তীব্র বানে বিপদ ঠেকাতে ঘাটে রেলিংয়ের প্রস্তাব

পুলিশ এবং গঙ্গায় জলযানের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের পর্যবেক্ষণ, সম্প্রতি সাদামাটা বানেরও তীব্রতা বেশি হচ্ছে। তার ফলে প্রায়ই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তার ফলেই এই পরিকল্পনা।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০০:৪৯
Share:

প্রতকী ছবি।

গঙ্গার বানে বিপদ ঠেকাতে এ বার ‘বেড়া’ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে লালবাজার!

Advertisement

পুলিশ এবং গঙ্গায় জলযানের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের পর্যবেক্ষণ, সম্প্রতি সাদামাটা বানেরও তীব্রতা বেশি হচ্ছে। তার ফলে প্রায়ই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তার ফলেই এই পরিকল্পনা।

মাসখানেক আগে নিমতলা শ্মশানে পরিজনকে দাহ করতে এসেছিলেন একটি পরিবারের সদস্যেরা। সৎকারের পরে অস্থি বিসর্জনের জন্য পাশের গঙ্গার ঘাটে নামার পরে আচমকা বান এসে যাওয়ায় তলিয়ে যান দু’জন। পুলিশ জানিয়েছে, সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কলকাতা পুরসভাকে গঙ্গার কয়েকটি ঘাটে লোহার রেলিং বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে লালবাজার।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, নিমতলা শ্মশানের দু’টি ঘাট, নিমতলার বিসর্জন ঘাট, আহিরীটোলা ঘাট, কাশী মিত্র ঘাট, বাগবাজার ঘাট-সহ কয়েকটি জায়গায় ওই লোহার রেলিং বসানোর কথা প্রস্তাবে বলা হয়েছে। কারণ, ওই ঘাটগুলিতেই বেশি স্নানের ভিড় হয়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অনেকে অবশ্য বলছেন, গঙ্গায় বান আসা তো নতুন কিছু নয়। ষাঁড়াষাঁড়ি বান ছাড়া তেমন মারাত্মক জোয়ার আগে এত দেখা যেত না। কিন্তু ইদানীং সেটা চোখে পড়ছে। জোয়ারের জলের এই শক্তিবৃদ্ধির কারণ কী, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

জলযান পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী এবং ভূতত্ত্ববিজ্ঞানীদের কেউ কেউ বলছেন, ড্রেজিংয়ের অভাবে গঙ্গায় পলি জমার ফলেই এমন হয়েছে। মাসখানেক আগে নিমতলা শ্মশানের ওই ঘটনার পরেই রাজ্য সরকারের অবসরপ্রাপ্ত ভূবিজ্ঞানী সোমনাথ ভট্টাচার্য বলেছিলেন, নদীর গর্ভে অতিরিক্ত পলি জমলে জলস্তর বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে জোয়ারের জলস্তর

কিন্তু অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে এবং পাড়ে জোয়ারের জলের ঝাপটাও বেশি হতে পারে। পাড় যদি দুর্বল হয়, তা হলে সেই জোয়ারের দাপটে পাড় ভেঙে যাওয়াও অসম্ভব নয়। কলকাতার গঙ্গাবক্ষে লঞ্চ বা নৌকা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা বলছেন, পলি জমে নদীগর্ভ যে উঁচু হয়েছে, তা নোঙর করার সময়ে টের পান তাঁরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, যেখানে নদীর বাঁক রয়েছে, সেখানে এই বানের দাপট বেশি।

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের মতে, গঙ্গার বিভিন্ন জায়গায় চর গজিয়ে উঠছে। তার ফলে নৌ-চলাচল যেমন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, তেমনই স্রোতও বাধা পাচ্ছে। নদী যেখানে তুলনামূলক সরু সেখানে স্রোতের জোর আরও বেশি।

তবে অনেকে বলছেন, গঙ্গার তীরে নির্মাণ নিয়ে এর আগে মামলা হয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালতে। কিন্তু সুভাষবাবু জানান, রেলিং বসানোর ক্ষেত্রে আদালতের কোনও বিধিনিষেধ নেই।

পুলিশ জানিয়েছে, নিমতলার ওই ঘটনার পরে পুলিশের তরফে গঙ্গায় জোয়ার কিংবা বান আসার আগেই ঘাটে থাকা মানুষকে সর্তক করার জন্য সাইরেন বাজানোর ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সাইরেনের শব্দে মানুষ সব সময় সতর্ক না-ও হতে পারেন। কেউ কেউ ‘সাহসী’ হয়ে নদীর কাছে চলে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রেও বিপদের আশঙ্কা থাকে। তাই রেলিং বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন