ছত্তীসগঢ়ের কন্টেনার উদ্ধার হল কলকাতায়

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডের ধোবিতলা থেকে ওই কন্টেনারটির সন্ধান পান সাউথ-ওয়েস্ট ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি সমীর পাঁজা এবং অতিরিক্ত ওসি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৩
Share:

সেই কন্টেনার। —নিজস্ব চিত্র।

ছুটির দিনে রাস্তায় টহল দিতে বেরিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের একটি ট্র্যাফিক গার্ডের দুই আধিকারিক। ফাঁকা রাস্তায় একটি কন্টেনারকে দাবিদারহীন পড়ে থাকতে দেখে তাঁরা আশপাশে চালকের খোঁজ করেন। কিন্তু চালককে না পেয়ে ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তারা কন্টেনারটি ঘিরে তল্লাশি শুরু করেন। তখনই তাঁদের চোখে পড়ে, বন্ধ কন্টেনারের এক দিকে একটি পরিবহণ সংস্থার নাম রয়েছে। কিন্তু সংস্থার দু’টি মোবাইল নম্বরের প্রথম দু’টি সংখ্যা মুছে দেওয়া হয়েছে। তা দেখে সন্দেহ বাড়ে ওই পুলিশ অফিসারদের। তাঁরা বাকি নম্বরের সূত্র ধরে ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর’ পদ্ধতিতে জানতে পারেন, কন্টেনারটি মুম্বইয়ের একটি সংস্থার। প্রায় সপ্তাহ দু’য়েক আগে মাল সমেত সেটি চুরি গিয়েছে ছত্তীসগঢ় থেকে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডের ধোবিতলা থেকে ওই কন্টেনারটির সন্ধান পান সাউথ-ওয়েস্ট ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি সমীর পাঁজা এবং অতিরিক্ত ওসি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁরা খবর পাঠান পশ্চিম বন্দর থানায়। পরে পুলিশ কন্টেনারটি বাজেয়াপ্ত করে। কিন্তু খালি কন্টেনারটি কী ভাবে ওখানে এল, সেটির চালকই বা কোথায় গেলেন, রাত পর্যন্ত তা জানতে পারেনি পুলিশ। সূত্রের দাবি, ঘটনার তদন্তে চলতি সপ্তাহেই ছত্তীসগঢ় পুলিশের একটি দলের কলকাতায় আসার কথা।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মুম্বইয়ের ওই পরিবহণ সংস্থাটি চলতি মাসের গোড়ায় ছত্তীসগঢ়ের রায়পুর থেকে একটি টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার টায়ার বুক করেছিল। যা কন্টেনারের মাধ্যমে পৌঁছনোর কথা ছিল গুজরাতের ভদোদরায়। তদন্তকারীরা জানান, মাঝপথেই কন্টেনার সমেত ট্রাকটি উধাও হয়ে যায়। সংস্থার তরফে চুরির মামলা দায়ের হয় ছত্তীসগঢ়ের দুর্গ জেলার কুমহারি থানায়। যদিও কোথা থেকে টায়ারগুলি চুরি গেল, তা এখনও জানা যায়নি। সেই সঙ্গে কন্টেনারটি ছত্তীসগঢ় থেকে পশ্চিম দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি কী করে কলকাতায় চলে এল, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে রহস্য। লালবাজারের গোয়েন্দাদের অনুমান, ঘটনার পিছনে রয়েছে আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতী-চক্র। যারা কলকাতাতেও সক্রিয়।

Advertisement

কেন ওই কন্টেনারটিকে নিয়ে সন্দেহ হল?

পুলিশ জানায়, যে জায়গায় কন্টেনারটি দাঁড়িয়েছিল, সেখানে সাধারণত কোনও গাড়ি থাকার কথা নয়। সে কারণেই কন্টেনারটি দেখে প্রথমে সন্দেহ হয়েছিল দুই পুলিশ অফিসারের। সামনে গিয়ে ফোন নম্বরের মুছে দেওয়া সংখ্যা দেখেই তাঁরা বুঝতে পারেন, কন্টেনারটিকে নিয়ে কোনও গোলমাল আছে। এর পরেই ঘটনাস্থলে থাকা ওসি এবং অতিরিক্ত ওসির পাশাপাশি এস পি গৌড় নামে এক সার্জেন্ট লাগাতার বিভিন্ন নম্বর জুড়ে ফোন করতে থাকেন। তাতেই কেল্লা ফতে হয়। সামনে আসে কন্টেনারের আসল তথ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন