প্রতীকী ছবি।
দু’টি স্কুল আছে। কাছেই রয়েছে দু’টি মন্দিরও। উত্তর দমদম পুরসভার লাগোয়া জনবহুল ওই এলাকায় রাতারাতি একটি মদের দোকান চালু হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়েরা। তাঁদের মতে, যে বাড়িতে মদের দোকান চালু হয়েছে, সেটি একটি আবাসন।
সেই বাড়িতে পুরসভার একটি অফিসও রয়েছে। পাশে আরও একটি আবাসন রয়েছে।
কী করে তাদের অফিসের গায়ে একটি মদের দোকান চালু হল, তা নিয়ে অন্ধকারে রয়েছে উত্তর দমদম পুরসভাও। পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই মদের দোকানমালিক আমাদের থেকে কোনও ট্রেড লাইসেন্স নেননি। রাজ্য আবগারি দফতরের অনুমোদন নিয়ে ওটা চালু হয়েছে।’’ তিনি জানান, এ ক্ষেত্রে আইন কী বলছে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়েরা যেমন এলাকায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তেমনই জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক, ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক ও ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শক্তি মৈত্র।
ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক আবুল কালাম আজাদ ইসলাম বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ হাতে এলে আবগারি দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্টের কাছে জানতে চাইব, কীসের ভিত্তিতে ওই মদের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হল?’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন সাতেক আগে এক রাতে আচমকা ওই মদের দোকানটি চালু করে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে এলাকার বাসিন্দারা বিষয়টি জানতে পারেন। এর পরেই ধীরে ধীরে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করে এলাকায়।
ক্রমে বাসিন্দারা একজোট হয়ে রবিবার ওই এলাকায় বিক্ষোভ দেখান। সোমবার প্রশাসনিক মহলে অভিযোগ জানানো হয়।
শক্তিবাবুর প্রশ্ন, ‘‘পুরসভার লাগোয়া আবাসনের নীচে কোন যুক্তিতে মদের দোকান খোলার লাইসেন্স দেওয়া হল? ওই বাড়িতে পুরসভার একটি অফিসও তো রয়েছে। সেখানে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে জড়িত মানুষেরা প্রতিদিন আসেন। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশ আবার মহিলা। ফলে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’’
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘‘স্কুলের কাছে মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়া হয় না বলেই জানতাম। এখানে দেখছি উল্টোটা ঘটল।’’ ওই মদের দোকানের কাছেই রয়েছে বিরাটি বিদ্যালয় এবং বিরাটি হাইস্কুল। ফলে অভিভাবকেরাও বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কিত। এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা বললেন, ‘‘মদের দোকান শুরু হতেই এলাকায় অচেনা লোকের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। আমাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে অনেক সময়ই রাতে বাড়ি ফেরে। এ বার তো ওদের জন্য চিন্তা আরও বাড়ল। কারণ, ওই দোকানের জন্য এলাকার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলে আমরা ভয় পাচ্ছি।’’