চুরির পরে। সোমবার, সেই ফ্ল্যাটে। ছবি: নিজস্ব চিত্র
আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রাতে ফিরে দেখা গেল, ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ! অথচ ফ্ল্যাট বাইরে থেকে বন্ধ করে সবাই মিলে বেরিয়েছিলেন, ফিরেছেনও এক সঙ্গে। তা হলে কে ঢুকে রয়েছে ফ্ল্যাটে? ১০০ ডায়ালে ফোন গেল সাহায্য চেয়ে। তখন পৌনে ১১টা। কিন্তু থানার পুলিশ যখন পৌঁছল, তখন বাজে প্রায় পৌনে ১২টা। অথচ ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় প্রগতি ময়দান থানার দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। বিপন্ন মানুষ যখন সাহায্য চেয়ে পুলিশকে ফোন করছেন, তার পরেও উর্দিধারীদের এই ধরনের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রবিবার রাতে ই এম বাইপাসের মেট্রোপলিটন এলাকা সংলগ্ন মাঠপুকুর তল্লাটে একটি বহুতল আবাসনের একতলার ফ্ল্যাটে চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। ডিসি (এসইডি) গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘এটা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
পুলিশ জানায়, ওই ফ্ল্যাট থেকে সোনা-রুপোর গয়না, শাড়ি এবং নগদ মিলিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার জিনিস চুরি হয়েছে। পুলিশ যখন সেখানে পৌঁছয়, তার আধ ঘণ্টা আগে আশপাশের কয়েক জন পরিচিতের সাহায্যে দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়েছেন বাসিন্দারা। ফ্ল্যাটের মালিক তাপস মুখোপাধ্যায় একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মচারী। তাপসবাবুর কন্যা পল্লবী পুলিশের সাহায্য চেয়ে ফোন করেন ১০০ ডায়ালে।
লালবাজার সূত্রের খবর, ১০০ ডায়ালে ফোনটি পৌঁছয় রাত ১০টা ৪৭ মিনিটে। মিনিট দেড়েকের মধ্যে প্রগতি ময়দান থানায় বিষয়টি জানানো হয়। পল্লবী বলছেন, ‘‘পুলিশ পৌঁছয় রাত ১১টা ৪০-এ। তার আধ ঘণ্টা আগে আমরা দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকে গিয়েছি।’’ যদিও পৌনে ১১টা থেকে ১১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত তাঁরা নিজেদের ফ্ল্যাটের সামনে ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন। পাছে ভিতর থেকে কেউ আক্রমণ করে, সেই ভয়ে
ওই মহিলার কথায়, ‘‘বহুক্ষণ ফ্ল্যাটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার পরেও পুলিশ আসছেন না দেখে আমি থানায় ফোন করে জানতে চাইলাম, আমরা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতে পারি কি না। তখন আমাদের বলা হয়, আশপাশের লোকজনকে ডেকে নিয়ে ঢোকা যেতে পারে।’’
দেরিতে পৌঁছনোর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে প্রগতি ময়দান থানার পক্ষে অবশ্য কিছু বলা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ফ্ল্যাটের পিছন দিকের গ্রিল ভেঙে দুষ্কৃতীরা ঢুকেছিল।