দোতলা থেকে ‘ঝাঁপ’ দিয়ে জখম ছাত্রী

বেহালার সত্যেন রায় রোডের বাসিন্দা, বছর বাইশের ওই তরুণী শনিবার দুপুরে বা়ড়ির দোতলা থেকে পড়ে গুরুতর জখম হলেন। বর্তমানে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালের আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। পড়াশোনার পাশাপাশি নেশা মডেলিংও। বেহালার সত্যেন রায় রোডের বাসিন্দা, বছর বাইশের ওই তরুণী শনিবার দুপুরে বা়ড়ির দোতলা থেকে পড়ে গুরুতর জখম হলেন। বর্তমানে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালের আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই তরুণী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার দুপুর ২টো নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। পরিবারের লোকেরাই তরুণীকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতাল ও পরে এসএসকেএমে নিয়ে যান। তদন্তকারীরা জেনেছেন, ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রীটি মডেলিংয়ে নাম কু়ড়িয়েছিলেন। পরিবার জানিয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি চিকিৎসা করিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থও হয়ে উঠছিলেন। পুলিশের সন্দেহ, স্নায়ুর সমস্যার কারণে অবসাদে ভুগছিলেন ওই তরুণী। সে কারণেই তিনি ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

তরুণ প্রজন্মের অভিনেত্রীদের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা দেখা গিয়েছে আগেও। গত ৯ মার্চ রিজেন্ট পার্কের একটি ফ্ল্যাট থেকে মৌমিতা সাহা (২৩) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। টলিউডে মডেলিং ও অভিনয়ের সূত্রে ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন ব্যান্ডেলের বাসিন্দা মৌমিতা। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া একটি চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার আর অভিনেত্রী হওয়া হল না।’ গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ইএম বাইপাসের একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় অভিনেত্রী বিতস্তা সাহার ঝুলন্ত দেহ। তাঁর ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা গিয়েছিল, কাজ না পেয়ে অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। আবার ২০১৫ সালের ৯ এপ্রিল পর্ণশ্রীর বা়ড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল দিশা গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক অভিনেত্রীর দেহ। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, প্রতিটি ঘটনার পিছনেই ছিল মানসিক অবসাদ।

Advertisement

কিন্তু তরুণ প্রজন্ম বারবার কেন এমন চরম পথ বেছে নিচ্ছেন?

মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যালের কথায়, ‘‘উঠতি অভিনেত্রী বা মডেল প্রত্যেকেই উচ্চাকাঙ্ক্ষী। সেই আকাঙ্ক্ষায় সামান্যতম আঘাতও তাঁদের কাছে অসহনীয় হয়ে উঠছে। নাম বা যশ না হলে তাঁরা ভাবছেন জীবন বৃথা। সেই অবসাদ থেকে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার রাস্তা খুঁজছেন।’’ মনোরোগ চিকিৎসক জয়র়ঞ্জন রাম বলছেন, ‘‘বাড়তি আশা নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিপদ ডেকে আনছে। কোনও কাজে ছেদ পড়লেই তাঁরা ভাবতে শুরু করছেন, আর বোধহয় বড় হওয়া হল না। সেটাই ডেকে আনছে মানসিক রোগ। তা থেকেই তাঁরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন