বিক্ষোভের আশঙ্কায় চাকরিপ্রার্থীদের পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছিল শনিবার। —ফাইল চিত্র।
ছন্দপতন হতে পারত। কিন্তু, তা আটকেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে চাকরি পেতে বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন কয়েক হাজার যুবক-যুবতী। একটি বিমান সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্য করার জন্য সহকারীর প্রয়োজন বলে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল।
প্রায় ২৯ জন প্রথম সারির ভিআইপি যে রাস্তা দিয়ে বেরোবেন, সেই রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীরা গোলমাল পাকাতে পারে এমন আশঙ্কায় কাঁটা হয়েছিল প্রশাসন। কারণ, ওই বিমান সংস্থার যে নিউ টেকনিক্যাল এরিয়াতে (এনটিএ) এঁরা জড়ো হয়েছিলেন, সেটি বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর রাস্তার ঠিক পাশেই। এর আগে চাকরিপ্রার্থীরা ভিড় জমিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টার সাক্ষ্মী থেকেছিল এ শহর। সে বার বিক্ষোভ দেখিয়ে রাস্তায় বসেও পড়েছিলেন তাঁরা।
এ বারেও তেমন ছন্দপতনের আশঙ্কা ছিল। কারণ, হাতে হাতে ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য যাঁরা ৩৬ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন, শনিবার সকালে তাঁরা জানতে পারেন, ফর্ম বাক্সে ফেলে গেলেই চলবে। প্রশ্ন ওঠে, তা হলে এত ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সময় নষ্টের অর্থ কী? শনিবার সকালে এ নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সামান্য বাকবিতন্ডাও হয়।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, হাতে হাতে ইঞ্জিনিয়ারদের মেশিন এগিয়ে দেওয়া, চাকা পরিবর্তনের জন্য জ্যাক পাম্প করা, এমন প্রচুর কাজ করতে হয় এই সহকারীদের। তাঁদের ‘হ্যান্ডিম্যান’ বলা হয়। দশ থেকে পনেরো হাজার টাকা বেতন তাঁদের। শনিবারই ছিল সেই ফর্ম জমা দেওয়ার দিন। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে, শুক্রবার ও শনিবার ওই হাজার পাঁচেক চাকরিপ্রার্থীর ভিড়ে ওই বিমান সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারেরা বাধ্য হয়ে অন্য গেট দিয়ে অফিসে ঢোকেন।
১৯৯৭ সালে মাদার টেরিজা মারা যাওয়ার সময়ে একসঙ্গে অগুণতি ভিআইপি দেখেছিল কলকাতা। শহরে এসেছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের বহু নেতা, এমনকি দেশনায়ক এবং রাষ্ট্রপ্রধানেরা। তার আগে, এত জন জাতীয় রাজনীতিবিদকে এ শহর একসঙ্গে দেখেছিল ১৯৮৯ সালে জ্যোতিবাবুর ব্রিগেড সমাবেশে। তার পরে এ বার। আগের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তাই শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছিল ওই চাকরিপ্রার্থীদের।