ফাইল চিত্র।
খিদিরপুরের চার নম্বর মোহনচাঁদ রোড। একশো বছরের বেশি পুরনো বাড়ি। পুরসভার তরফে বছর চারেক আগেই ‘বিপজ্জনক’ নোটিস টাঙানো হয়েছে। বাড়ির একাংশ বছর দুয়েক আগে ভেঙেও পড়েছে। তা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে ওই বিপজ্জনক বাড়িতে বসবাস চলছেই।
চারতলা বাড়িটিতে ২৪টি ঘর রয়েছে। বেশির ভাগই বন্ধ। অতীতে প্রায় বারো জন ভাড়াটে থাকতেন। এখন আছেন চার জন। টানা বৃষ্টিতে দেওয়ালে শ্যাওলা, কোথাও বা বট-অশ্বত্থ মাথা তুলেছে। ভরদুপুরেও আলো ঢোকে না। অন্ধকারে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হোঁচট খেতে হয়। দোতলার একাংশ ভেঙে পড়েছে। পেশায় অবসারপ্রাপ্ত শিক্ষক সুশীলেন্দু ভট্টাচার্য স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে সেখানেই ৬০ বছর ধরে বাস করছেন। তাঁর ঘরের একাংশ ভেঙে পড়েছে। বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে থাকা বারান্দা লাগোয়া ঘরটি। তিনি বলেন, ‘‘থাকার অন্য জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়েই বিপদ মাথায় নিয়ে রয়েছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সম্প্রতি বাড়িটির মালিকানার হাত বদল হয়েছে। বর্তমান মালিক বাড়ি ছেড়ে যেতে বললেও বিকল্প ব্যবস্থার আশ্বাস দিচ্ছেন না।’’ বাড়িটির বর্তমান মালিক মুস্তাক আলম ছাড়াও আরও পাঁচ জন শরিক রয়েছেন। মুস্তাক আলম জানান, বাড়িটি ২০১৩ সালে ভবতোষ মল্লিকদের থেকে কেনেন তাঁরা। মুস্তাক আলমের কথায়, ‘‘অনেক ভাড়াটে অন্যত্র সরে গিয়েছেন। কিন্তু বেশ কয়েক জন রয়ে গিয়েছেন। বাড়িটির জীর্ণ দশার জন্য ভাড়াটেদের বারবার সরতে বলছি। তা সত্ত্বেও কেউ কর্ণপাত করছেন না।’’
যদিও বাড়ির মালিকের এই মন্তব্যকে আমল দিতে নারাজ ভাড়াটে সুশীলেন্দুবাবু। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাড়ি সংস্কার নিয়ে কোনও বিরোধ নেই। কিন্তু এখান থেকে গিয়ে কোথায় থাকব? পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।’’ মুস্তাক আলমের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ওঁদের মনে রাখতে হবে, এখানে ভাড়াটে হিসাবে রয়েছেন। যা খুশি বায়না করলেই মানা যায় না।’’