পুরো হিসেবই গোলমাল করে দিয়েছে মধুমিতার মৃত্যু। প্রতীকী ছবি।
উলুবেড়িয়া পথ দুর্ঘটনায় আহত আরও এক জনের মৃত্যু হল। শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতা পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপি ঘোষের স্ত্রী মধুমিতা ঘোষের মৃত্যু হয়। শনিবার কাশী মিত্র শ্মশানে মধুমিতাদেবীর দাহকার্য সম্পন্ন হয়।
গত রবিবার ভোরে কোলাঘাট থেকে ফেরার পথে উলুবেড়িয়ার মনসাতলায় ছ’নম্বর জাতীয় সড়কে পথ দুর্ঘটনায় বাপিবাবুর জামাই প্রীতম সাহা ও একমাত্র নাতি শিবম সাহার মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হয়েছিলেন মধুমিতাদেবী, প্রীতমের স্ত্রী নবনীতা এবং প্রীতমের এক বন্ধু। তাঁদের প্রথমে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানান্তরিত করানো হয় ইএম বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালে। তার পর থেকে মধুমিতা ও নবনীতা দু’জনেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্ত্রী ও মেয়েকে ওই অবস্থায় দেখতে পারবেন না বলে এক সময়ে বাপিবাবু ঠিক করেছিলেন, হাসপাতালেও যাবেন না। গত বৃহস্পতিবার নবনীতার একটি অস্ত্রোপচার হয়। তা দেখতে শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে যান বাপিবাবু। নবনীতার শারীরিক অবস্থা আগের থেকে উন্নতি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিজনেরা। এ দিন নবনীতা সামান্য কথাবার্তা বলছেন।
কিন্তু পুরো হিসেবই গোলমাল করে দিয়েছে মধুমিতার মৃত্যু। গত মঙ্গলবার মধুমিতার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছিল বলে পারিবারিক সূত্রের খবর। কিন্তু তার পরই ফের অবনতি হয়। বাপিবাবু পরিজন ও বন্ধুদের কাছে একটাই কথা বলেছিলেন, স্ত্রী-মেয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসুক। বাপিবাবুর এক বন্ধুর কথায়, ‘‘কোথায় বাপিদা ভেবেছিলেন, দু’জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসবেন, কিন্তু সব তালগোল পাকিয়ে গেল!’’ আর এক বন্ধুর কথায়, ‘‘দেখুন জামাই-নাতির মৃত্যু তো আর বদলানো যাবে না। কিন্তু বাপিদা খুব আশা করেছিল, বৌদি ঠিক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসবেন। তা আর হল না। আমরা কোনও দিন দেখিনি দু’জনে আলাদা থাকছেন। এ বার কী হবে সেটাই তো ভাবতে পারছি না!’’
স্ত্রী-মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন কাউন্সিলর অফিসেও বসা শুরু করেছিলেন বাপিবাবু। জানিয়েছিলেন, একা একা বাড়িতে থাকা অসম্ভব! কাজে ফেরার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এ দিনের মৃত্যু ফের সব হিসেব তালগোল পাকিয়ে দিল।