টিকাকরণ কর্মসূচি চলছে ওই হাসপাতালের উদ্যোগে। — নিজস্ব চিত্র।
জরায়ুমুখে ক্যানসার প্রতিরোধ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হল কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল। জরায়ুমুখে ক্যানসারের অন্যতম কারণই এইচপিভি বা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস। তবে এই ভাইরাসকে ঠেকানোর টিকা আছে। সেই টিকা বিনামূল্যে দেওয়ার কাজ করবে। প্রথম ধাপে পাঁচ হাজার জনকে বেছে নিয়ে এই টিকা দেওয়া হবে।
জরায়ুমুখে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ভারতে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ন’জনের মৃত্যু হয়। তবে এই ক্যানসার প্রতিরোধযোগ্য। যদিও অনেক মহিলাই এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন। কলকাতার ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মনে করেন, তাঁদের এই উদ্যোগ মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করবে। টিকা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।
এই অভিযান প্রাথমিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি শুরু হবে রাজস্থানেও। কলকাতার পাশাপাশি জয়পুরেও এই হাসপাতালের একটি শাখা রয়েছে। যৌথ উদ্যোগে তারা এই কর্মসূচি করছে। শুধু টিকাকরণ কর্মসূচির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না এই উদ্যোগ। পাশাপাশি এই সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বিশেষ আলোচনার সভার আয়োজন করবেন। সকলকে এইচপিভি ক্যানসারের ঝুঁকি এবং প্রতিরোধের গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝানো হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, এইচপিভি টিকা নিরাপদ হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধের অন্যতম কার্যকর উপায়। সঠিক বয়সে টিকা নিলে এটি জরায়ু, মলদ্বার, মুখগহ্বরের ক্যানসার থেকেও রক্ষা করতে পারে। এইচপিভিকে প্রতিরোধের জন্য গার্ডাসিল-৯ প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে ২০০৮ সাল থেকে। এ যাবৎকালের তথ্য বলছে, সে টিকা সফলও।
হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট অর্পিত জৈন বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি যে প্রতিরোধই সবচেয়ে শক্তিশালী চিকিৎসা পদ্ধতি। যে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব, তাতে যাতে কেউ আক্রান্ত না-হন সেটাই নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য। বিশেষত, অল্পবয়সি মেয়েদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আগামীতে এক সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’’ এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ওই হাসপাতালেরই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পর্ণমিতা ভট্টাচার্য জানান, এই কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে অল্পবয়সি মেয়েদের এবং তাঁদের পরিবারের মধ্যে সচেতনতা জাগিয়ে তোলা যাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।