রাতে জমা দিয়ে যেত। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই ট্যাক্সির ভিতর থেকে যে চার যুবক পণ্ডিতিয়া রোডে অ্যাসিড ছুড়েছিল, তাদের সঙ্গে রিকির পূর্ব পরিচিতি ছিল। ট্যাক্সিচালক আরোহীদের অপরিচিত হলে সে ট্যাক্সি ছেড়ে পালাত না বলেই মত পুলিশের। দুষ্কৃতীরা এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতেই এই কাজ করেছে নাকি এর পিছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশ জানিয়েছে, চালককে ধরতে পারলে কেন তরল রাসায়নিক ছোড়া হল, তা অনেকটা পরিষ্কার হবে।
রবিবার রাতের ঘটনায় ওই তরল রাসায়নিক ঠিক কী ছিল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। স্থানীয়েরা ওই রাসায়নিককে অ্যাসিড বলে দাবি করলেও পুলিশ এখনই তা বলছে না। আক্রান্ত এক তরুণী জানান, গায়ে ওই রাসায়নিক পড়া মাত্রই জ্বালা করতে শুরু করেছিল। তবে এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষতস্থান দেখে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকদের মত, ওই রাসায়নিক অ্যাসিড নয়। তবে ওই তরল শুধু মহিলাদের গায়েই নয়, কয়েকজন যুবকের জামাতেও লেগেছিল। জামার সেই অংশের রং পরিবর্তন হয়নি বা পুড়ে যায়নি বলেই পুলিশের দাবি। আক্রান্তদের জামা ফরেন্সিকে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশকর্তা।
রবিবারের ঘটনায় এখনও কেউ ধরা না পড়ায় এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটছে না। স্থানীয় বাসিন্দা শম্ভু মণ্ডল বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা ধরা না পড়ায় সন্ধ্যার পরে অনেকে রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছেন।’’ যদিও পুলিশের দাবি, এলাকায় টহলদারি ভ্যান বাড়ানো হয়েছে। এলাকায় কয়েকটি বহুতল আবাসন রয়েছে। বেশির ভাগের সামনের দরজায় রয়েছে সিসিটিভি। ওই সব সিসিটিভি-র ফুটেজও পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।