কিছু লোক বাধা দিলেও মহিলাদের অটো চালানো থেমে থাকবে না। এখনও এমনটাই মনে করছেন ‘দক্ষিণ কলকাতা জেলা অটো ড্রাইভার্স অ্যান্ড অপারেটর্স ইউনিয়ন’-এর সাধারণ সম্পাদক গোপাল সুতার।
ফেব্রুয়ারির গোড়ায় মৌসুমি সর্দার, কৃষ্ণা বিজলি, শম্পা কুন্ডুদের মতো ১২ জন মহিলা টালিগঞ্জ-গড়িয়া রুটে অটো চালানোর জন্য লাইসেন্সের আবেদন করেন। কিন্তু প্রায় দু’মাস পেরিয়ে গেলেও তাঁরা অটো নিয়ে পথে নামতে পারেননি। আদৌ পারবেন কি না তা নিয়েই সংশয় রয়েছে।
গোপালবাবু স্বীকার করেন, যে হেতু টালিগঞ্জ-হাজরা রুটে পুরুষ চালকদের একাংশ সহযোগিতা করছেন না, তাই ওই রুট বাদ রেখেই দক্ষিণ কলকাতার অন্য রুটে মহিলাদের অটো চালানোর ব্যবস্থা করা হবে। গোপালবাবু মনে করেন, টালিগঞ্জ-হাজরা রুটে যা হচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু তিনি তো কলকাতা জেলার অটো চালক ইউনিয়নের শীর্ষ পদে রয়েছেন। একটি বিশেষ রুটের অটো ইউনিয়ন তাঁর কথা অমান্য করার সাহসপাচ্ছে কোথা থেকে? গোপালবাবু এই প্রশ্নের জবাব দেননি। তবে তিনি জানান, টালিগঞ্জ-হাজরা রুট ছাড়াও রানিকুঠি-যাদবপুর, বাঘা যতীন-রুবির মতো অনেক রুট রয়েছে। প্রয়োজনে তেমন কোনও রুটে আগ্রহী মহিলাদের
অটো চালানোর ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত মহিলারা যাতে অটো ভাড়া পান, সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। তবে নতুন অটো বা তার পারমিট পাওয়ার কী ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে এখনই দিশা দেখাতে পারেননি গোপালবাবু।
পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানান, লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য আলাদা কোনও শর্ত নেই। তবে লাইসেন্সের আবেদন করা মৌসুমি, কৃষ্ণা, শম্পারা মনে করেন, প্রশাসনের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তাদের সাহায্য না থাকলে লাইসেন্সের ব্যবস্থা হোক বা না হোক, এই উদ্যোগ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন।
তবে কলকাতার ১২৫টি অটো রুটে যে নতুন করে পারমিট দেওয়ার জায়গা নেই, ঠারেঠোরে তা মেনে নিচ্ছেন পরিবহণকর্তারা। রুটের পুনর্বিন্যাস হওয়ার আগে নতুন অটোর
জন্য দরজা খোলাও সম্ভব নয় বলে জানান তাঁরা। আলাদা করে পারমিট দেওয়ার প্রস্তাবও তাঁদের কাছে নেই।
এ বছরেই রাজ্য সরকারের নতুন অটো-নীতি ঘোষণা হওয়ার কথা। তা হলে এ নিয়ে জট কাটতে পারে বলে মনে করছেন আধিকারিকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, কলকাতায় কোন রুটে কত অটো চলতে পারে, তার সংখ্যা আগেই নির্দিষ্ট করা আছে।
আপাতত মৌসুমি সর্দার, শম্পা কুন্ডু, তন্দ্রা সাধুখাঁরা তাই সরকারের সদয় হওয়ার দিকে তাকিয়ে।