বেআইনি বন্দুকে আত্মহত্যা, এ শহর যেন আগ্নেয়াস্ত্রের আখড়া

শহরের অলিগলিতে যে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা রয়েছে, তার আরও একবার প্রমাণ পাওয়া গেল সোমবার। খিদিরপুরের ভূকৈলাস রোডে একটি সামান্য পারিবারিক বিবাদের জেরে আজহার হোসেন (৩২) নামে এক যুবক নিজেই বন্দুক থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৬ ১৮:৫৮
Share:

শহরের অলিগলিতে যে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা রয়েছে, তার আরও একবার প্রমাণ পাওয়া গেল সোমবার।

Advertisement

খিদিরপুরের ভূকৈলাস রোডে একটি সামান্য পারিবারিক বিবাদের জেরে আজহার হোসেন (৩২) নামে এক যুবক নিজেই বন্দুক থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পরে পুলিশ ওই ঘর থেকে একটি দেশি পিস্তল এবং চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। জানা গিয়েছে, এই পিস্তলটি দেশি নাইনএমএম বোরের পিস্তল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, পারিবারিক বিবাদের জেরেই ওই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশের দাবি, কয়েক হাজার টাকা দিয়ে কিছুদিন আগে ওই পিস্তলটি জোগাড় করেছিলেন আজহার। যার অর্থ, টাকা থাকলে এ শহরে যে কেউ লাইসেন্স ছাড়াই আগ্নেয়াস্ত্র কিনে বাড়িতে রেখে দিতে পারেন। এ রকম প্রচুর বেআইনি অস্ত্র যে মজুত করা রয়েছে তার প্রত্যক্ষ বেশ কয়েকটি প্রমাণ সাম্প্রতিক কালে পুলিশ পেয়েছে। দিন দশেক আগেই পার্ক সার্কাসে প্রকাশ্যে দুষ্কৃতীরা গুলি-বোমা চালিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

লালবাজারের হিসেব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে শহরের বুকে প্রায় কুড়িটির মতো ঘটনায় দুষ্কৃতীরা বেআইনি অস্ত্র থেকে গুলি চালিয়েছিল। তার মধ্যে হরিদেবপুরে পানশালার সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন এক যুবক। ওই বছরেই পুরভোটের দিন গিরীশ পার্কে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসেও দুষ্কৃতীদের সেই গুলি চালানোর বিরাম নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ বছর বিধানসভা ফল বেরোনোর পরে পার্ক সার্কাসে গুলি চালিয়ে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন পুলিশ কর্তারা। পুলিশের নিচুতলার একাংশের অভিযোগ, পর পর এমন হামলার ঘটনায় জড়িতদের পুলিশ গ্রেফতার করছে ঠিকই, কিন্তু দুষ্কৃতীদের অস্ত্রের অভাব হচ্ছে না। কী ভাবে এত সহজে দুষ্কৃতীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছে যাচ্ছে, কারা কোন পথে গুলি সরবরাহ করছে— তা জানা থাকলেও ধরার অনুমতি নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন থানায় কাজ করা একাধিক অফিসারের কথায়, বর্তমানে কোনও ঘটনা না ঘটলেও তবেই তল্লাশি করা হয় দুষ্কৃতীদের খোঁজে। এ ছাড়া কোথাও অভিযানের অনুমতি মেলে না বলেই তাঁদের অভিযোগ।

যার ফলে, আজহারেরা সহজেই ঘরের ভিতরে অস্ত্র মজুত করে রাখতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় ব্যবসায়ী আজহার রবিবার রাতে বাড়ি ফেরার পর তাঁর সঙ্গে স্ত্রীর বচসা হয়। পরে পরিবারের সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আজহার ঘুমোবেন বলে একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। পুলিশের দাবি, এতে কোনও সন্দেহ হয়নি পরিবারের সদস্যদের। রাত ১২ টা নাগাদ ওই ঘর থেকে গুলি চলার আওয়াজ শুনে দরজা ভেঙে দেখা যায়, ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছেন আজহার। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। গুলি তাঁর মাথায় লাগে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।


আরও পড়ুন

ভবানীপুরে বাড়ির নালায় প্রৌঢ়ার দেহ, পিছনে প্রোমোটার চক্র!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement