‘কাজ করেনি, কথা কীসের’

‘‘যাঁরা ৩৪ বছরেও হাওড়ায় কিছু করতে পারেনি, তাঁদের আবার বলার কী আছে?’’ সোমবার হাওড়া পুরসভার বাজেট পর্যালোচনার প্রথম দিনে এই মন্তব্য মেয়র রথীন চক্রবর্তীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৪
Share:

বেধড়ক: সিপিএম কাউন্সিলর আসরাফ জাভেদের উপর চড়াও তৃণমূল কাউন্সিলর দেওকিশোর পাঠক। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

‘‘যাঁরা ৩৪ বছরেও হাওড়ায় কিছু করতে পারেনি, তাঁদের আবার বলার কী আছে?’’

Advertisement

সোমবার হাওড়া পুরসভার বাজেট পর্যালোচনার প্রথম দিনে এই মন্তব্য মেয়র রথীন চক্রবর্তীর। কার্যত এমনই যুক্তির উপরে দাঁড়িয়ে পুর অধিবেশনে তুলকালাম চালানোর অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূল কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে। বাজেট নিয়ে নিজের বক্তব্য রাখতে গেলে বিরোধী সিপিএম কাউন্সিলরকে শুধু বলতে বাধা দেওয়াই নয়, তাঁর মুখ চেপে ধরে ধাক্কা মারতে মারতে অধিবেশন কক্ষের বাইরে বার করে দেওয়ারও অভিযোগ উঠল।

দলের কাউন্সিলরদের এই আচরণ মেনে নেননি হাওড়ায় দলের পর্যবেক্ষক পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘এমন যদি ঘটে থাকে, তা ঠিক হয়নি। কারওরই গণতান্ত্রিক অধিকার এ ভাবে কেড়ে নেওয়া ঠিক নয়। আমরা বিধানসভাতেও বিরোধীদের বলতে দিই। বিরোধীদের বক্তব্য কেন শুনব না?’’

Advertisement

গত বছরও পুর বাজেট নিয়ে ভাষণ দিতে গেলে বিরোধী সিপিএম ও বিজেপি-র কাউন্সিলরদের ধাক্কাধাক্কি করে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যদিও হাওড়া পুরসভায় ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪টি বাদে সবই তৃণমূলের দখলে। এ দিনের সভায় পুরসভার অধিকাংশ তৃণমূল কাউন্সিলর উপস্থিত থাকলেও বিরোধীদের মধ্যে ছিলেন মাত্র দু’জন সিপিএম।

সভায় সিপিএম কাউন্সিলর আসরাফ জাভেদ বাজেট বিতর্কে অংশ নিতে উঠলেই হইচই শুরু হয়। তার মধ্যেই আসরাফ অভিযোগ করেন, বাজেটে ম্যালেরিয়ায় রক্ত পরীক্ষা নিয়ে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে তা ২০১৫-১৬ বাজেটে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে হুবহু এক।

তখনই তাঁর দিকে তেড়ে আসেন কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলর। এই ধাক্কাধাক্কির জেরে মঞ্চের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন আসরাফ। পরিস্থিতি সামাল দিতে চেয়ারম্যানের নির্দেশে ওই সিপিএম কাউন্সিলরকে তুলে চেয়ারে বসানো হয়। জল খেতে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় ফের সভা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তৃণমূল কাউন্সিলর রিয়াজ আহমেদ ভাষণ দিতে উঠলে। রিয়াজ অভিযোগ করেন, সিপিএম সভায় নোংরা নাটক করছে। এই কথার তীব্র প্রতিবাদ করে ওঠেন সিপিএমের দুই কাউন্সিলর। তখন তৃণমূলের কয়েক জন ঘিরে ধরেন সিপিএম কাউন্সিলরদের। আসরাফ চিৎকার করতে করতে মেয়রের বাজেট ভাষণ ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এই দেখে তৃণমূল কাউন্সিলরেরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। আসরাফ কিছু বলতে চাইলে মুখ চেপে ধরেন তৃণমূল কাউন্সিলর দেওকিশোর পাঠক। এর পরে প্রায় ধাক্কা মারতে মারতে আসরাফকে অধিবেশন কক্ষ থেকে বার করে দেওয়া হয়। পরে আসরাফ বলেন, ‘‘তৃণমূল বলার গণতান্ত্রিক অধিকারকেও কেড়ে নিতে চাইছে। প্রতিবাদ করলে আমারই যদি এই হাল হয়, সাধারণ মানুষের কী হাল হবে বুঝতে পারছেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন