স্নাতক স্তরে ২০১৮-’১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও কলা বিভাগে ‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ (সিবিসিএস) বা পছন্দের বিষয় বেছে নেওয়ার পদ্ধতি চালু হচ্ছে বলে জানালেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, এ দিনই বাণিজ্য শাখার প্রথম সিমেস্টারের ফল প্রকাশ হয়েছে। তা দেখে বোঝা যাচ্ছে সিবিসিএস পদ্ধতির পঠনপাঠন সফল হয়েছে। তাই চলতি বছরের জুলাই থেকে অন্য বিভাগেও এই পদ্ধতি চালু হবে।
তবে সিবিসিএস পদ্ধতিতে পঠনপাঠন শুরু হলে পরীক্ষা হবে সিমেস্টার পদ্ধতিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, বাণিজ্য শাখায় যেখানে ২৫ হাজার পরীক্ষার্থী ছিলেন, সেখানে কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগে গড়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হতে পারে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি। ফলে সিমেস্টার পদ্ধতি চালু হলে সে সব বিভাগে বাড়তি ঝক্কি হবে। তবু পাঠ্যক্রমের আমূল পরিবর্তন করতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। এপ্রিলেই সেটা জানানো হবে বলে জানান ওই কর্তা।
তবে এই পদ্ধতি চালুর উপরে জোর দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও রাজ্য সরকার। গত ৬ এপ্রিল ইউজিসি সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের চিঠি পাঠিয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সিবিসিএস চালু করতেই হবে। ১৩ এপ্রিলের মধ্যে সকলকে একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে লিখে পাঠাতে হবে, কোন বিভাগে কী ভাবে এই পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। একই ভাবে পাঠ্যক্রমের পরিবর্তনও করতে বলা হয়। এ ছাড়াও গত মার্চে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে উপাচার্যদের বৈঠকেও এই পদ্ধতির উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল।
তবে পরিকাঠামোর উন্নতি না করেই এই পদ্ধতি চালু হলে কলেজের পঠনপাঠনের ক্ষতি হবে বলেই মনে করছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। এই পদ্ধতি সম্পর্কে বিচার বিশ্লেষণের জন্য ২০১৫-তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির সদস্য শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুটা-র সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ জানান, ওই কমিটি পরিস্থিতির বিচার করে রাজ্য সরকারকে জানায় যে, নীতিগত ভাবে কমিটির কেউই ওই পদ্ধতির বিরোধিতা করছেন না। কিন্তু পরিকাঠামোগত অসুবিধার কারণে ওই সময়ে সিবিসিএস চালু না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁরা।
শ্রুতিনাথবাবু এ দিন বলেন, ‘‘পরিকাঠামোগত পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত থেকে শুরু করে পরিকাঠামোর কোনও কিছুরই উন্নতি হয়নি। ফলে জোর করে এই ব্যবস্থা চাপিয়ে দিলে ভাল হবে না।’’ আবুটা-র যুগ্ম সম্পাদক গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘এটা নামেই সিবিসিএস। পড়ুয়াদের বিষয় বেছে নেওয়ার কোনও সুযোগ আসলে নেই। এতে পঠনপাঠনের আরও ক্ষতি হবে।’’