কলকাতার কড়চা

উষা গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর রঙ্গকর্মী-র রুদালী নাটকে মঞ্চের ওপর ঘুরছেন ধুনুচি হাতে, ধুনুচির সেই ধোঁয়ায় আকস্মিক তৈরি হয়ে যাচ্ছে যেন রবীন্দ্রনাথের মুখাবয়ব, সে ছবি ফ্রেমবন্দি করে ফেলছেন নিমাই ঘোষ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০০:০০
Share:

বাংলা নাটকের চিত্রভাণ্ডার

Advertisement

উষা গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর রঙ্গকর্মী-র রুদালী নাটকে মঞ্চের ওপর ঘুরছেন ধুনুচি হাতে, ধুনুচির সেই ধোঁয়ায় আকস্মিক তৈরি হয়ে যাচ্ছে যেন রবীন্দ্রনাথের মুখাবয়ব, সে ছবি ফ্রেমবন্দি করে ফেলছেন নিমাই ঘোষ। ক্যামেরা আজ প্রায় তাঁর শরীরেরই অংশ, ইন্দ্রিয়ের মতোই ক্যামেরার চোখ দিয়ে স্পষ্ট তিনি বুঝতে পারেন আলো কোথা থেকে আসছে, কোথায় যাবে, কী ভাবে ঘুরবে... মূলত সাদাকালোয় ছবি তোলেন, আজও অ্যানালগ ক্যামেরা, ডিজিটাল না ছুঁয়েও আলো-আঁধারের বিকীর্ণ শিল্প সৃষ্টি করে চলেছেন দশকের পর দশক। কলকাতার থিয়েটার, থিয়েটারের দিকপাল শিল্পীদের যে শিল্প জায়মান বছরের পর বছর, তা নিমাইবাবুর হাতের ছোঁয়ায় চিত্রময় ইতিহাসের অমূল্য ভাণ্ডার। তা থেকেই বাছাই ৭৪টি ছবি নিয়ে মুম্বইয়ে ভাও দাজি লাড মিউজিয়ামে এক প্রদর্শনী, ৯ এপ্রিল সন্ধেবেলায়। বড় স্ক্রিনে স্লাইড শো। ছবিগুলি দেখার পর দর্শকদের সঙ্গে কথোপকথনে নিমাইবাবু বলবেন নাটক নিয়ে নিজের জীবনের নানান ঘটনা, ছবি তোলার মুহূর্তগুলি। ‘আমি ফ্ল্যাশ ব্যবহার করি না, কারণ আমি মনে করি আলো-অন্ধকারের যে ন্যাচারাল ড্রামা, ফ্ল্যাশ সেটা নষ্ট করে দেয়। এই আলোর কাজ শিখেছি তাপসদার (সেন) কাছে, তাঁকেই উৎসর্গ করছি এ-প্রদর্শনী।’ ‘ড্রামাটিক মোমেন্টস’ নামে প্রদর্শনীটির আয়োজক জুনুন থিয়েটার। কর্ণধার সঞ্জনা কপূর, শশী কপূরের কন্যা, ইনা পুরীর সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর বাড়িতে, দীর্ঘক্ষণ খুঁটিয়ে দেখেছেন গ্রুপ থিয়েটার-পেশাদারি থিয়েটার-যাত্রা-বিদেশি থিয়েটার সংক্রান্ত তাঁর সমস্ত ছবি। ‘শশী-র সঙ্গে কত কালের পরিচয়, ওঁর ‘উৎসব’ বা ‘কিস্‌সা কাঠমান্ডু কা’র সময় থেকে। একবার আনন্দলোক-এর জন্য ফ্যাশন-এর ছবি তুলতে গিয়েছি, ধুতিপাঞ্জাবি পরার পর জেনিফার শশীর পাঞ্জাবির বোতাম লাগিয়ে দিচ্ছিলেন মনে আছে...’ স্মিত হাসি নিমাইবাবুর মুখে। সঙ্গে প্রদর্শনীর একটি ছবিতে সুমন মুখোপাধ্যায় নির্দেশিত তৃতীয় সূত্র-র মেফিস্টো-য় গৌতম হালদার।

Advertisement

পরিবেশবিজ্ঞানী

তারকমোহন দাসের জন্ম ১ মার্চ ১৯২৪, কলকাতায়। বাবা সংগীতসাধক ক্ষেত্রমোহন দাস ও মা লাবণ্যমঞ্জরী। বাবা ১২টি বাদ্যযন্ত্র আবিষ্কার করেন, এই পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা তারকমোহন সেতার, অর্গান, পিয়ানোয় পারদর্শী ছিলেন। খিদিরপুরে সাতপুরুষের বাসিন্দা। খিদিরপুর অ্যাকাডেমি থেকে ম্যাট্রিক, পরে প্রেসিডেন্সি কলেজ হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম এসসি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান লেখক তারকমোহন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানে পিএইচ ডি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক, ডিন এবং পরিবেশ বিজ্ঞানের কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। ৪০ বছরেরও বেশি সম্পাদনা করেছেন ‘ইন্ডিয়ান বায়োলজিস্ট’ পত্রিকা। পরিবেশবিজ্ঞান চর্চার অন্যতম পুরোধা, জীবনবিজ্ঞান ও পরিবেশ বিষয়ক রচনার জন্য সমাদৃত। আমার ঘরের আশেপাশে (নরসিংহ দাস পুরস্কার), পৃথিবী কী শুধু মানুষের জন্য (রবীন্দ্র পুরস্কার), মানুষ একটি বিপন্ন প্রজাতি এবং পরিবেশ প্রসঙ্গ তাঁর উল্লেখযোগ্য বই। ২৪ মার্চ প্রয়াত হলেন ৯৩ বছরের বিজ্ঞানী।

আজীবন

কিডনির অসুখ এবং ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে, এসএসকেএম হাসপাতালে দিন পনেরো লড়াইয়ের পর ফুরিয়ে গেল সমাজকর্মী কাঞ্চন রায়ের জীবন। মাত্র বাইশ বছর বয়সে। বেলুড়ে থাকতেন তিনি। সমাজকর্মী শব্দটির সঙ্গে কাঞ্চনের সখ্য ছিল না মোটেই, কিন্তু শহরে ও শহরের বাইরে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ছুটে যেতেন তিনি। বিভিন্ন হাসপাতালে ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের জন্য রক্তদাতা জোগাড় করে দেওয়ার কাজে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কনকনে শীতের রাতে কম্বলের গাঁটরি মাথায় নিয়ে চষেছেন শহরের ফুটপাথ, মফস্সলের স্টেশন। পথে থাকা মানুষগুলিকে উষ্ণতা দিতে। এই উষ্ণতার আঁচ পৌঁছে দিয়েছিলেন ফালাকাটার চা-বাগানেও। হাসি ফুটিয়েছেন পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত শবর-অধ্যুষিত গ্রামের মানুষের মুখে। পথশিশুদের নতুন জামা ও খাবারের ব্যবস্থা করতেন নিয়মিত। আর এইটুকু বয়সে এতটা কর্মকাণ্ডের জন্য কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত ধরার প্রয়োজন পড়েনি তাঁর। ফেসবুকের মাধ্যমে আবেদন জানিয়েই এগিয়েছিলেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজে।

মহাক্ষণ

‘মম্বাসা’ জাহাজে করে আইরিশ কন্যা মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্‌ল এসে পৌঁছলেন কলকাতা বন্দরে। সেখানে তাঁর জন্য অপেক্ষায় স্বামী বিবেকানন্দ। ২৫ মার্চ ১৮৯৮ স্বামীজি তাঁকে ব্রহ্মচর্যে দীক্ষা দিলেন, মার্গারেট হয়ে উঠলেন ‘নিবেদিতা’। তাঁর সার্ধশতজন্মবার্ষিকীতে ২৫ মার্চের এই মহাক্ষণটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ‘রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুল’ আয়োজন করেছিল এক অনুষ্ঠানের। সূচনায় সারদা মঠের প্রব্রাজিকা অশেষপ্রাণা মাতাজি ও প্রব্রাজিকা দেবপ্রাণা মাতাজি নিবেদিতার জীবন ও কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। ছিল ভগিনী নিবেদিতাকে উৎসর্গ করা প্রযোজনা ‘বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি’। তাতে যোগ দেন জগন্নাথ বসু, ঊর্মিমালা বসু ও এক ঝাঁক তরুণ বাচিকশিল্পী।

অবসাদ

অবসাদ বা হতাশা কি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে ক্রমশ গ্রাস করছে! নইলে সংবাদপত্র খুললেই কেন নজরে আসে আত্মহত্যা বা হত্যার খবর। আমরা কখনই কি গভীর ভাবে ভেবে দেখেছি ঠিক কোন আর্থসামাজিক অবস্থা থেকে মানুষ এই পথ বেছে নেয়। এই সমস্ত বিষয় নিয়েই আয়োজিত হয়েছে একটি আলোচনাচক্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে ৭ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৫টায় আইসিসিআর-এর মৌলানা আজাদ সভাঘরে এই অনুষ্ঠানে থাকবেন ড. পার্থসারথি নন্দী, সুমিত দত্ত, গৌরাঙ্গ মিত্র প্রমুখ। ডিপ্রেশন: লেটস টক অ্যাবাউট ইট শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজক সুতানুটি হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি। গত বছর এই সংস্থাই কাজ করেছিল ডায়াবিটিজ নিয়ে।

বইপ্রাণ

বই পড়েন, বই কেনেন অনেকেই। বাড়িতে রীতিমতো গ্রন্থাগার বানিয়ে ফেলেছেন এমন লোকেরও নিতান্ত অভাব নেই। কিন্তু সাধারণ ভাবে বইপ্রেমিকরা বই ধার দিতে খুব একটা ভালবাসেন না, আর একেবারে দান? কদাচিৎ তেমন কারও কথা শোনা যায়। সত্তর বছরের সরোজকুমার দে ছিলেন তেমনই আশ্চর্য বইপাগল। দেদার বই কিনতেন। ঝাড়গ্রামের বাড়িতে কি কলকাতার ফ্ল্যাটে রয়ে গিয়েছে সেই গ্রন্থসম্ভার। কিন্তু সে সব বই স্থাণু ছিল না। সরোজবাবু খোঁজ রাখতেন, বন্ধু-পরিচিতজন কে কী বিষয়ের বই ভালবাসেন। মাঝে মধ্যেই কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়তেন বন্ধুদের বাছা বাছা বই উপহার দিতে। আবার বই কিনে শূন্যস্থান ভরাট করতেন। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন, ছোটবেলা থেকে অবসরের তারিখ পেরিয়েও নেশা একটাই, বই। ওয়েলিংটনের মোড় থেকে দুই ব্যাগ ভর্তি পুরনো বই কিনে ফেরার সময় ২২ মার্চ বাসের রেষারেষিতে প্রাণ দিলেন মানুষটি।

রবি ও রথী

নিজের ইচ্ছে আকাঙ্ক্ষা সব পাশে সরিয়ে রেখে নিজের জীবনটা প্রায় উৎসর্গ করেছিলেন তাঁর পিতার আদর্শ রূপায়ণে, স্বপ্ন বাস্তবায়িত করায়... রথীন্দ্রনাথ সম্পর্কে এমনটাই লিখেছিলেন এলমহার্স্ট। রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথের পারস্পরিকতা নিয়ে ৮ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠিত হবে ‘রবি ও রথী’। পাঠ ও সৃজনে চৈতালি দাশগুপ্ত ও সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, ভাষ্যে রাতাশ্রী, রবীন্দ্রগানে প্রবুদ্ধ রাহা ও সুছন্দা ঘোষ। প্রাক্‌কথনে ইতিহাসবিদ সব্যসাচী ভট্টাচার্য। অন্য দিকে ৬ এপ্রিল বিড়লা অ্যাকাডেমিতে সন্ধে সাড়ে ৬টায় স্পেনের চিত্রকর গোইয়া-র আধুনিকতার অভিঘাত কী ভাবে আপ্লুত করেছিল তাবড় কবি-ঔপন্যাসিক-চলচ্চিত্রকারকে, তা নিয়ে বলবেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়।

কালাচাঁদ দরবেশ

দরবেশের কথা হচ্ছে জাগরণ আর গানে আছে শাসনবাণী। কালাচাঁদ দরবেশ কলকাতার মঞ্চে তাঁর সুরে মুগ্ধ করেছেন বারবার। হাতে তখন বাদ্যযন্ত্র ‘স্বরাজ’— গুরুদেবের কাছে পাওয়া। এই গানের জগতে অবশ্য কালাচাঁদ এসেছেন পঁয়তাল্লিশ বছর পেরিয়ে। কলেজশিক্ষার শেষে কোচবিহারের এক জুনিয়র হাইস্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন। সে সব দিলেন ছেড়ে। লোকধর্মের অন্য জগতে তখন তাঁর সুরের দাপট। বাংলাদেশের ঢাকা জেলা থেকে এ পার বাংলার জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে বসতি হয়। মরক্কো, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড সফরও করেছেন। কথায় কথায় কলকাতায় এখন আর আসা হয় না। গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে ধূপগুড়ির বাড়িতেই শয্যাশায়ী। আশি-ঊর্ধ্ব শিল্পী ক্ষীণ কণ্ঠে বললেন— ‘আমি তো বাঁচতেই চাইছি।’ ভাবের সুরের মালিক আজ অসহায়। আশা— তিনি সুস্থ হয়ে আবারও আসরে গেয়ে উঠবেন— ‘হারিয়ে গেছেন জসিমউদ্দিন তাঁর নকশি কাঁথা নাই/ লালন সাঁইয়ের একতারাটি কোথায় গিয়ে পাই গো কোথায় গিয়ে পাই!’ কলকাতায় তোলা কালাচাঁদ দরবেশের ছবি: দীপঙ্কর ঘোষ

কংক্রিটের ছায়া

কংক্রিটের জঙ্গলও তো ছায়া দেয়! কিন্তু গাছের মতো সে ছায়াতে কি প্রাণ থাকে— এই ভাবনাতেই নিজেকে মগ্ন রেখেছিলেন শিল্পী শুভব্রত নন্দী। এই নিয়ে তিনি এঁকেছেন তেলরঙের সিরিজ। ওঁর ছবি দেখেই তো রূপম ইসলাম লেখেন ‘ঝকঝকে রোদে কংক্রিট ভিড়/ করে আসে, ছায়া দেয়, বাঁধে নীড়/ অস্থির মন অজান্তে স্থির/ বলে আজ থাক...’। কলম ধরেন শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়, আরও অনেকে। এই শিল্পকর্ম (সঙ্গে তারই একটি) নিয়ে ওয়াইল্ড কংক্রিট: এ ডিভাস্টেটিং রিয়্যালিটি অব আরবানাইজেশন শীর্ষক তাঁর প্রথম একক প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে ৫ এপ্রিল বিকেল ৬টায় অ্যাকাডেমির নর্থ গ্যালারিতে। অন্য দিকে, চারুচেতনা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে সমাজের পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে। এবারেও আয়োজিত হয়েছে এদের কাজ নিয়ে বার্ষিক প্রদর্শনী। একই স্থান এবং দিনে ৫টায় এ বারের ১৭তম এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। দুটি প্রদর্শনী চলবে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত, ৩-৮ টা।

তীর্থের নথি

তীর্থস্থানের পাণ্ডাদের খাতা। ইতিহাসের অমূল্য কিন্তু অবহেলিত ভাণ্ডার। পারিবারিক ইতিহাস, প্রব্রজনের ইতিহাস এমন কত কিছুর সূত্র লুকিয়ে আছে এতে। তীর্থযাত্রীদের নামের তালিকা থেকে ‘সোশ্যাল মবিলিটি’র তত্ত্ব নতুন করে ভাবা প্রয়োজন হতে পারে। আবার এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মেয়েদের প্রসঙ্গও। বিদ্যাসাগর কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক শেখর ভৌমিক এক দশকেরও বেশি বিভিন্ন তীর্থস্থান ঘুরে বিষয়টি নিয়ে চর্চা করছেন, এ বার সেই কথাই শোনাবেন ৬ এপ্রিল চারটেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরেন রায় রিসার্চ ল্যাবরেটরির দ্বিতলে। জে ইউ-এসওয়াইএলএফএফ সংস্থার উদ্যোগে।

স্বীকৃতি

দাদামশাইয়ের দেওয়া নাম সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়, কিন্তু পরিচিতি ‘ভানু’ নামেই। ঢাকা থেকে কলকাতায় আসেন ১৫ অক্টোবর ১৯৪১। পরদিন ইন্টারভিউ দিয়ে কেরানির চাকরি। ১৯৪৬-এ বিয়ে ও সিনেমার শুটিং শুরু, প্রথম ছবি ‘জাগরণ’। পাড়ায় ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকে, ও ‘কালিকা’ মঞ্চে ‘নতুন ইহুদি’ নাটকে প্রথম অপেশাদার শিল্পী হিসেবে অভিনয়। ১৯৫০-এ পেশাদার অভিনেতা হিসেবে ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ নাটকে।
এ ছাড়া বহু নাটকে অভিনয়ে মুগ্ধ করেছেন, ‘জয় মা কালী বোর্ডিং’ ছুঁয়েছে মাইল ফলক। আশিতে আসিও না, ভ্রান্তিবিলাস, সাড়ে চুয়াত্তর, নির্ধারিত শিল্পীর অনুপস্থিতিতে, দাদাঠাকুর, বাঘিনী, এক যে ছিল দেশ— এমন অজস্র ছবিতে তাঁর অভিনয় আজও স্মৃতিতে উজ্জ্বল। সিনেমা, বেতার, যাত্রা, মঞ্চ, রেকর্ড, দূরদর্শন সব মাধ্যমেই অবাধ বিচরণ করলেও যাত্রা-থিয়েটারে অভিনয় করে বেশি আনন্দ পেতেন। তাঁর নামে ‘ভানু পেল লটারি’, ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট’ ছায়াছবি হয়েছে। তাঁকে নিয়ে চৌরঙ্গী পত্রিকা বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করল, চারুচন্দ্র অ্যাভিনিউতে শিল্পীর মূল বাড়ি যেখানে আজ রূপান্তরিত বহুতল, সেই ‘ভানুশ্রী’ র একতলায়। সাক্ষাৎকার, অভিনয়পঞ্জি— সবই আছে সংখ্যাটিতে, সঙ্গে তাঁকে নিয়ে বিশিষ্ট জনের স্মৃতিচারণ। সেখানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন ‘আশ্চর্য লাগে যে এমন অভিনেতাকে নিয়ে আমাদের দেশে কত কম আলোচনা হয়েছে, তাঁর কাজের সম্বন্ধে কতটুকু আগ্রহ বা কতটুকু স্বীকৃতি দেখতে পেয়েছি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন