Calcutta News

বিরাটির রাস্তায় চেয়ারম্যান ও ডেপুটির লড়াই, হেনস্থা সৌগতকে

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সকালে। উত্তর দমদম পুরসভার উপ-পুরপ্রধান নাজিমুদ্দিনের কয়েক জন অনুগামী তাঁর কাছে যান অভিযোগ জানাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৮ ১৭:০৯
Share:

পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরে উদ্যত জনতা। —নিজস্ব চিত্র।

পুরসভার মধ্যেই ঠিকাদারদের হাতে মার খেলেন উপ-পুরপ্রধান। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরপ্রধান বনাম উপ-পুরপ্রধান লড়াই পুরভবন ছেড়ে রাস্তায় পৌঁছল।

Advertisement

শাসক দলের গোষ্ঠীদন্দ্বকে ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বিরাটি। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, পাল্টা পুলিশের লাঠিচার্জ— দিনভর টানটান নাটকের সাক্ষী উত্তর দমদম পুরসভা। সেই লড়াই থামাতে গিয়ে রীতিমতো হেনস্থা হলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সকালে। উত্তর দমদম পুরসভার উপ-পুরপ্রধান নাজিমুদ্দিনের কয়েক জন অনুগামী তাঁর কাছে যান অভিযোগ জানাতে। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই বেছে বেছে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় কোনও রকম উন্নয়নের কোনও কাজ হচ্ছে না। টেন্ডার পাশ হয়ে যাওয়ার পরেও ঠিকাদাররা কাজ করছেন না। তাঁরা উপ-পুরপ্রধানকে জানান যে, বেছে বেছে নাজিমুদ্দিনের অনুগামী হিসেবে ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরদের এলাকাতেই এই সমস্যা হচ্ছে। অভিযোগ শুনেই সেই ঠিকাদারদের ডেকে পাঠান উপ-পুরপ্রধান।

Advertisement

দেখুন ভিডিয়ো

অভিযোগকারীদের দাবি, এই ঠিকাদারদের একটা বড় অংশই পুরপ্রধান কল্যাণ করের ঘনিষ্ঠ। উপ-পুরপ্রধানের সঙ্গে ঠিকাদারদের রীতিমতো উত্তপ্ত বাদানুবাদ শুরু হয়। আর সেই বাদানুবাদের মধ্যেই এক দল ঠিকাদার ঘরের মধ্যেই ঝাঁপিয়ে পড়ে নাজিমুদ্দিনের উপর। শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। অভিযোগ, এই সময় যখন উপ-পুরপ্রধানের অনুগামীরা ঠিকাদারদের হাত থেকে তাঁকে বাঁচাতে ব্যস্ত, তখন নাজিমুদ্দিনের উদ্দেশে ‘কটু’ মন্তব্য করেন পুরপ্রধান। উপ-পুরপ্রধানের অনুগামীদের অভিযোগ, পুরপ্রধানের মদতেই ঠিকাদাররা হেনস্থা করেছেন নাজিমুদ্দিনকে। পুলিশ এলে উত্তেজিত তৃণমূলকর্মীরা একটি পুলিশ ভ্যানেও ভাঙচুর চালায়।

আরও পড়ুন
‘মেয়ে পুলিশ’ মারবে! ছক কষেও দু’বার মত বদলেছিল খুনি

বিরাটিতে তখন চলছে অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

এর পরেই শুরু হয়ে যায় ধুন্ধুমার। নাজিমুদ্দিনের অনুগামীরা জড়ো হন বিরাটির ব্যস্ত বণিক মোড়ে। শুরু হয়ে যায় পথ অবরোধ। সেখান থেকেই একটি অংশ পৌঁছন থানাতে অভিযযোগ দায়ের করতে। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন নাজিমুদ্দিনের অনুগামীরা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই গোটা বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বের কানে যায়। খোঁজ নিতে শুরু করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ।

আরও পড়ুন
পটল ভাঙতেই বেরোল ৫৫ হাজার ইউরো!

দলীয় কোন্দল রাস্তায় নেমে আসায়, পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে দৌড়ন সাংসদ সৌগত রায়। কিন্তু, নাজিমুদ্দিনের সমর্থকদের বিক্ষোভের সামনে পড়ে মেজাজ হারান তিনি। প্রথমে গাড়ি থেকে না-নেমেই তা ঘুরিয়ে নেন তিনি। সেই সময় তাঁর উদ্দেশে ভেসে আসতে থাকে ‘বাছাই করা’ মন্তব্য। রীতিমতো ‘অগ্নিশর্মা’ হয়ে গাড়ি থেকে নামেন সাংসদ। তত ক্ষণে অবশ্য পরিস্থতি সামাল দিয়েছেন নাজিমুদ্দিন নিজে। সাংসদ নিজে থানায় খোঁজ খবর নেন। পুরপ্রধানের সঙ্গেও কথা বলেন।

বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ সৌগত রায় মাইক হাতে বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মীদের শান্ত হতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, “নাজিমুদ্দিনের উপর হামলার আমি তীব্র নিন্দা করছি। পুলিশকে বলেছি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে।” যদিও তিনি নিজের হেনস্থা হওয়ার কথা স্বীকার করেননি। পুরপ্রধান কল্যাণ করও গোটা বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন