অঘটন: টুকরো হয়ে গিয়েছে হেলমেট। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
বেপরোয়া বাইক চালানোয় কাজে লাগল না মাথার রক্ষাকবচও! ফলে আরও এক বাইকচালকের মৃত্যু হল। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দমদমের পি কে গুহ রোডে। মৃত যুবকের নাম প্রসেনজিৎ ঘোষ (২৯)। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের মাথায় হেলমেট ছিল। কিন্তু ইয়ার ফোন গুঁজে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। প্রথমে বাতিস্তম্ভে, পরে একটি বাড়ির পাঁচিলে ধাক্কা লেগে হেলমেট টুকরো টুকরো হয়ে যায়। আহত যুবককে দমদম পুরসভার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দক্ষিণ দমদমের লক্ষ্মীনারায়ণ রোডের বাসিন্দা প্রসেনজিতের বাবা-মা দু’জনেই মারা গিয়েছেন। দু’বছর আগে মায়ের মৃত্যু হয়। প্রসেনজিৎ এবং তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন কাকা তরুণ ঘোষ এবং কাকিমা ছন্দা ঘোষ। শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত পাড়াতেই ছিলেন প্রসেনজিৎ। তার পরে তিনি কোথায় গিয়েছিলেন তা পরিজনেরা বলতে পারেননি। পুলিশ সূত্রের খবর, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বিমানবন্দরের এক নম্বর গেট থেকে পি কে গুহ রোড ধরে বাড়ি ফেরার সময়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন প্রসেনজিৎ। ঘটনাস্থলের কাছেই একটি রেস্তরাঁ রয়েছে। তার উল্টোদিকের বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মেরে দোকানের শাটারে ঘষে একটি বাড়ির দেওয়ালে ধাক্কা খায় মোটরবাইকটি। এর পরে বাইক-সহ নর্দমায় পড়ে যান প্রসেনজিৎ।
স্থানীয় বাসিন্দা সমীর ঘোষদস্তিদার জানান, বাতিস্তম্ভ এবং পার্শ্ববর্তী দেওয়ালের মধ্যে খুব বেশি হলে হাত দুয়েকের দূরত্ব। বেপরোয়া গতির বাইকটি বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মেরে তারই মধ্যে থাকা নর্দমায় গিয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল সংলগ্ন রেস্তরাঁর মালিক সুশান্ত সাহা বলেন, ‘‘ওখানে ভ্যান নিয়ে এক আনাজ বিক্রেতা দাঁড়িয়েছিলেন। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন তিনি।’’ আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা ভাস্কর মৈত্র জানান, নর্দমায় পড়ে গিয়ে বাইকের সামনের চাকা স্ল্যাবে উঠে গিয়েছিল। তখনও যুবককে দেখতে পাননি ঘটনাস্থলে জড়ো হওয়া বাসিন্দারা। নর্দমার নোংরা জলে হাতের আঙুল দেখতে পান এক যুবক। ভাস্করের কথায়, ‘‘হাত টেনে যুবককে বার করার পরে দেখলাম, তাঁর মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছে। কপালের কোণের দিক ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। দু’টি পায়ের অবস্থা আরও ভয়াবহ। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, পায়ের কিছু নেই। যুবকের কানে হেডফোন ছিল।’’ উদ্ধারের পরে অটোয় প্রসেনজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, যুবকের দুই পা এবং বাঁ হাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হৃদ্স্পন্দন বন্ধ হয়ে যায় প্রসেনজিতের।