বন্ধ বাড়িতে মশা নিধন, তালা ভাঙলেন পুরকর্তা

পুরসভা সূত্রের খবর, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত প্রাইভেট রোডের একটি বাড়ি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জমা পড়ছিল। ডেঙ্গি-নিয়ন্ত্রণ দলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের বক্তব্য ছিল, ওই বাড়িতে বেশ কিছু খোলা জলাধার রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩৮
Share:

পদক্ষেপ: ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দক্ষিণ দমদম পুরসভার একটি বাড়ির তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকলেন চেয়ারম্যান পারিষদ, কাউন্সিলর ও পুরকর্মীরা।

আবেদনে কাজ হয়নি। কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েও সাড়া মেলেনি। অগত্যা মশা নিধনে তালা ভাঙতে একেবারে হাতুড়ি হাতে তুলে নিলেন দক্ষিণ দমদমের জনস্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কাজে তাঁকে সঙ্গত দিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ গোপা পাণ্ডে এবং স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎ রায়চৌধুরী।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত প্রাইভেট রোডের একটি বাড়ি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জমা পড়ছিল। ডেঙ্গি-নিয়ন্ত্রণ দলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের বক্তব্য ছিল, ওই বাড়িতে বেশ কিছু খোলা জলাধার রয়েছে। পাশাপাশি বাড়ির সামনের অংশে আগাছা জন্মে মশার বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ওই কর্মীদের অভিযোগ ছিল, বাড়িতে ঢুকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে চাইলেও তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করা হয়নি। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎবাবু জানান, ওই জমিটি কয়েক বছর আগে কিনে নেন শঙ্করপ্রসাদ সরকার নামে এক প্রোমোটার। তার পরে সেটির কিছুটা অংশে বাড়ি তৈরি করা হলেও সামনের অংশ ফাঁকাই পড়ে ছিল। সেখানেই ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী মশার লার্ভা জন্মানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘বাড়িতে যাতে পুরকর্মীরা ঢুকে সাফাইয়ের কাজ করতে না পারেন, সে জন্য তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।’’

দেবাশিসবাবুর বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে প্রোমোটারকে একাধিক বার কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়। কিন্তু বহু আবেদন-নিবেদনেও কাজ না হওয়ায় স্থানীয় থানায় জানিয়ে বাড়ির তালা ভেঙে সাফাই অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন পুর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে ওই বাড়ির ভিতরের খোলা জলাধার। সোমবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

যেমন ভাবা তেমন কাজ। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ বাড়ির সামনে হাজির হয়ে যান জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। এর পরে হাতুড়ি দিয়ে তালায় ঘা মারতে থাকেন দেবাশিসবাবু। বাড়ির ভিতরে ঢুকে পুর প্রতিনিধিরা দেখেন, একাধিক জলাধারে জল জমে আছে। সেখানে লার্ভার পাশাপাশি রয়েছে পূর্ণাঙ্গ মশাও। সব দেখে জনস্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘কী অবস্থা করে রেখেছে! এদের জন্য তো গোটা এলাকাকে ভুগতে হবে।’’

পুর প্রতিনিধিরা সাদা বালি সঙ্গে করেই এনেছিলেন। হাতুড়ি দিয়ে তালা ভাঙার পরে বেলচা দিয়ে জলাধারে বালি ঢালতে শুরু করেন জনস্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ। তাঁকে সে কাজে সাহায্য করেন কাউন্সিলর। এরই মধ্যে মশা নিয়ন্ত্রণে কী কী করতে হবে, তা দ্রুত জরিপ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ গোপাদেবী। সেই সব নির্দেশ শিরোধার্য করে প্রায় দু’ঘণ্টা পরে অভিযান সেরে ফিরতি পথ ধরেন পুরকর্মীরা।

দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘এ দিনের অভিযানের আগেও প্রোমোটারকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। যা অবস্থা দেখে এলাম, তাতে ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন