এডিবির টাকায় শহরে বারো ঘণ্টা জল

এখন শহরে দিনে ৪-৫ ঘণ্টা পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করে পুরসভা। এ বার তা ১২ ঘণ্টা করার পথে এগোচ্ছে পুরসভা। বুধবার এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের (এডিবি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে পুর প্রশাসনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০২
Share:

এখন শহরে দিনে ৪-৫ ঘণ্টা পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করে পুরসভা। এ বার তা ১২ ঘণ্টা করার পথে এগোচ্ছে পুরসভা। বুধবার এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের (এডিবি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে পুর প্রশাসনের। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, জল সরবরাহ বাড়ানোর জন্য যা খরচ হবে, তা দেবে এডিবি। এ বাবদ ১২ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭২ কোটি টাকা ঋণ দেবে এডিবি।

Advertisement

কলকাতায় জলপ্রকল্পের জন্য এর আগেও ঋণ দিয়েছে এডিবি। তখনও জলকর বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল তাদের তরফে। ঋণের অন্যতম শর্ত হিসেবে এ দিনের বৈঠকেও এডিবি কর্তারা পুর কর্তৃপক্ষকে জানান, যে সব এলাকায় জল সরবরাহের সময় বাড়ানো হবে, সেখানে প্রতিটি বাড়িতে ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে মিটার বসাতে হবে। কিন্তু মিটার বসানোর প্রস্তাব শুনেই আপত্তি জানায় পুরসভা। এডিবি-র তরফে তখন বলা হয়, মিটার বসিয়ে জলের জন্য আপাতত কর আদায়ের প্রয়োজন নেই। কিন্তু মিটার বসালে অন্তত বোঝা যাবে, কে কত জল ব্যবহার করছে। কলকাতায় অনেকেই বাড়িতে ব্যবহারের জন্য জল বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করেন। আবার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কত জল ব্যবহার করে, তারও সুনির্দিষ্ট হিসেব নেই। গোটা ব্যাপারটা নিয়ে ঘুঘুর বাসা হয়ে রয়েছে। কিন্তু মিটার বসালে সেই ছিদ্রপথ অন্তত বন্ধ করা যাবে। এডিবি কর্তারা মেয়রকে এও পরামর্শ দেন যে, মিটার বসানো নিয়ে যাতে বিতর্ক তৈরি না হয়, তার সহজ উপায় এ বার থাকবে। পুরসভা নাগরিকদের কাছে এই বার্তা দিতে পারবে যে, যেই কাজটা গত পঞ্চাশ বছরে হয়নি, তা এ বার হবে। দিনে ১২ ঘণ্টা পানীয় জল সরবরাহ করা হবে।

এডিবি-র পক্ষে এ দিন পুরভবনে আসেন সংস্থার শহর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ নীতা পোখরেল-সহ একাধিক আধিকারিক। প্রায় ঘণ্টা খানেক বৈঠক হয় দু’পক্ষের মধ্যে। পানীয় জল সরবরাহের পাশাপাশি জঞ্জাল অপসারণ এবং নিকাশি নালা নিয়েও আলোচনা হয়। মেয়র শোভনবাবু জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে এডিবি। তবে পানীয় জলের বিষয়ে তাঁরা দ্রুত সহায়তা করতে চান। মেয়র জানান, বর্তমানে কলকাতার জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ লক্ষ। এখন শহরের যে পরিমাণ জল উৎপাদিত হয়, তা মানুষের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। জন পিছু দৈনিক ৪০ গ্যালন জল দেওয়ার ভাণ্ডার রয়েছে। এখন টালা এলাকায় পুরসভার ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বেশি সময় জল পাওয়া যায়। কিন্তু অন্যত্র তা নেই। বর্তমানে টালা, ধাপা এবং গার্ডেনরিচে জল উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। আগামীতে সংযোজিত কলকাতার ১৪২, ১৪৩ এবং ১৪৪ ওয়ার্ড এলাকাতেও একটি জলপ্রকল্প গড়ে তোলা হবে। তবে ওই সব জলপ্রকল্প থেকে সবর্ত্র পানীয় জলের লাইন না থাকায় জল দেওয়ার সমস্যা রয়েছে।

Advertisement

বৈঠকে জল সরবরাহের লাইন বসানো নিয়েই এডিবি-র সহায়তার জন্য আবেদন জানান পুর কতৃর্পক্ষ। শোভনবাবু জানান, এডিবি জলপ্রকল্প তৈরির জন্য কোনও অর্থ দিচ্ছে না। কেবল পানীয় জল সরবরাহের লাইন বসানোর কাজে সহায়তা ৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ করার আশ্বাস দিয়েছে। আগামী নভেম্বর মাস থেকেই সেই প্রকল্প রূপায়ণের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন