Calcutta News

খেজুরের প্যাকেটে চরস ভরে কলকাতা থেকে হংকং, হদিশ আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার বেশি রাতে জোকার আবাসনের ১৪ নম্বর টাওয়ারের ২বি ফ্ল্যাটে হানা দেয় পুলিশ। ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে বাস করছিলেন প্রশান্ত দাস নামে এক ব্যক্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৫০
Share:

শুকনো খেজুরের প্যাকেটের (বাঁ-দিকে) মধ্যে চরসের গুলিকে খেজুরের আকার দিয়ে মিশিয়ে দেওয়া হত খেজুরের সঙ্গে। —নিজস্ব চিত্র।

শুকনো খেজুরের প্যাকেটের মধ্যে করে পাচার হচ্ছিল চরসের গুলি। শনিবার রাতে এমনই একটা মাদক পাচার চক্রের হদিশ পেল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। জোকার একটি অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করা হল চক্রের তিন সদস্যকে। উদ্ধার করা হল প্রায় কোটি টাকার চরস। এসটিএফের প্রধান, যুগ্ম কমিশনার শুভঙ্কর সিংহ সরকার জানিয়েছেন, ‘‘ওই চরস প্রথমে পাচার করা হত চিনে, সেখান থেকে হংকং।’’ আন্তর্জাতিক এই মাদর পাচার চক্রের শিকড় অনেক গভীরে বলে দাবি পুলিশের। সেখানে বড় মাপের ড্রাগ মাফিয়ারা রয়েছেন বলে মনে করছেন এসটিএফের শীর্ষ কর্তারা।

Advertisement

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার বেশি রাতে জোকার ওই আবাসনের ১৪ নম্বর টাওয়ারের ২বি ফ্ল্যাটে হানা দেয় পুলিশ। ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে বাস করছিলেন প্রশান্ত দাস নামে এক ব্যক্তি। এসটিএফের গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ঠাকুরপুকুর এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ জাকির নামে এক ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন ধরেই মাদক পাচারের জন্য খুঁজছিল এসটিএফ। সেই জাকিরকে পাকড়াও করেই হদিশ মেলে প্রশান্তের ডেরার।

শনিবার রাতে প্রশান্তের ডেরাতে হানা গিয়ে সুটকেসের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় ২০ কিলোগ্রাম চরস। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শুকনো খেজুরের প্যাকেটের মধ্যে চরসের গুলিকে খেজুরের আকার দিয়ে মিশিয়ে দেওয়া হত খেজুরের সঙ্গে। বাইরে থেকে বোঝা যেত না খেজুর ছাড়া অন্য কিছু আছে বলে। কারণ শুকনো খেজুরও একটু কালচে রঙের হয়। চরসের গুলিও কালচে। এর পর সেই খেজুর ভর্তি প্যাকেট সুটকেসে ভরে নিয়ে যাত্রী সেজে মাদক পাচারকারীরা পাড়ি দিতেন চিনের কুনমিংয়ে। রবিবার সকালেই কুনমিংয়ের বিমান ধরার কথা ছিল প্রশান্তদের। বিমানের টিকিটও পেয়েছেন গোয়েন্দারা । কুনমিং-এ পৌঁছনোর পর সেখান থেকে চরস নিয়ে হংকং রওনা দিত অন্য একটি দল।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাতপথে ওত পেতে বিপদ, দেখল ‘উইনার্স’

আরও পড়ুন: গাড়ি-ভূতের জন্য ‘ওঝা’র ব্যবস্থা পুরসভায়

প্রশান্তের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে পাকড়াও হয়েছে মাশুক আহমেদ নামে আরও এক পাচারকারী। মাশুকের বাড়ি মোমিনপুর এলাকায়। দীর্ঘ দিন ধরে এরা এই কারবার করছেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, নেপাল থেকে বীরগঞ্জ হয়ে বিহারে রক্সৌল সীমান্ত দিয়ে সড়ক পথে ভারতে এসে পৌঁছয় ওই চরস। এর পর সেই চরস ট্রেনে করে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। শহরে ওই মাদক আনার পর খেজুরের প্যাকেটে ভরে পাচার করা হত। জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, চরসের সঙ্গে সমান পরিমাণ খেজুর মেশানো হত, যাতে বোঝা না যায় যে খেজুরের প্যাকেটে অন্য কিছু আছে বলে। ধৃতদের রবিবার আদালতে পেশ করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন