প্রতিবাদ: পোস্টারে বিক্ষোভ। বুধবার টালিগঞ্জে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
মেট্রো রেলে নীতি-পুলিশির ঘটনায় বুধবারেও প্রতিবাদ অব্যাহত ছিল। এ দিন টালিগঞ্জ, দমদম মেট্রো স্টেশনে বিক্ষোভ তো হয়েছেই। প্রতিবাদ চলে পাতাল রেলে ট্রেনের কামরাতেও।
এ ক্ষেত্রে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ মধ্যপন্থা নিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। বিকেলে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ জানান, মেট্রো সব ধরনের নীতি–পুলিশির বিরুদ্ধে। পরে লিখিত বিবৃতি দিয়ে তাঁরা আবেদন জানান, কলকাতার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে কালি লাগে, এমন আচরণ কেউ যেন না-করেন। তেমন পরিস্থিতিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। মেট্রো-কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতিবাদীদের স্মারকলিপি এবং ছবি-সহ যুগল-নিগ্রহের বিষয়টি সিঁথি থানাকে জানানো হয়েছে।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ এক দল তরুণ-তরুণী ‘হোক আলিঙ্গন’ লেখা পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের সামনে জড়ো হন। তাঁদের দাবি, আলিঙ্গন অশ্লীল নয়। আলিঙ্গন ভালবাসার প্রকাশ। এই নিয়ে অসূয়া আসলে সঙ্কীর্ণতারই প্রমাণ। পোস্টার, গান, পারস্পরিক অলিঙ্গনের মাধ্যমে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এক বিক্ষোভকারী বলেন, “কলকাতাকে ভালবেসে আমরা প্রতিবাদে সামিল হয়েছি। নীতি-পুলিশি বন্ধ হোক।”
পরে ওই তরুণ-তরুণীরা মেট্রোয় উঠে দমদমে যান। রেলরক্ষীদের নজরদারির মধ্যে ‘হোক আলিঙ্গন’ লেখা পোস্টার নিয়ে ট্রেনের কামরায় কামরায় ঘোরেন। যাত্রীদের অনেকে তাঁদের সমর্থন জানান। মেট্রোর দাবি, ওই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল। দমদমে বিক্ষোভ দেখায় এসএফআই-ও।
মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার অজয় বিজয়বর্গীয় বলেন, “যাত্রীদের কাছে আবেদন, মেট্রোর মর্যাদা রক্ষা করতে সকলেই সচেষ্ট হোন।” পরে মেট্রোর লিখিত বিবৃতিতে যাত্রীদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘সহযাত্রীদের অসুবিধার সৃষ্টি করবেন না। কলকাতা মেট্রোর গর্ব এবং মর্যাদা বজায় রাখুন। সব যাত্রীর কাছে আবেদন, এমন আচরণ করুন, যাতে কলকাতার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কালিমালিপ্ত না-হয়। এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি করবেন না, যাতে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হন। আমরা যাত্রীদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, একসঙ্গে কলকাতা মেট্রোর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারব।’
মেট্রোকর্তারা জানান, সোমবার রাতে ট্রেনে দুই তরুণ-তরুণীর অন্তরঙ্গ অবস্থায় ভ্রমণ নিয়ে গোলমাল বাধে। দমদম মেট্রো স্টেশনে বেলগাছিয়ার দিকে যুগলকে মারধরের ঘটনা ঘটে। তবে ওই অংশে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ছিল না। তাই ঠিক কতটা মারধর হয়েছে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। বিজয়বর্গীয় জানান, সিসি ক্যামেরা বাড়ানো হবে। ধাপে ধাপে ক্যামেরা বসবে মেট্রোর কামরাতেও।
এ দিনই মেট্রোর ফেসবুক পেজে একটি কমেন্টকে ঘিরে বিতর্ক ছড়ায়। যুগলকে মারধর যাত্রীদের স্বাভাবিক ক্ষোভের প্রকাশ বলে তাতে দাবি করা হয়। পরে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, ওই কমেন্টটি ভুয়ো।