সূর্যঘড়ি দেখছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। লাটবাগানে। নিজস্ব চিত্র
সাজবে লাটবাগান। তাই সরবে চাঁদমারির মাঠ। যে মাঠে পুলিশকর্মীরা গুলি ছোড়ার অভ্যাস করেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের ‘উৎসধারা’ প্রকল্পে ১৩০ কোটি টাকা খরচ করে লাটবাগান সৌন্দর্যায়নের কাজে সিলমোহর দিয়েছে সচিবদের নিয়ে গঠিত কমিটি। কিছু দিনের মধ্যেই দরপত্র চেয়ে ব্যারাকপুরের ওই এলাকার গঙ্গার পাড় সাজানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় দেড় বছর আগে ব্যারাকপুরে প্রশাসনিক সভা করতে গিয়ে কলকাতার মতোই সাজানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, কলকাতার মিলেনিয়াম পার্ক এবং নিউ টাউনের ইকো পার্কের সংমিশ্রণে একই সঙ্গে সৌন্দর্যায়ন ও থিম পার্ক বানানো হোক লাটবাগানে। তার পরেই সচিবদের নিয়ে বিশেষ কমিটি তৈরি হয়। পর্যটন, পূর্ত, সেচ, পরিবহণ সচিবেরা গত ১১ জানুয়ারি সেই প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত করেছেন।
তাতে বলা হয়েছে, ব্যারাকপুরের রাসমণি ঘাট থেকে মঙ্গল পাণ্ডে উদ্যান পর্যন্ত ১.৮ কিলোমিটার গঙ্গাপাড় সাজানো হবে। তার মধ্যে চারটি গঙ্গার ঘাট রয়েছে। পরিবহণ দফতর সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করবে। লাটবাগানের গঙ্গাতীরে আড়াই মিটার চওড়া রাস্তা তৈরি হবে। তাতে অবশ্য গাড়ি চালাতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি তৈরি হবে ৪ মিটার চওড়া পথচারীদের যাতায়াতের রাস্তা। কারণ, সকাল-বিকেল হাঁটার জন্য এই পার্ককে যাতে আকর্ষণীয় করা যায়, তেমনই চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সচিবদের কমিটি ঠিক করেছে, প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ পার্কটি তিনটি থিমে ভাগ করা হবে। রাজ যুগ, স্বরাজ যুগ এবং গাঁধী যুগ। প্রতিটি থিম ধরে ধরে টাওয়ার, অ্যাম্ফিথিয়েটার, লাইট অ্যান্ড সাউন্ড, চিত্র গ্যালারি, ফুড পার্ক, পিকনিক করার জায়গা, মূর্তি বসানো হবে। মূল কাজটি পূর্ত দফতরই করবে বলে ঠিক হয়েছে।
তবে অন্য দফতরগুলিকেও সক্রিয় হয়ে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছে সচিবদের কমিটি। যেমন, পুলিশকর্মীদের গুলি ছোড়ার মাঠ এ জন্য বদলাতে হবে। রাজভবন, পূর্ত ও সেচ দফতরকে খাস জমি ছেড়ে দিতে হবে। ২ কিমি গঙ্গার পাড়ে যাতে ভাঙন না দেখা দেয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে সেচ দফতরকে। এ ছাড়া বেশ কিছু গাছও কাটতে হবে ওই এলাকায়। বন দফতরের কাজ হবে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলি সামলানো।
সচিব-কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘এমনিতেই দেরি হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পরের বার ব্যারাকপুর সফরের আগেই যাতে এই পার্ক তৈরি করে ফেলা যায়, সেই চেষ্টা চলছে।’’