সত্যজিতের দুর্লভ ছবি
পঁচিশ বছর পার হয়ে গেল... তাঁর শিল্পকর্মে বুঁদ আমরা, কিন্তু তিনি আমাদের মধ্যে নেই। অথচ সত্যজিৎ রায় (১৯২১-’৯২) আশ্চর্য রকম জীবন্ত নিমাই ঘোষের ছবিতে। রামপুরহাটে ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর শ্যুটিং দেখতে গিয়েছিলেন, ১৯৬৮। সেদিন কোনও শ্যুটিং হচ্ছিল না, শুধু একটা শটের রিহার্সাল করাচ্ছিলেন সত্যজিৎ। একটা ঘোরের মধ্যে ক্রমাগত ক্যামেরার শাটার টিপে গিয়েছিলেন, পরে যেদিন দেখালেন সত্যজিৎকে, ‘‘মানিকদা তাঁর সেই ভারী গম্ভীর গলায় বললেন, ‘আপনি তো একেবারে আমার অ্যাঙ্গেল মেরে দিয়েছেন মশাই।’ সেই শুরু। শিল্পের চেয়েও স্রষ্টাই বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল আমার কাছে। আমার ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়েছিল তন্ময় সেই মানুষটির বিভিন্ন ভঙ্গি...।’’ স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন নিমাইবাবু। লিখেছেনও— মানিকদা (বিংশ শতাব্দী)। মানিকদাকে নিয়েই ছবির প্রদর্শনী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল-এ, যাদবপুরের স্কুল অব কালচারাল টেক্সটস অ্যান্ড স্টাডিজের সহযোগে। ৩০ মে সন্ধে ছ’টায় উদ্বোধন করবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চলবে ২৫ জুন অবধি। ‘পঞ্চাশটি ছবি দিয়েছি ওঁদের,’ জানালেন নিমাইবাবু। আজও অ্যানালগ ক্যামেরায় ছবি তোলেন, ডিজিটাল ছোঁন না। তাঁর ছবি তোলাও পঞ্চাশ বছরে পা দিল।
রামমোহন
রাজা রামমোহন রায় চেয়েছিলেন বেদান্ত গ্রন্থ অনুবাদের মাধ্যমে দেশের সমস্ত মানুষ যেন তাঁদের শাস্ত্রের প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারেন। আর সেই সঙ্গে ‘হিন্দুধর্ম মানেই কতকগুলো কুসংস্কারমূলক অনুষ্ঠান’— ইউরোপীয়দের এই বদ্ধমূল ভ্রমও দূর হবে। তিনি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে (মতান্তরে ১৮১৬) বাংলায় বেদান্ত গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায়ও তা অনূদিত হয়। সদ্য এই গ্রন্থত্রয় প্রকাশের দ্বিশতবর্ষ অতিক্রান্ত হল। তাঁর ২৪৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘রামমোহন লাইব্রেরি’তে ২২ মে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এক অনুষ্ঠানে ‘বেদান্তসার গ্রন্থের দ্বিশতবর্ষ’ বিষয়ে বলবেন গৌতম নিয়োগী। রাজা রামমোহন রায়ের ব্রাহ্ম-পৌত্তলিক সম্বাদ (সম্পা: রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য) বইটি প্রকাশিত হবে। এ দিনই সন্ধে ৬টায় রাজা রামমোহন রায় সরণির ‘রাজা রামমোহন রায় স্মারক সংগ্রহশালা’য় ‘হিন্দু পেট্রিয়ার্কি ইন রামমোহন্স টাইম: দুর্গা অ্যান্ড আদার ইস্যুজ’ বিষয়ে বলবেন জহর সরকার।
সম্মাননা
‘দেশ’ পত্রিকায় অল্প ব্যবধানে দুটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় তাঁর। একটি প্রিয়ংবদা দেবীকে নিয়ে, অন্যটির বিষয় ঠাকুর পরিবার ও প্রমথ চৌধুরীর পরিবারের সম্পর্ক। সদ্য স্নাতকোত্তর সেই প্রাবন্ধিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষাতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম, দীর্ঘ অধ্যাপনাজীবনেও সমান সফল। সেই সঙ্গে নিষ্ঠ গবেষণা: চার দশকে প্রকাশিত আঠাশটি গ্রন্থের বিষয় কবিতা গল্প উপন্যাসের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ এবং অবশ্যই অমিয় চক্রবর্তী। সদ্য-সত্তর সুমিতা চক্রবর্তীকে ‘অহর্নিশ সম্মাননা ২০১৭’ তুলে দেবেন ত্রিপুরার বর্ষীয়ান কবি ও অধ্যাপক রামেশ্বর ভট্টাচার্য, ২৩ মে জীবনানন্দ সভাঘরে, বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। ‘অহর্নিশ’ আয়োজিত ‘নরেশ গুহ: স্মৃতি তর্পণ ও স্মারক বক্তৃতা ২০১৭’ অনুষ্ঠানে স্মৃতিতর্পণে স্বাতী ভট্টাচার্য ঐত্রেয়ী সরকার শুভ্রজিৎ পাল। স্মারক বক্তৃতায় ‘উনিশ শতকের বাংলা রঙ্গমঞ্চ: বিস্মৃত মেয়েদের কথা’: শুক্তি সরকার। সঙ্গের ছবি: অর্ক চক্রবর্তী।
কবিতা স্টুডিয়ো
বারো বছর খুব কম সময় নয়। সেও যদি বা কাটে কবিতা নিয়ে, এই ঝটিতি-বিনোদনপ্রিয় সমাজে সে আরও কঠিন কাজ। সেই কাজই করে চলেছেন রাজা। এফ এম যুগ থেকে বাংলা রেডিয়ো চ্যানেলের পরিচিত কণ্ঠস্বর, রাজা আর কবিতা, দুই-ই যেন সমার্থক। বহু অনুষ্ঠান করেছেন কবিতা নিয়ে— কখনও একা, কখনও নানা শিল্পীর সঙ্গে, গান-কবিতার যুগলবন্দিতে। তাঁরই নতুন ভাবনা ‘রাজার কবিতা স্টুডিয়ো’। কবিতার সঙ্গে সুর, আঁকা ছবি, আলোকচিত্র, চলচ্চিত্র সহ নানান শিল্পমাধ্যমের মিলনে অভিনব উপস্থাপনা। পরিবেশনা একক, সঙ্গী অনেক। জয় সরকার, আশু-অভিষেক, শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় সুরসঙ্গতে, হাত বাড়িয়েছেন অন্য বন্ধুরাও। ২৪ মে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় কলামন্দিরে ‘রাজার কবিতা স্টুডিয়ো’-র পরিবেশনা।
হোমিয়ো প্রকাশনা
একসময় হোমিয়োপ্যাথি বাংলায় খুবই জনপ্রিয় ছিল, বাংলাকে বলা হত ‘নার্সারি অব হোমিয়োপ্যাথি’। সেই সময় বাংলা ভাষায় হোমিয়োপ্যাথির বইয়ের অভাব ছিল। বাংলায় বই ছাপা, সঙ্গে এর প্রসারের জন্য প্রফুল্লচন্দ্র ভড় ১৯১৭-র মে মাসে হ্যানিম্যান পাবলিশিং কোম্পানি স্থাপন করে বাংলায় হোমিয়োপ্যাথির পত্রিকা ‘হ্যানিম্যান’ প্রকাশ করেন। পাঁচ বছর পর ন্যায্যমূল্যে উন্নত মানের ওষুধের পরিষেবার জন্য আলাদা ‘ঔষধ বিভাগ’ খোলা হয়। ১৯৫৫-তে নতুন নাম হল ‘হ্যানিম্যান পাবলিশিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড’ অর্থাৎ হ্যাপকো। সম্প্রতি শতবর্ষে পা দিল সংস্থা। মহাজাতি সদনে প্রথাগত উদ্বোধনের পর অঞ্জন দাশগুপ্তের মধ্যস্থতায় প্রথমার্ধে ছিল ‘ইজ হোমিয়োপ্যাথি সায়েন্স?’ তর্ক প্রতিযোগিতা। পরে সুভাষ সিংহের সঞ্চালনায় ‘হোয়াট ইজ হোমিয়োপ্যাথি?’ বিষয়ে আলোচনা।
মনখারাপ
প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রেখে জনমুখী নির্মাণকাজ হতে পারে না?— নিরুপায় আকুতিতে গলা বুজে আসছিল অসমবয়সিনীদের— এরা হেস্টিংস হাউস ক্যাম্পাসের আলিপুর মাল্টিপারপাস স্কুলের সত্তর আশি নব্বই দশকে উত্তীর্ণ ছাত্রী। বড় বড় মাঠ আর নানা ফুলে ভরা বাগানের বিশাল পরিসর তাদের মজ্জাগত। কিন্তু ২০০৯-এ স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে যোগ দিয়েই ওদের চোখে পড়েছিল ক্যাম্পাসে বাইরের লোকের অবাধ আনাগোনা, বহিরাগতদের খেলাধুলো, সান্ধ্যভ্রমণ আর অপরিচ্ছন্নতা। প্রাক্তনীরা তাই বাগান পুনরুজ্জীবনের সংকল্প নিয়ে অনেক চারাও পুঁতেছিল। কিন্তু সে সব চারা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকালেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তবু সান্ত্বনা ছিল ডালপালা মেলা বনস্পতিরা— বিনা যত্নেই যারা টিকে ছিল সবুজ পৃথিবীর সাক্ষ্য বহন করে। ইটকাঠের স্পর্ধিত নির্মাণকে জায়গা করে দিতে এ বার একের পর এক আঘাত আসছে তাদের উপর— ক্রমে মুছে যাচ্ছে হেস্টিংস হাউস প্রাঙ্গণের সবুজ সমারোহ। হারানো সময়ের শিকড়ে প্রোথিত হয়ে তাই আজ মনখারাপ সবুজ স্কুলের মেয়েদের।
ফেভারিট কেবিন
‘‘মির্জাপুর স্ট্রিটে ফেভারিট কেবিনে কল্লোলের দল চা খেত। গোল শ্বেতপাথরের টেবিল, ঘন হয়ে বসত সবাই গোল হয়ে।....নতুনবাবু সুজনসুলভ স্নিগ্ধতায় আপ্যায়ন করত সবাইকে। সে সংবর্ধনা এত উদার ছিল যে চা বহুক্ষণ শেষ হয়ে গেলেও কোনো সংকেতে সে যতিচিহ্ন আঁকত না...’’, কল্লোল যুগ বইয়ে লিখেছেন অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত। তৎকালীন ছাত্র সুভাষচন্দ্র বসু, বিপ্লবী কামাখ্যা চক্রবর্তী এবং চট্টগ্রামের স্বদেশি যুবকরা চায়ের আড্ডায় আসতেন। দূর থেকে তাঁদের উপর পুলিশের কড়া নজর থাকত। আসতেন কাজি নজরুল, রামমনোহর লোহিয়া, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, প্রবোধ সান্যাল, প্রেমেন্দ্র মিত্র, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, শিবরাম চক্রবর্তী, সুরেশ মজুমদার, সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার সহ বহু সাহিত্যিক শিল্পী বিশিষ্ট জন। কৃষ্ণকুমার মিত্রের সঙ্গে অরবিন্দ ঘোষের আড্ডার সাক্ষী এই চা-আগার। এ হেন ‘ফেভারিট কেবিন’ ১৯১৮-য় তৎকালীন ৬৯ মির্জাপুর স্ট্রিটে (বর্তমানে সূর্য সেন স্ট্রিট) চট্টগ্রামের পুঁটিয়া থানার বৈলতলি গ্রামের নতুনচন্দ্র বড়ুয়া প্রতিষ্ঠা করেন। পুঁটিয়া হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে নতুনচন্দ্র জীবিকার সন্ধানে দাদা গৌরচন্দ্র-র সঙ্গে কলকাতায় আসেন। আজও এখানে সকাল থেকে রাত অবধি চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে তর্ক বিতর্কে আড্ডায় মশগুল এ কালের সাহিত্যিক শিল্পী চিকিৎসক সহ প্রবীণরা, তবে আজকাল তর্কবিতর্কে উত্তেজনার পারদ যে তুঙ্গে তা মালুম পাওয়া যায় অতীতের তুলনায় মাসিক কাপ ভাঙার সংখ্যায়, জানালেন প্রবীণ দিলীপচন্দ্র বড়ুয়া।
বাংলা থিয়েটার
থিয়েটারের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে মনন, মেধা, আবেগ এবং ভালবাসা ও ভাললাগা। সেই আবেগের সূত্রেই ২০১৩-য় জন্ম নিয়েছিল ‘বাংলা থিয়েটার কলকাতা’। ২০১৪-য় ওদের প্রথম প্রযোজনা ছিল দ্রৌপদীকে নিয়ে ‘বৃত্তান্তে’ শীর্ষকে একটি মনোলগ। ২০১৫-য় মঞ্চস্থ হল ইউরিপিদেস এবং সোফোক্লেস অবলম্বনে ‘ইলেকট্রা’। এ বারের প্রযোজনা গিরিশ কারনাডের কাহিনি অবলম্বনে ‘বলি’। দেবযানী ও কৌশিক চট্টোপাধ্যায়, রুনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিশেষ চরিত্রে গৌতম হালদার। অভিজিৎ দাশগুপ্তের নির্দেশনা এবং শুভজিৎ গুহ-র সংগীত ও সৌমেন চক্রবর্তীর আলোক সম্পাতে নাটকটিতে সাম্প্রতিক সময়ের মানবিক অভিঘাত ফুটে উঠেছে। ২৫ মে সন্ধে সাড়ে ৬ টায় অ্যাকাডেমিতে প্রথম অভিনয়।
প্রয়াণ
প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি নিয়ে সংকলন করেন বঙ্কিম-অভিধান। প্রমথনাথ বিশীর কাছে পিএইচ ডি-র বিষয়ও ছিল ‘বঙ্কিম উপন্যাসের উপাদান’। শিক্ষক ও হাওড়ার হরিদাস নন্দী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অশোক কুণ্ডুর বড় কাজ ২২ খণ্ডে সাহিত্যিক বর্ষপঞ্জী ও বঙ্গীয় সাহিত্য কোষ প্রকাশ। পাঁচ খণ্ডে প্রকাশ করেছেন প্রমথনাথ বিশীর ছোটগল্প সংগ্রহমালা। বিধানচন্দ্র রায়ের জীবনী রচনা ছাড়াও সম্পাদনা করেছেন বঙ্কিম মৃত্যু শতবার্ষিকী স্মারকগ্রন্থ, সুধীরকুমার দাশগুপ্ত, নীরদচন্দ্র চৌধুরী জন্মশতবার্ষিকী গ্রন্থ। তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। গবেষণাগ্রন্থ রচনার পাশাপাশি তাঁর সাংগঠনিক শক্তি ছিল অসামান্য। হাওড়ার পেঁড়ো গ্রামে ভারতচন্দ্র মেলার অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। ১৯৭০-এ গড়ে তোলেন ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সংস্কৃতি গবেষণা সংস্থা’। কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের বেসমেন্টে বইমেলা এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তনী সংস্থারও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। নিজের গ্রাম হুগলির বোড়হলে গড়ে তোলেন শিশুবিকাশ কেন্দ্র। ৭৫ পেরিয়ে এই অক্লান্তকর্মী মানুষটি ১৮ মে প্রয়াত হলেন কর্কটরোগে। ২৭ মে দুপুর তিনটেয় বাংলা বিভাগের ১০ নং কক্ষে প্রাক্তনীদের আয়োজনে তাঁর স্মরণসভা।
উপকরণ
ভারতীয় নৃতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সূচনা ১৯৪৫-এ, বেনারসে। তিন বছর পরেই সংস্থা চলে আসে কলকাতার ভারতীয় সংগ্রহশালায়, নৃতত্ত্ব বিভাগ হিসাবে। নির্মলকুমার বসু অধিকর্তা থাকাকালীন বর্তমান নামকরণ। মানবজীবনের আদি থেকে আধুনিক কাল পর্যন্ত নানা বিষয়ে প্রবন্ধ মুদ্রণের প্রয়োজনে সংস্থার নিজস্ব বুলেটিন প্রকাশ শুরু হয়। নৃতত্ত্ব সংশ্লিষ্ট নানা বিভাগের গবেষণার ফলাফল, আদিবাসী গোষ্ঠীর বিষয়ে প্রতিবেদন ও দেশের নানা সাংস্কৃতিক ধারার বিবরণ প্রথম থেকেই প্রকাশ পেত। শুরুর বুলেটিন থেকে অনেক পথ পেরিয়ে আজকের জার্নালে পরিবর্তিত পত্রিকাটির ষাট বছরে (১৯৫২-২০১১) প্রকাশিত রচনা ও লেখকদের বর্ণানুক্রমিক তালিকা দুই মলাটে বন্দি করেছেন অভীককুমার দে: ইনডেক্স টু দ্য জার্নাল অব দি অ্যানথ্রপলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (প্রকাশক নৃতত্ত্ব সর্বেক্ষণ)। এই পত্রিকায় মানবজীবনের যে বিচিত্র উপকরণ হাজির করেছেন বিশেষজ্ঞরা তার সূচিপত্র নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ। আছে নৃতত্ত্ব সর্বেক্ষণ ও তার পত্রিকা নিয়ে প্রয়োজনীয় আলোচনা, আছে পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যা থেকে মানচিত্র, রেখাচিত্র ও আলোকচিত্র।
নির্ভয়া
এইটেই প্রকৃষ্ট সময় ব্রেশটের নাটকটা করার।’ বলছিলেন কৌশিক সেন, তাঁর নির্দেশনায় ‘স্বপ্নসন্ধানী’ তাদের পঁচিশ বছর পূর্তিতে নতুন প্রযোজনা মঞ্চস্থ করছে, ‘মাদার কারেজ অ্যান্ড হার চিলড্রেন’ অবলম্বনে ‘নির্ভয়া’ (রূপান্তর: রতনকুমার দাস)। ১৯৩৯-এ ব্রেশট যখন লেখা শেষ করেন নাটকটি, হিটলারের বাহিনী দখল করে নিয়েছে পোল্যান্ড। গত শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই নাটকটি লিখেছিলেন ব্রেশট ইউরোপের বিভীষিকাময় লাগাতার যুদ্ধের বিরুদ্ধে। ‘আসলে যুদ্ধ তো একটা ব্যবসা, উগ্র জাতীয়তাবাদের জিগির তুলে সে যুদ্ধ বাধানো হয়, যাতে দেশের দারিদ্র থেকে আমাদের নজর সরে যায়। ছোট স্বার্থের কারবারিরা ভাবে ফায়দা তুলবে ওই যুদ্ধ থেকে, কিন্তু বাস্তবে তা ঘটে না। এখন আর যুদ্ধ বাধানোর দরকার পড়ে না, তা চলতেই থাকে, ট্রাম্প বা পুতিনের মতো সে পরিস্থিতি সমানে এদেশেও তৈরি হয়ে চলেছে।’ কৌশিকের কথার রেশ ধরে তাঁর দীর্ঘ কালের কর্মসঙ্গী স্ত্রী ও এ-নাটকে নির্ভয়া-র চরিত্রাভিনেত্রী রেশমী জানালেন ‘এমন চরিত্র আগে কখনও করিনি, রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং।’ তাঁর অভিনয়েরও পঁচিশ বছর, দর্শকের স্মৃতিতে আজও উজ্জ্বল তাঁর মুখোমুখি বসিবার, অনাম্নী অঙ্গনা, মাল্যবান, সমুদ্রের মৌন, ময়দানব, ম্যাকবেথ, আন্তিগোনে, দ্রোহকাল... এমন আরও কত নাটক! জ্ঞানমঞ্চে ২৯ মে সন্ধে ৬টায় প্রথম অভিনয় নির্ভয়া-র। উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ। নাট্যোৎসব ১ জুন অবধি। ৩০ মে অভিনীত হবে অশ্বত্থামা, স্রষ্টা মনোজ মিত্র সম্মাননা।