এত তোরণ কেন? জানে না প্রশাসনই

মঙ্গলবার রাতে বরাত জোরে বেঁচে গেলেন ওই ক্যাবচালক। প্রত্যক্ষদর্শীরা বুধবার জানান, একটু হলেই দুর্ঘটনায় পড়ত ক্যাবটি। যার প্রেক্ষিতে স্থানীয়দের প্রশ্ন, এত তোরণ কেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪৬
Share:

শিয়রে: এমনই বিপজ্জনক ভাবে হেলে রয়েছে তোরণ। বুধবার, দমদম রোডে। নিজস্ব চিত্র

বাঙুর থেকে নাগেরবাজারের দিকে যাচ্ছিল অ্যাপ নির্ভর ক্যাবটি। সে সময়েই আচমকা ঝোড়ো হাওয়ায় বাগজোলা খালের সেতুর উপরে টাঙানো তোরণ মড়মড় শব্দে ভেঙে পড়ে। গাড়ির পিছনের অংশ ছুঁয়ে রাস্তায় আছড়ে পড়ে বাঁশের কাঠামো। মঙ্গলবার রাতে বরাত জোরে বেঁচে গেলেন ওই ক্যাবচালক। প্রত্যক্ষদর্শীরা বুধবার জানান, একটু হলেই দুর্ঘটনায় পড়ত ক্যাবটি। যার প্রেক্ষিতে স্থানীয়দের প্রশ্ন, এত তোরণ কেন?

Advertisement

দমদম রোডের উপরে বাগজোলা খাল সংলগ্ন তোরণও মঙ্গলবারের ঝড়ে মচকে গিয়েছিল। বুধবার সেটি খোলা হয়। বস্তুত যশোহর রোড, দমদম রোড, ভিআইপি রোড, বিশ্ববঙ্গ সরণির সর্বত্র বিপদকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে এমনই অসংখ্য তোরণ। বিভিন্ন উৎসব বা প্রচারে যা এক বার তৈরি হলে, খোলা হয় না। রাস্তার দু’ধার দখল করে দাঁড়িয়ে বাঁশের কাঠামো। এ ছাড়াও রয়েছে বড় বড় ফ্লেক্স। জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রচারের পাশাপাশি খাদ্যমেলা, বইমেলা, মার্গসঙ্গীত, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সূচনা সবই থাকে সে প্রচারে। দুর্যোগের সময়ে সে সবই কিন্তু বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

দমদমের লক্ষ্মীনগরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘রাস্তা জুড়ে তো ভর্তি হোর্ডিং, ফ্লেক্স! ঝড়ের মধ্যে সেন্ট মেরিজ স্কুলের সামনের ফ্লেক্স ভেঙে রাস্তায় পড়ায় অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন পথচারী!’’ একই অভিযোগ, কৈখালি মোড়ে ভিআইপি রোডের দু’ধারের তোরণ নিয়ে। সম্প্রতি চিনার পার্কে তোরণ ভেঙে জখম হন এক বাইক আরোহী। প্রসঙ্গত অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপ চলাকালীন কৈখালি ট্র্যাফিক গার্ডের কাছে এমনই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভেঙে পড়েছিল একাধিক তোরণ এবং হোর্ডিং। এর পরেই ভিআইপি রোড থেকে তোরণ সরানোর নির্দেশ দেয় পূর্ত দফতর।

Advertisement

মঙ্গলবারের ঝড়ে দমদমের লর্ডসের মোড়ে বহুতলে গাছ ভেঙে পড়ে। একই দৃশ্য দমদমের মল রোড, সিঁথির গোপাল বসু লেন, দীপেন ঘোষ সরণি এবং বাগুইআটির দেশবন্ধুনগরে। গাছ পড়ে বন্ধ ছিল সাতগাছির বটতলা ও বাঙুর অ্যাভিনিউ। বিদ্যুতের তারে গাছ পড়ে দিনভর নাকাল হয়েছেন মানুষ। যার জেরে প্রমোদনগরের বাসিন্দারা বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপরে বসে পড়েন। পানীয় জল না পেয়ে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান দেশবন্ধুনগর এবং দমদম পার্কের তিন নম্বর ট্যাঙ্ক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, বিকেলেও বিদ্যুৎ আসেনি। এর ফলে অসুস্থ এবং বয়স্কদের অসুবিধা হয়েছে।

এ সবের মধ্যে মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তোরণ এবং ফ্লেক্সের যুগলবন্দি। পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘নির্দেশ পাওয়ার পরে তোরণ খোলা হয়েছিল। ফের কেউ লাগিয়েছেন। খোলার ব্যবস্থা করছি।’’ যদিও দক্ষিণ দমদমের পুর প্রধানের দাবি, ‘‘একটিও পুরসভার তোরণ নয়। যাঁরা লাগিয়েছেন, তাঁদের খুলতে অনুরোধ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন