প্রতীকী ছবি।
পথচারী এবং ট্র্যাফিক সিগন্যালের তাল মেলাতে রাস্তায় নামল লালবাজার।
পুলিশের দাবি, গাড়ি চালকদের পাশাপাশি বেপরোয়া পথচারীরাও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। পথচারীরা নিয়ম মেনে রাস্তা পেরোচ্ছেন কি না, দেখার জন্য লালবাজার বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছে ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে। এর পাশাপাশি ট্র্যাফিক সিগন্যালের সময় ঠিক আছে কি না, দেখতে বলা হয়েছে তা-ও। পুলিশ সূত্রের খবর, সেই নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ড নিজেদের এলাকার গুরত্বপূর্ণ ট্র্যাফিক সিগন্যালগুলিতে পারাপারের সময় খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে। যাতে পথচারীরা রাস্তা পার হতে যথেষ্ট সময় পান।
লালবাজার জানিয়েছে, পথচারীদের সুবিধার পাশাপাশি যাতে গাড়ি চলাচল মসৃণ থাকে, তার জন্য ট্র্যাফিক বিভাগের প্ল্যানিং এবং সার্ভে শাখা ট্র্যাফিক গার্ডের সঙ্গে বিভিন্ন সিগন্যালের সময় পর্যালোচনা করছে। ইতিমধ্যেই অফিস পাড়া-সহ দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন সিগন্যালের সময় পর্যবেক্ষণ করে রাস্তা পারাপারের সময় বাড়ানো হয়েছে। গত সপ্তাহেই কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের রিভিউ বৈঠকে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বেপরোয়া পথচারীদের বাগে আনার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা না করে ‘বোঝাতে’ বলেছেন অফিসারদের। তাঁর পরামর্শ ছিল, মোবাইল কানে কেউ রাস্তা পার হলে তাঁর মোবাইলটি সাময়িক ভাবে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। কমিশনারের ওই নির্দেশের পরে পথচারীদের রাস্তা পার হতে অসুবিধে হচ্ছে কি না, হলে সমাধানের উপায় কী, তা খতিয়ে দেখার কথা বলেন লালবাজারের কর্তারা। পথচারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন মোড়ে বসানো হয়েছে ড্রপ গেটও।
লালবাজারের একাংশ জানিয়েছে, পথচারী, যানবাহনের চাপ এবং সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ট্র্যাফিক সিগন্যাল খোলা-বন্ধের সময় নির্ধারণ করা হয়। বছর দুয়েক আগে থেকেই শহরের ট্র্যাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাকে এক সুতোয় বাঁধার জন্য স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। এই ব্যবস্থায় প্রতিটি রাস্তার মোড়ে থাকা সিগন্যালগুলির মধ্যে সমন্বয় করা হয়। কিন্তু পুলিশের একাংশের অভিযোগ, কোনও কারণে রাস্তায় পথচারীদের ভিড় বেশি থাকলেও স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালের সময় বদলাতে পারত না ট্র্যাফিক পুলিশ। অনেক সময়েই পথচারীরা ধৈর্য হারিয়ে চলন্ত গাড়ির মধ্যে দিয়েই রাস্তা পেরোতেন। নতুন ব্যবস্থায় পারাপারের জন্য বেশি সময় দিলে দুর্ঘটনার সম্ভবনা কমবে বলে দাবি পুলিশের।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছর কলকাতা পুলিশের এলাকায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩২৯ জনের। এর মধ্যে ১৫০ জনই পথচারী। এত পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন লালবাজারের কর্তারা। তাই পথচারীদের সর্তক করার পাশাপাশি তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।