প্রোমোটারের হাত থেকে বাঁচান, চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে

রিজওয়ানের অভিযোগ, ১২ নম্বর পাটোয়ারবাগানে তাঁর বাড়ির একেবারে গা ঘেঁষে ফ্ল্যাট তৈরি করা হচ্ছে। নিয়মমাফিক কোনও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তার উপরে ফ্ল্যাট যে ভাবে তৈরি করা হচ্ছে তাতে বিপদের আশঙ্কাও থাকছে। তিনি এ নিয়ে গত বছরের অক্টোবরে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তার পরে সাময়িক ভাবে স্বস্তি মিললেও ক’দিন আগে ফের নির্মাণ শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ০২:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

বেআইনি নির্মাণ কিংবা প্রোমোটিং চক্রের দাদাগিরির বিরুদ্ধে প্রশাসনকে বারবারই কড়া হতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সেই দাদাগিরির শিকার হয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ কলকাতার এক নাগরিক। প্রশাসন সূত্রের খবর, আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকার পাটোয়ারবাগানের বাসিন্দা মহম্মদ রিজওয়ান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ই-মেল পাঠিয়ে গোটা ঘটনা জানিয়েছেন। কী ভাবে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তা-ও জানিয়েছেন। ই-মেলের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের কাছেও।

Advertisement

রিজওয়ানের অভিযোগ, ১২ নম্বর পাটোয়ারবাগানে তাঁর বাড়ির একেবারে গা ঘেঁষে ফ্ল্যাট তৈরি করা হচ্ছে। নিয়মমাফিক কোনও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তার উপরে ফ্ল্যাট যে ভাবে তৈরি করা হচ্ছে তাতে বিপদের আশঙ্কাও থাকছে। তিনি এ নিয়ে গত বছরের অক্টোবরে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তার পরে সাময়িক ভাবে স্বস্তি মিললেও ক’দিন আগে ফের নির্মাণ শুরু হয়েছে। অভিযোগ, রিজওয়ান আপত্তি জানালে ওই নির্মাণের সঙ্গে জড়িত লোকেরা তাঁকে গুলি করে খুনের হুমকি দেয়। বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে পুলিশে জানিয়ে কোনও কাজ না হওয়ায় তিনি সরাসরি নবান্নের দ্বারস্থ হয়েছেন।

রিজওয়ান বলছেন, ‘‘আমার বাড়িতে শিশুপুত্র, স্ত্রী ও বৃদ্ধা মা রয়েছেন। বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এই পরিস্থিতিতে এমন হুমকির ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: একটানা বৃষ্টিতে যানজট, ভোগান্তি

পুলিশ ও পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতার বিভিন্ন ঘিঞ্জি এলাকায় প্রচুর ফ্ল্যাটবাড়ি তৈরি হচ্ছে। তার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিয়মের তোয়াক্কা করা হয় না। রাজাবাজার, নারকেলডাঙা এলাকায় এমন বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। গত বছর নারকেলডাঙার একটি বা়ড়ির পাঁচিল পাশের বাড়ির ছাদে ভেঙে পড়ে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। সেই তদন্তে জানা গিয়েছিল, একটি দোতলা বাড়িকে বেআইনি ভাবে তিনতলা বানানো হয়েছিল। সেই অতিরিক্ত ভার সইতে না পেরেই পাঁচিল ভেঙে পড়েছিল। তিলজলাতেও এমন অবৈধ নির্মাণ ভেঙে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। বহু ক্ষেত্রে এমন নির্মাণের পিছনে পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের মদত থাকে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এমন বেআইনি নির্মাণের উপরে রাশ না টানলে এমন বিপদ আরও ঘটতে পারে বলেও মনে করছেন পুলিশ ও পুরসভার একাংশ।

তবে এক নাগরিকের এমন অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। যদিও সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বহু সময়েই এ ধরনের বেআইনি নির্মাণের অভিযোগের পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য থাকে।’’ কাউকে খুনের হুমকি দেওয়া হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানাচ্ছে লালবাজারের একটি সূত্র। তাদের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘কোনও নাগরিক অভিযোগ জানালে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কোনও বেআইনি কাজকে প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্ন নেই।’’ যদিও পুলিশের একটি সূত্রের পাল্টা দাবি, অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত পক্ষের নিজেদের মধ্যে গোলমালের ফলেই এমন অভিযোগ উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন