জাগুয়ারের গতি জানতে ডেটা রেকর্ড চায় পুলিশ

লালবাজার সূত্রের খবর, তারা তদন্তভার হাতে নিয়েই জাগুয়ারের নির্মাতা সংস্থার কাছে ওই গাড়ির ‘ইভেন্ট ডেটা রেকর্ড’ বা ইডিআর চেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩৫
Share:

ঘাতক জাগুয়ার। ইনসেটে আরসালান পারভেজ। —ফাইল চিত্র।

বিমান দুর্ঘটনা ঘটলে তদন্তে প্রধান হাতিয়ার হয় তার ডেটা রেকর্ডার, ব্ল্যাক বক্স। শুক্রবার রাতে আরসালান পারভেজের জাগুয়ার গাড়ির দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেও তার ‘ইভেন্ট ডেটা রেকর্ড’-এর উপরে অনেকটা নির্ভর করছেন লালবাজারের কর্তারা।

Advertisement

লালবাজার সূত্রের খবর, তারা তদন্তভার হাতে নিয়েই জাগুয়ারের নির্মাতা সংস্থার কাছে ওই গাড়ির ‘ইভেন্ট ডেটা রেকর্ড’ বা ইডিআর চেয়েছে। দুর্ঘটনার সময় গাড়ির গতি কত ছিল, চালক আদৌ সিটবেল্ট বেঁধেছিলেন কি না, দুর্ঘটনার আগে গাড়ি কোনও সতর্কবাতা দিয়েছিল কি না—এই সব প্রশ্নের উত্তর ওই গাড়ির ইডিআর থেকে জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। লালবাজারের এক কর্তা জানান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওই গাড়ির ইডিআরে সব তথ্যই রেকর্ড হয়ে যায়। কিন্তু যাঁরা গাড়ি চালান, একমাত্র তাঁদের কাছেই ইডিআরের তথ্য পাওয়া সম্ভব। আর তা দিতে পারে গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা। তাই ইতিমধ্যেই নির্মাতা সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি সেই তথ্য জানা যাবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।

শেক্সপিয়র সরণিতে আরসালানের জাগুয়ার দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা জেনেছে, ওই যুবকের বিরুদ্ধে আগেও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অনেক অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে যে-জাগুয়ার নিয়ে তিনি বেপরোয়া ভাবে ছুটছিলেন, ২০১৮-র নভেম্বর থেকে গত জুলাই পর্যন্ত সেই গাড়ি এবং তার চালক আরসালানের বিরুদ্ধে ৪৮টি মামলা হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ লাউডন স্ট্রিটের মোড়ে মারাত্মক গতিতে গাড়ি চালিয়ে একটি মার্সিডিজ বেন্‌জ় গাড়িতে ধাক্কা মারেন আরসালান। তার অভিঘাতে মার্সিডিজ ধাক্কা মারে একটি পুলিশ কিয়স্কে। প্রাণ হারান সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা দুই বাংলাদেশি। গুরুতর আহত হন মার্সিডিজের চালক এবং তাঁর স্ত্রী। তদন্তকারীরা জানান, মার্সিডিজ বলেই আরসালানের জাগুয়ারের ধাক্কায় সেই গাড়ির চালক এবং অন্য আরোহী বেঁচে গিয়েছেন। অন্য গাড়ি হলে যাত্রীরা বেঁচে থাকতেন কি না সন্দেহ! সে-রাতের দুর্ঘটনায় আরও প্রাণহানি ঘটতে পারত বলেও আশঙ্কা করছেন তদন্তকারীরা। দুর্ঘটনার পরে অভিযোগ উঠেছিল, আরসালান মত্ত অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু সেটা প্রমাণ করা সম্ভব নয় বলে তদন্তকারীরা জানান। কারণ দুর্ঘটনার পরে আরসালান পালিয়ে যান এবং ফোন করে বাবাকে সব জানান। বাড়ির অন্য গাড়ি অন্য একটি জায়গা থেকে তাঁকে নিয়ে যায়। শনিবার বিকেলের পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দুর্ঘটনার সময় তিনি মত্ত ছিলেন কি না, তখন ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার দিয়ে পরীক্ষা করে সেটা জানা সম্ভব ছিল না। আরসালান যে সে-রাতে জওহরলাল নেহরু রোড এবং মিডলটন স্ট্রিটের সিগন্যালও ভেঙেছিলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তা ধরা পড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন