অপরিষ্কার: নোংরা হয়ে থাকা সুলভ শৌচালয়। নিজস্ব চিত্র
বৃহন্মুম্বই যা পারে কলকাতা তা পারে না। আর তাই এ শহরের সুলভ শৌচালয়গুলি তৈরির পরেও ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে থাকলেও কোনও হেলদোল দেখায় না কলকাতা পুরসভা। অথচ একই সমস্যার ভিন্ন সমাধান সূত্র খুঁজে নিয়েছে বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি)।
কলকাতার মতোই অপরিচ্ছন্ন সুলভ শৌচালয় নিয়ে জেরবার হতে হতে গোটা পরিস্থিতি যাচাই করতে এক অভিনব পথ বের করেছে বিএমসি। পুর এলাকার সুলভ শৌচালয়ের জন্য ভোট নেওয়া শুরু করেছেন বিএমসি কর্তৃপক্ষ। ভোটদানের মাধ্যমে এলাকার সুলভ শৌচালয়ের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে মতামত জানাতে পারবেন শৌচালয় ব্যবহারকারী। সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই পরিষ্কার হচ্ছে শৌচালয়। এ বছরের গোড়ায় ‘মুম্বই টয়লেট লোকেটর’ নামে একটি অ্যাপস্ চালু করেছেন বিএমসি কর্তৃপক্ষ। অথচ কলকাতা রয়ে গিয়েছে একই জায়গায়।
বাবুঘাট বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সুলভ শৌচালায়: গন্ধে টেকা দায়। চারদিকে পড়ে জল। সামান্য অসতর্ক হলেই পা পিছলে পড়ে যেতে হবে। ডাস্টবিন মানে এখানে ঝুড়ি। শৌচাগারের ঢাকা দেওয়া বিন নেই।
টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর উত্তম মূর্তির পাশের সুলভ শৌচালয়: বাইরে থেকেই অ্যামোনিয়ার কটূ গন্ধ নাকে আসে। ভিতরে পুরুষ ও মহিলাদের ঢোকার গেট আলাদা। মহিলা শৌচালয়ের দরজায় পর্দা ঝুলছে। ঢুকতেই জল থইথই মেঝেতে পড়ে বিড়ি-সিগারেটের টুকরো।
চারু-মার্কেট এলাকায় টালিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন সুলভ শৌচালয়: চারদিকে পড়ে জল। কটূ গন্ধ ঢাকতে ছড়ানো ব্লিচিং পাউডারের তীব্র গন্ধে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যাওয়ার উপক্রম।
উল্টোডাঙা স্টেশন সংলগ্ন শৌচালয়: সব সময় জল জমে থাকে এখানে। শৌচালয় পরিষ্কার হয় অনিয়মিত। দুর্গন্ধ ও অপরিচ্ছন্ন হলেও তা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন মানুষ।
কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় পুরসভা সুলভ শৌচালয় তৈরি করলেও সেগুলির পরিচ্ছন্নতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অভিযোগ, বিভিন্ন সংস্থার হাতে সুলভের দেখভালের দায়িত্ব তুলে দিয়েই দায় সেরেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। অপরিচ্ছন্নতা থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রাকৃতিক কাজ চেপে রাখেন। অথচ সুলভ ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট টাকা ধার্য করা হয়। তার পরেও কেন এত অপরিচ্ছন্ন তা নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ ঘুরেও দেখেন না বলে অভিযোগ করছেন সুলভের ব্যবহারকারীরা।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দায়িত্বে মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দারের সাফাই, ‘‘পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতেই বিভিন্ন সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয় সেগুলির দায়িত্ব। রোজ এত মানুষ শহরে আসেন যে পরিষ্কার রাখা কঠিন। তবে দেখছি কী করা যায়!’’