এ পারে স্কুল, ও পারে বার

স্কুলের থেকে দু’শো মিটার দূরত্বও নয়। রমরমিয়ে চলছে মদের দোকান ও পানশালা। যখন স্কুল চলে তখনও মদেরও বিক্রি চলতে থাকে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার বিষয়টির সাক্ষী হলেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত স্বয়ং।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০২:১৪
Share:

হাসিমুখে: মাসাধিক কাল বন্ধ থাকার পরে ফের স্কুলে ফিরল পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার, রাজারহাটে। ছবি: সুমন বল্লভ

স্কুলের থেকে দু’শো মিটার দূরত্বও নয়। রমরমিয়ে চলছে মদের দোকান ও পানশালা। যখন স্কুল চলে তখনও মদেরও বিক্রি চলতে থাকে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার বিষয়টির সাক্ষী হলেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত স্বয়ং। তিনি গিয়েছিলেন রাজারহাটের দশদ্রোণের লীলাদেবী মেমোরিয়াল স্কুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ফিতে কাটতে। যে স্কুলটিকে প্রোমোটারের ‘গ্রাস’ থেকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে।

Advertisement

স্কুলটি যেখানে সেটির দখল নিতে চেয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে সেটি ভেঙে দেন মিজানুর রহমান মানে স্থানীয় এক প্রোমোটার। তিনি গ্রেফতারও হন। ওই প্রোমোটারের বক্তব্য ছিল, স্কুল চত্বরটি যেখানে সেই জায়গাটি তিনি কিনেছেন। পরিবর্তে তিনি স্কুলকে বিকল্প জমিও দিয়েছেন। কিন্তু এ ভাবে স্কুল ভেঙে ফেলা ভাল ভাবে নেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে রাজ্য সরকার স্কুলটি পুনরায় নির্মাণ করে দিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সেটি ফের চালু হয়েছে। সেই শুরুর দিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওই মদের দোকান ও পানশালাটির কথা জানতে পারেন বিধাননগরের মেয়র।

স্কুল থেকে বেরোনোর সময় গাড়িতে উঠতে গিয়েও আচমকা তিনি সরাসরি স্কুলের প্রায় উল্টোদিকের ওই পানশালায় হানা দেন। পানশালা কর্মীদের কাছে জানতে চান মালিকের নাম। স্কুলের ২০০ মিটারের মধ্যে কী করে পানশালা চলছে- এ হেন নানান প্রশ্ন। কিন্তু পানশালা কর্মীরা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তাঁরা জানান, পানশালার মালিক কলকাতার বাইরে।

Advertisement

এর পরেই সকলের সামনে দাঁড়িয়ে সব্যসাচীবাবু পানশালা কর্মীদের বলেন, ‘‘হাত জোড় করে বলছি স্কুল চলার সময় মদ বিক্রি বন্ধ রাখুন।’’ পরে অবশ্য মেয়র বলেন, ‘‘ওই পানশালাটি পুর নিগম তৈরির আগে থেকেই চলছে। লাইসেন্স কিংবা অন্যান্য নথিপত্র ওদের নেই। ওদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এ দিকে, যে স্কুলটিকে ঘিরে এত কিছু সেটির ভিতরেও রয়ে গিয়েছে নানা সমস্যা। দোতলার স্কুলটিতে ওঠানামার জন্য একটি মাত্র সঙ্কীর্ণ সিঁড়ি। স্কুলের ভিতরে প্লাইউডের ব্যবধান তৈরি করে চলছে ক্লাস। নেই অগ্নি নির্বাপণ কোনও ব্যবস্থা। স্কুলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে পড়ুয়াদের সুরক্ষার কী ব্যবস্থা রয়েছে তা নিয়েও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের তরফে গৌতম ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘‘সরকার যদি অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আর জরুরি অবস্থায় ব্যবহারের রাস্তা তৈরি করে দেয় তা হলে উপকার হবে।’’ তাঁরা প্রোমোটারের কাছ থেকে যে বিকল্প জমি পেয়েছিলেন সেটির কী করবেন, এই প্রশ্নের জবাবে গৌতমবাবু জানান, রাজ্য সরকার বললে তাঁরা ওই জমি ফেরত দিয়ে দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন