রাস্তার মোড়ের কিয়স্ক থেকেই এ বার ই-জিডি

জরুরি জিনিস হারিয়ে নতুন করে পেতে আমজনতার যাতে হেনস্থা না হতে হয়, সেই জন্য এ বার ই-জিডি করার সুবিধে আনছে কলকাতা পুলিশ। ই-জিডি মানে, বৈদ্যুতিন জেনারেল ডায়েরি। যা করতে থানায় যাওয়ার আর দরকার হবে না।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ১২:১০
Share:

জরুরি জিনিস হারিয়ে নতুন করে পেতে আমজনতার যাতে হেনস্থা না হতে হয়, সেই জন্য এ বার ই-জিডি করার সুবিধে আনছে কলকাতা পুলিশ। ই-জিডি মানে, বৈদ্যুতিন জেনারেল ডায়েরি। যা করতে থানায় যাওয়ার আর দরকার হবে না।

Advertisement

মোবাইল, ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা অফিসের পরিচয়পত্র খোওয়া যেতে পারে। পকেটমারি হতে পারে এটিএম কার্ড। হয়তো মিলছে যাচ্ছে না জন্মের বা মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের শংসাপত্র। এ সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি ও নতুন সিম কার্ড পেতে থানায় জেনারেল ডায়েরি করা বাধ্যতামূলক। তার পরে হারিয়ে যাওয়া জিনিস নতুন ভাবে ফিরে পেতে চেয়ে করা আবেদনের সঙ্গে সেই জিডি নম্বর পেশ করতে হয়।

কিন্তু কেবল জিডি নম্বর হাতে পাওয়ার ঝক্কিও কম নয়। প্রথমত, কোথায় হারাতে পারে তার মোটামুটি একটা আন্দাজ করে তার কাছাকাছি থানায় গিয়ে অনেক সময়েই জানা যায়, যেতে হবে অন্য থানায়। দ্বিতীয়ত, কেউ হয়তো অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাতে ধর্মতলার কাছে ফোন হারিয়েছেন, কিন্তু তা বুঝতে পারলেন টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোয় গিয়ে। নিউ মার্কেট থানায় গিয়ে জিডি করতে করতে পরদিন আর পার্ক স্ট্রিটে গিয়ে নতুন সিম যখন হাতে পাওয়া গেল, তত ক্ষণে ২০ ঘণ্টা গড়িয়েছে।

Advertisement

এ সব এড়াতেই ই-জিডি। সেই জন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ই-জিডি কিয়স্ক তৈরি করছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে দশটি কম্পিউটার চালিত যন্ত্র কেনা হয়েছে। সেগুলি ধর্মতলা, শ্যামবাজার, গড়িয়াহাট, পার্ক সার্কাস-সহ শহরের দশটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বসানো হবে। ওখানে ই-জিডি করলেই হবে, থানায় যাওয়ার দরকার হবে না। প্রথমে নিজেকে নথিভুক্ত করতে হবে সঠিক পরিচয় যাচাই পদ্ধতির মাধ্যমে। এই ব্যবস্থায় নিজের নাম, দ্বিতীয় ফোন নম্বর, ঠিকানা উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। তার পরে নালিশের ধরন অর্থাৎ জিনিসটি হারিয়েছে না খোওয়া গিয়েছে, কোথায়, কবে ও কখন ঘটেছে, তা জানাতে হবে। ঘটনাস্থল জানালে কম্পিউটার জানিয়ে দেবে, কোন থানার এক্তিয়ারে পড়ছে।

যে সব জিনিস হারালে বা খোয়া গেলে ই-জিডি করা যাবে, তার একটি তালিকা তৈরি করেছে লালবাজার। সেখানে ৩১টির কথা বলা আছে। ই-জিডি করতে গেলে কম্পিউটারের স্ক্রিনে ওই তালিকা ভেসে উঠবে। নিজের খোয়া যাওয়া বা হারানো জিনিসকে তার মধ্যে বেছে নিতে হবে। তার পরে জানাতে হবে বিস্তারিত বিবরণ। যেমন, আধার কার্ড হারালে তার নম্বর, ফোনের আইএমইআই নম্বর, সিম কার্ডের নম্বরের সঙ্গে সংস্থার নাম ইত্যাদি। এই সব ধাপ পেরোনোর পরে ই-জিডি নম্বর তৈরি হবে। লালবাজার জানাচ্ছে, ই-জিডি সর্বত্র বৈধ। ব্যাঙ্ক, মোবাইল পরিষেবা দেওয়া সংস্থা প্রয়োজনে পুলিশের ওয়েবসাইটে ই-জিডি-র নম্বর দিয়ে যাচাই করে দেখে নিতে পারেন।

লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রথম প্রথম ই-জিডি কিয়স্কে পুলিশকর্মী থাকবেন। তাঁরা মানুষকে সাহায্য করবেন ই-জিডি করতে।’’ ওই অফিসারের কথায়, ‘‘তালিকাভুক্ত ৩১টি জিনিস হারালে ই-জিডি ছাড়াও থানায় গিয়েও জিডি করা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন