শহরে আমের বাজারে দখিনা হাওয়া

মানিকতলা বাজারে আমের পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ঝুড়ি উপচে পড়ছে দক্ষিণের গোলাপখাস আর হিমসাগর আমে।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০২:০৫
Share:

‘ও দিদি, নিয়ে যান দক্ষিণের গোলাপখাস। যেমন মিষ্টি, তেমনই রসে ভরপুর।’

Advertisement

মানিকতলা বাজারে আমের পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ঝুড়ি উপচে পড়ছে দক্ষিণের গোলাপখাস আর হিমসাগর আমে। কিন্তু সেই আমে মন ভরছে না ক্রেতাদের! দক্ষিণ ভারতের নয়, তাঁদের চাই মালদহ, মুর্শিদাবাদ বা উত্তর ২৪ পরগনার আম। কবে আসবে সেগুলি? আর কত দিনের অপেক্ষা?

আম বিক্রেতারা অবশ্য আশা দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলার আম কলকাতার বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে পুরোপুরি বাজার ছেয়ে যেতে আরও কিছু দিন সময় লাগতে পারে। ‘ক্যালকাটা ফ্রুট মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহিদ আহমেদ খান বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত বাজারে দক্ষিণের আম, অর্থাৎ মাদ্রাজি আমেরই রমরমা। তবে স্থানীয় আমও বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এ বছর আমের ফলন ভালই হয়েছে। তাই কলকাতার বাজারে জোগান ভালই থাকবে। আশা করছি, দামও থাকবে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেই।’’

Advertisement

বড়বাজারে মেছুয়ার ফলপট্টিতে এখনও ভিন্ রাজ্যের আমই রাজত্ব করছে। সেখানকার ফল বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন দক্ষিণ ভারত থেকে দশ-পনেরো গাড়ি আম আসছে। শহরের বিভিন্ন বাজারে তা সরবরাহ করা হচ্ছে। নাসিরউদ্দিন নামে মেছুয়ার এক ফল বিক্রেতা বললেন, ‘‘এত দিনে দক্ষিণের আমের জোগান কমতে শুরু করে। কিন্তু এ বার দক্ষিণের আমও এসেছে একটু দেরিতে। তাই মে মাসের মাঝামাঝিও বাজারে রয়ে গিয়েছে ওই আম।’’ শুধু ফলের বাজারগুলিতেই নয়, বিভিন্ন শপিং মলের ফলের কাউন্টারেও দেখা যাচ্ছে দক্ষিণের আমের সংখ্যাই বেশি। বাগুইআটি এলাকার এক শপিং মলের কর্মী অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘দক্ষিণ ভারতের আমে রস প্রচুর হয়। তাই রস খেতে হলে এই আমই উৎকৃষ্ট। সেই সঙ্গে দক্ষিণের আম তাজা থাকে বেশি দিন। এখনও সে ভাবে বাংলার আম না আসায় দক্ষিণের আমই বিক্রি হচ্ছে।’’

মেছুয়ার ব্যবসায়ীরা জানান, এ বার মালদহ, উত্তর ২৪ পরগনা ও মুর্শিদাবাদে আমের ফলন বিশেষ করে ভাল হয়েছে। জানা গিয়েছে, গত বার মালদহে সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আম হয়েছিল। এ বারও ফলন সে রকমই হয়েছে। এ বছর বারবার ঝড়বৃষ্টি হলেও আমের ফলনের তেমন ক্ষতি হয়নি। নিউ মার্কেটের এক ফল ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘যে বছর আমের ফলন খারাপ হয়, সে বছরকে আমরা বলি ‘অফ ইয়ার’। অফ ইয়ারের পরের বছরই সাধারণত ভাল ফলন হয়। তাকে আমরা বলি ‘অন ইয়ার’। বিগত কয়েক বছর ধরে আমের ফলনে ‘অন ইয়ার’ই চলছে।’’

আমের ‘অন ইয়ার’ হলেও বাংলার আম বাজারে আসতে যে একটু দেরি হয়ে যাচ্ছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ফল ব্যবসায়ীরা। কেন দেরি? ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, অন্যান্য বার আমের মুকুল জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে চলে আসে। এ বার মুকুল আসতেই ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি বা শেষের দিক হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন