অফিস ঘরে বালতি পেতেই কাজ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
টেবিলে রাখা বালতি। তাতে ভাঙা ফলস্ সিলিং থেকে ময়লা জল ক্রমাগত পড়ে চলেছে। তারই মধ্যে একটা টেবিলে কোনও মতে কাজ করছেন এক কর্মী। পাশের টেবিলের চার দিকে পড়ে রয়েছে ভাঙা সিলিংয়ের টুকরো। জল পড়ে অফিস ঘর স্যাঁতসেঁতে। অফিসের এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতে কর্মীদের ভরসা ছাতা। এমনই অবস্থা খোদ হাওড়া রেল পুলিশ সুপারের অফিসের।
অভিযোগ, হাওড়া স্টেশনে রেলের যাত্রী নিবাসের নিকাশি পাইপ ফুটো হয়ে গিয়ে রেল পুলিশ সুপারের গোটা অফিস দিনভর ভেসে যাচ্ছে। হাওড়ার রেলপুলিশ সুপার নীলাদ্রি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চার মাস ধরে এই অবস্থা চলছে। নিকাশি পাইপ নোংরা জমে আটকে গেলেই এ ভাবে জল পড়তে থাকে। রেলকে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি।’’ এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘এই দুর্গন্ধ আর নোংরা জলের মধ্যে আমাদের কাজকর্ম প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দফতর বলে বাধ্য হয়ে কোনও মতে কাজ করে যাচ্ছি।’’
হাওড়া স্টেশন চত্বরের যে পাঁচতলা বাড়িতে রেলপুলিশ সুপারের অফিস সেটি রেলের। এ জন্য রেলপুলিশকে বছরে কয়েক লক্ষ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। ওই অফিসের কর্মীরাই আসানসোল পর্যন্ত রেলপথ ও যাত্রীদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন, কোনও অপরাধমূলক কাজ হলে নজর রাখাও তাঁদেরই কর্তব্য। কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ দফতর হওয়া সত্ত্বেও এই অবস্থা কেন?
রেলপুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রেলপুলিশের সঙ্গে রেলের সম্পর্ক ভাড়াটে বাড়িওয়ালার মতো। ফেলো কড়ি মাখো তেল। তাই এত গুরুত্বপূর্ণ দফতর হওয়া সত্ত্বেও রেলের থেকে তেমন কোনও সুবিধা কোনও দিনই মেলে না।’’
রেল অবশ্য রেলপুলিশের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ককে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের মতো সম্পর্ক বলতে নারাজ। পূর্ব রেলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার রেলপুলিশ সুপারের ওই অফিসের জন্য ভাড়া দেয় এটা ঠিকই। কিন্তু রেল পুলিশ অবশ্যই রেলের সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সকলে এক সঙ্গেই কাজ করি।’’
ওই রেলকর্তা জানান, রেলপুলিশ সুপারের অফিসের ঠিক উপর দিয়েই নিকাশি পাইপ গিয়েছে। ওই পাইপ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে কোথা থেকে জল বেরোচ্ছে।’’