প্রতীকী ছবি।
যেন ডেঙ্গিবাহী মশার কারখানা!
ক্যাম্পাসের ভিতরে ডাঁই হয়ে রয়েছে জঞ্জাল, যত্রতত্র জমা জল। খোদ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরিস্থিতি দেখে এমনই আশঙ্কা কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ, জীববিজ্ঞান বিভাগ, বায়োটেকনোলজি, এ এবং এইচ ব্লকের শিক্ষক আবাস, নতুন ছাত্রাবাস, পার্কিং— যে দিকে নজর যায়, চারদিকে শুধুই জঞ্জাল।
মঙ্গলবার মশা দমনের অভিযানে গিয়ে বিস্মিত কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। বলেই ফেললেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয়ে আন্দোলন হয় এখানে। অথচ চত্বরে জমা জঞ্জাল নিয়ে কেন কেউ সচেতন নন, বুঝতে পারছি না।’’ জঞ্জাল জমে থাকার কথা স্বীকার করে নিয়ে সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসের বেশ কয়েক জন বাসিন্দা ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ বার পুরসভার পরামর্শ মেনে জঞ্জাল অপসারণ হবে।’’
দিন কয়েক আগে ওই ক্যাম্পাসে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে অস্থিরতা শুরু হয়। মশা দমন করতে খবর দেওয়া হয় পুরসভায়। এর পরে এ দিন দুপুরে মেয়র পারিষদের নেতৃত্বে র্যাপিড অ্যাকশন বাহিনী ক্যাম্পাসে অভিযানে যায়। পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস জানান, ক্যাম্পাসের অনেক জায়গায় ফেলে রাখা পাত্রে ডেঙ্গিবাহী এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা মিলেছে।
অতীনবাবু জানান, যে হারে ওখানে বাতিল পাত্রে জল জমে ছিল তাতে এডিস মশার প্রকোপ আরও বাড়তেই পারত। ২ জুলাই থেকে ২০ অগস্টের মধ্যে ১৬ বার ওই জায়গায় মশার লার্ভা নিধন করেছেন পুরকর্মীরা। তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে জঞ্জাল সাফাই করতে হবে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর এখনও পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৩১। এক পুর আধিকারিক জানান, গত বছরের শুরুতেও যাদবপুরের পরিস্থিতি ভাল ছিল না। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ বারবার সতর্ক করায় অনেকটা কাজ হয়েছিল। এ বার পরিস্থিতি তুলনায় ভাল হলেও ডেঙ্গিবাহী মশা নিকেশ করতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই ক্যাম্পাস থেকে ১২ জনেরও বেশি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন।
সহ-উপাচার্য বলেন, ‘‘রাসায়নিক বর্জ্য সরানোর কাজ যাঁরা করেন, তাঁরা সময়ে না আসায় এই অবস্থা। সঙ্গে জুড়েছে অন্য জঞ্জালও।’’ তিনি জানান, টাকা দিয়ে ওই জঞ্জাল সরাতে পুরসভাকে অনুরোধ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও এ দিকে নজর দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। পরিস্থিতি দেখতে ১৫ দিন পরে ফের যাবে পুরসভার বিশেষ বাহিনী।