আইসিএসই, আইএসসির মেধা তালিকায় উজ্জ্বল শহরের মুখ

সর্বভারতীয় আইসিএসই (দশম শ্রেণি) এবং আইএসসি (দ্বাদশ শ্রেণি) পরীক্ষার মেধা তালিকায় সামনের সারিতেই স্থান করে নিল কলকাতার পড়ুয়ারা। শুক্রবার বিকেল তিনটেয় ফল ঘোষণা করা হয় কাউন্সিলের পক্ষ থেকে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০২:০৩
Share:

(বাঁ দিক থেকে) অর্ক চট্টোপাধ্যায়, ঐন্দ্রিলা ভদ্র, অর্কদেব সেনগুপ্ত এবং কবিতা দেশাই। — নিজস্ব চিত্র

সর্বভারতীয় আইসিএসই (দশম শ্রেণি) এবং আইএসসি (দ্বাদশ শ্রেণি) পরীক্ষার মেধা তালিকায় সামনের সারিতেই স্থান করে নিল কলকাতার পড়ুয়ারা। শুক্রবার বিকেল তিনটেয় ফল ঘোষণা করা হয় কাউন্সিলের পক্ষ থেকে।

Advertisement

আইসিএসই পরীক্ষায় এই রাজ্যে যুগ্মভাবে প্রথম হয়েছে কলকাতার লা মার্টিনিয়র ফর বয়েজ-এর অর্ক চট্টোপাধ্যায় এবং জোকার বিবেকানন্দ মিশনের ঐন্দ্রিলা ভদ্র। সারা দেশের নিরিখে আইসিএসই পরীক্ষায় অর্ক এবং ঐন্দ্রিলার স্থান তৃতীয়। ওদের দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৯৮.৮ শতাংশ। অন্য দিকে, আইএসসি পরীক্ষায় এই রাজ্যে যুগ্মভাবে প্রথম পার্ক সার্কাস ডন বস্কো স্কুলের অর্কদেব সেনগুপ্ত এবং ভবানীপুর গুজরাতি এডুকেশন সোসাইটির কবিতা দেশাই। অর্কদেব এবং কবিতার প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.২৫ শতাংশ। সারা দেশে আইএসসি পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান দখল করেছে এই দুই কৃতী।

শুক্রবার ফল ঘোষণা শুনেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে এই কৃতীরা। বরাবরের শান্ত মেয়ে বলে পরিচিত ঐন্দ্রিলার এই সাফল্যে ভীষণ খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের অধ্যক্ষা বলেন, ‘‘আমাদের ছাত্রছাত্রীরা প্রতি বারই প্রথম দশে জায়গা করে নেয়। এ বারও তাই।’’ লা মার্টসের অর্ক অবশ্য প্রথমে ফল শুনে বিশ্বাসই করতে পারেননি। ‘‘ভাল ফল আশা করেছিলাম নিশ্চয়ই, কিন্তু এ ভাবে রাজ্যে প্রথম স্থানে থাকব ভাবিনি।’’— বলল অর্ক। আরও ভাল ফল হতে পারত বলেই মনে করছেন অর্কর মা মন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘‘আমি এবং অর্কর বাবা দু’জনেই ডাক্তার। অর্করও ইচ্ছা ডাক্তার হওয়ার। সেই মতোই এআইপিএমটি-র প্রস্তুতি নেবে ও।’’— বলেন মন্দিরাদেবী।

Advertisement

অনটনের মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে আইএসসি-তে ৯৭.৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে মনসুর হাবিবুল্লাহ স্কুলের শাশ্বত সাহা। ‘‘ছোট থেকেই আমাদের স্কুলে প্রথম, দ্বিতীয় স্থানেই থাকত শাশ্বত। পারিবারিক ক্ষমতা না থাকায় পড়াশোনার সমস্ত দায়িত্বই ছিল স্কুলের। এই সাফল্য ওর লড়াইয়ের সাফল্য।’’— বলছেন স্কুলের অধ্যক্ষা।

বরাহনগরের সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের রীতা বেরা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিল আইএসসি পরীক্ষার কিছু দিন আগে। পরীক্ষায় বসাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল তার। এ দিন ফল বেরোনোর পরে দেখা যায় রীতা ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে।

আইসিএসই (দশম শ্রেণি) পরীক্ষায় সারা দেশে পাশ করেছে ৯৮.৫০ শতাংশ পরীক্ষার্থী। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাশের হার বেড়েছে ০.০১ শতাংশ। এ বছর আইসিএসই-র মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৫৯১। পশ্চিমবঙ্গে মোট পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৪৮৬। এ রাজ্যে আইসিএসই পরীক্ষায় পাশের শতাংশ ৯৮.০৫ শতাংশ।

অন্য দিকে, আইএসসি (দ্বাদশ শ্রেণি)-তে সারা দেশে পাশ করেছে ৯৬.৪৬ শতাংশ পড়ুয়া। যা গত বছরের থেকে ০.১৮ শতাংশ বেশি। এ বছর আইএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৭২ হাজার ৬৯। পশ্চিমবঙ্গে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২১ হাজার ৪৫১। এ রাজ্যে পাশ করেছে ৯৫.৯৫ শতাংশ পড়ুয়া। তবে গত বছরের মতো এ বারও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের পাশের হার অনেকটাই বেশি।

কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগ্‌জামিনেশনের তরফে জানানো হয়েছে, দশম শ্রেণি অর্থাৎ আইসিএসই পরীক্ষার মার্কশিট এবং শংসাপত্র পাওয়া যাবে ১৪ মে থেকে। দ্বাদশ শ্রেণি অর্থাৎ আইএসসি পরীক্ষার মার্কশিট এবং শংসাপত্র পাওয়া যাবে ১০ মে থেকে। স্কুল থেকে পড়ুয়াদের সেগুলি সংগ্রহ করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন