ঠিক কত টাকা দেনা ছিল, যাদবপুরের ইব্রাহিমপুর রোডের ঘটনার তদন্তে নেমে সেটাই এখন খতিয়ে দেখছেন পুলিশের তদন্তকারীরা। ওই ঘটনায় মা ও দুই ছেলে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে বিষ খেয়েছিলেন। বড় ছেলে মারা গেলেও মা ও ছোট ছেলে বেঁচে যান। যাদবপুর থানা সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ২৫ লক্ষ টাকা নয়, ওই পরিবারের দেনার অঙ্কটা আরও বেশি। অত টাকা মেটানো যে সম্ভব নয়, তা বুঝেই চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই পরিবারের সদস্যেরা। তাতেই আত্মহত্যার চেষ্টা।
গত বুধবার ইব্রাহিমপুর রোডের একটি বহুতলের ফ্ল্যাট থেকে এক মহিলা এবং তাঁর দুই ছেলেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বড় ছেলেকে (৩৫) মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তবে মহিলা ও তাঁর ছোট ছেলে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, যুবকের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও মহিলা এখনও সঙ্কটে। পুলিশের দাবি, ছোট ছেলে তাঁদের জানিয়েছেন, একটি ব্যাঙ্কে ২৫ লক্ষ টাকা দেনা রয়েছে তাঁদের। তাঁর বাবাও দেনার কারণেই ২০০২ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন। বাবার দেনা মেটানোর চেষ্টা করেন বড় ছেলে। তাতে তাঁরও মোটা টাকা দেনা হয়ে যায়। তা না মেটানোয় ব্যাঙ্ক তাঁদের ফ্ল্যাট নিয়ে নেওয়ার কথা বলে। এর পরেই গত সোমবার মধ্যরাতে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
ইতিমধ্যেই ওই পরিবারের ব্যাঙ্কের কাগজপত্র খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। যাদবপুর থানা সূত্রের খবর, ব্যাঙ্কের ২৫ লক্ষ টাকা ছাড়াও বাজারে আরও পাঁচ লক্ষ টাকা দেনা রয়েছে ওই পরিবারের। তদন্তকারীদের দাবি, দেনার পরিমাণ আরও বেশিও হতে পারে। রানিকুঠির মোড়ে একটি আলো-পাখার দোকানের জন্য অত টাকা ধার করতে হল কেন, তা-ও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
বাঙুর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েকেরও বেশি সময় ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল গোটা পরিবার। সে জন্য নিয়মিত ওষুধও খেতেন তাঁরা। এ দিন ওই দুই যুবকের মেজো মামা বলেন, ‘‘ওরা চিন্তায় রয়েছে জানতাম। তা যে এই পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা বুঝিনি।’’