মাছ বিক্রির টাকায় প্রতীক্ষালয়

প্রতীক্ষালয় তৈরির পিছনে মাছ-কাহিনি অবশ্য নতুন বলেই দাবি দমদম পুরসভার। যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের কাছের একটি পুকুর দেড় বছর আগেও কচুরিপানায় ভর্তি ছিল।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৬
Share:

অভিনব: এমনই যাত্রী ছাউনি। —নিজস্ব চিত্র

ঘোড়ায় টানা ট্রামের আকারে নতুন যাত্রী প্রতীক্ষালয় পেল দমদম পুর এলাকার রামকৃষ্ণগড়। এ আর নতুন কী! আসলে নতুনত্ব রয়েছে এটি তৈরির টাকার জোগানে। কারণ কোনও সাংসদ বা বিধায়ক তহবিলের টাকায় নয়, স্থানীয় পুকুরে মাছ চাষ করে সেই মাছ বিক্রির টাকাতেই তৈরি হয়েছে এই প্রতীক্ষালয়।

Advertisement

বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে হুহু করে ছুটছে গাড়ি। ঢালাই কারখানা, মানিকপুর, মালঞ্চ, রাজবাড়ি, প্রমোদনগর— সব স্টপেজই পার হয়ে যাচ্ছে গতির নিয়ম মেনে। কিন্তু রামকৃষ্ণগড় এলেই বাস থেকে উঁকিঝুঁকি মারছে অনেক কৌতূহলী মুখ। কারণ ইতিমধ্যেই নতুন চেহারার এই প্রতীক্ষালয়ের কথা ছড়িয়ে গিয়েছে। এক বাস কন্ডাক্টর হেসে বললেন, ‘‘বাসে উঠলে এখন অনেকেই বলছেন, ঘোড়া বাসস্ট্যান্ডে যাব। নতুন নাম শুনতে বেশ লাগছে।’’

প্রতীক্ষালয় তৈরির পিছনে মাছ-কাহিনি অবশ্য নতুন বলেই দাবি দমদম পুরসভার। যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের কাছের একটি পুকুর দেড় বছর আগেও কচুরিপানায় ভর্তি ছিল। তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের উদ্যোগে পুকুরটি সংস্কার করে মাছ চাষ শুরু করেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। এখন সেখানে রুই, কাতলা, রূপচাঁদা, মৌরলার চাষ হয়। কারও দ্বারস্থ হয়ে নয়, সেই মাছ বিক্রি করেই যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের দাবি মিটিয়েছে রামকৃষ্ণগড়।

Advertisement

দমদম পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পর্ণা দাস জানান, এলাকা তো বটেই, এক্সপ্রেসওয়েরও নতুন আকর্ষণ এই প্রতীক্ষালয়। অনেকেই ঘোড়ায় টানা ট্রামের প্রশংসা করেছেন। এই কাজে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন তিনি। কমিটি গঠনের অন্যতম শর্ত ছিল, পুকুরে চাষ করা মাছ বিক্রির টাকায় এলাকার উন্নয়ন হবে। সেই মতো লভ্যাংশের টাকায় কাজ শুরু করা হয়।

এ বিষয়ে কাউন্সিলরের মত, ‘‘সাধারণত সব প্রতীক্ষালয়ই এক রকম দেখতে। নতুন যাত্রীদের যাতে প্রতীক্ষালয় চিনে নামতে সুবিধা হয়, সে জন্যই অন্য রকম ভাবনা।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক বছরে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে একাধিক রুটের বাস পরিষেবা শুরু হয়েছে। সাঁতরাগাছি, ইকো পার্ক, সল্টলেক যাওয়ার জন্য আর যশোর রোডে যেতে হয় না বাসিন্দাদের। তাই রামকৃষ্ণগড়ে যাত্রী প্রতীক্ষালয় নির্মাণ জরুরি ছিল বলে দাবি এলাকাবাসীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন