কুকুরের কামড়ে হাত থেকে রক্ত ঝরছে। সেই অবস্থায় জয়দেব দাসকে (৬৩) নিয়ে তাঁর ছেলে জয়ন্ত দু’টি সরকারি হাসপাতাল ঘুরে পৌঁছন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। অভিযোগ, কিছু ক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর পরে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, অ্যান্টি-রেবিস ইঞ্জেকশন নেই। হাসপাতালের কর্মীরা বাইরে থেকে ইঞ্জেকশন কেনার পরামর্শ দেন। একই কথা বলা হয় খড়দহ থেকে আসা আর এক রোগীর পরিজনদেরও। জরুরি ইঞ্জেকশন কেন সরকারি হাসপাতালে মিলবে না, এই প্রশ্নে এর পরে বিক্ষোভ দেখান রোগীর পরিজনেরা।
রবিবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানোর প্রতিষেধক অ্যান্টি-রেবিস ইঞ্জেকশন নিতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন কয়েক জন রোগী। কিন্তু ওষুধ না মেলায় বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিক্ষোভ শুরু হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ দিন রোগী ও পরিজনেরা ওষুধের দাবিতে সরব হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
ভুক্তভোগীদের একাংশ জানাচ্ছেন, কুকুর কামড়ানোর পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইঞ্জেকশন দেওয়া প্রয়োজন। না হলে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারে। কিন্তু সরকারি হাসপাতাল চিকিৎসায় তৎপরতা দেখাচ্ছে না। এমনকি, কোন হাসপাতালে ওষুধ মিলবে, সেই তথ্যও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সরকারি হাসপাতালে কেন প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুত থাকবে না, এ দিনের বিক্ষোভে সেই প্রশ্নও তোলেন রোগীর পরিজনেরা।
এ দিন এক বেসরকারি ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টি-রেবিস ইঞ্জেকশন জোগাড় করেন জয়ন্তবাবু। তিনি বলেন, ‘‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইঞ্জেকশন দিতে না পারলে বাবাকে বাঁচাতে পারতাম কি না, জানি না। সকাল থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে বিকেলে ওষুধ মিলল। তাও বেসরকারি ওষুধের দোকানে।’’
এই ইঞ্জেকশন ফুরিয়ে যাওয়ার আগে কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি? রাজ্যের অন্যতম সংক্রামক রোগের হাসপাতালের ওষুধের ভাণ্ডার সম্পর্কে কি স্বাস্থ্য দফতর ওয়াকিবহাল নয়? এ প্রশ্নের অবশ্য উত্তর মেলেনি। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তাঁরা ফোন বা মেসেজের উত্তর দেননি। এক স্বাস্থ্য কর্তা জানান, রাজ্যে বেশির ভাগ সরকারি হাসপাতালেই অ্যান্টি-রেবিস ইঞ্জেকশনের অভাব রয়েছে।