মদন মিত্রের ছবিতে আবির এক তৃণমূল সমর্থকের।— নিজস্ব চিত্র।
ভোট-প্রচার থেকেই তিনি আছেন। তাঁর ছায়ায় ভর করেই ভোটে লড়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। ফল ঘোষণার দিনও তিনি থাকলেন। সশরীরে নয়, গেঞ্জিতে!
কামারহাটির বিধায়ক তথা পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের ছবি আঁকা গেঞ্জি গায়েই মঙ্গলবার গণনা কেন্দ্রে উল্লাসে ফেটে পড়লেন তৃণমূলকর্মীরা। ‘দাদা’কে (মদন) সামনে না পেয়ে তাঁর ছবিতেই মাখানো হল সবুজ আবির।
বরাহনগর, কামারহাটি, খড়দহ পুরসভার ফলাফল নিয়ে সকাল থেকেই উচ্ছ্বসিত ছিলেন পিজিতে ভর্তি মদন মিত্র। হাসপাতালে শুয়েই তৈরি করেছিলেন কামারহাটির প্রার্থী তালিকা। তাই ফল জানতে মুখিয়ে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। মন্ত্রীর ইচ্ছেপূরণে দুপুরেই পিজিতে পৌঁছয় ফল সংক্রান্ত ‘গোপন চিঠি’। পাঠান কামারহাটির বিদায়ী চেয়ারম্যান গোপাল সাহা। ফল জানতে বাড়ি থেকে রেডিও আনান মদন।
কামারহাটির ৩৫টি আসনের ৩০টি পেয়েছে তৃণমূল। সিপিএমের ঝুলিতে মাত্র ৫টি। ৪৪ বছর বাদে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন মদন ঘনিষ্ঠ বিশ্বজিৎ গণ। আবার বরাহনগরে গত বারে ১৪টি আসন পেয়ে পুরসভায় বিরোধী ছিল বামেরা। এ বার মিলেছে মাত্র ২টি। বাকি ৩২টি শাসকদের। ১৭ নম্বরে সিপিএমের কিশোর গঙ্গোপাধ্যায়ের জামানত জব্দ হয়েছে তৃণমূলের অঞ্জন পালের কাছে। ১১ নম্বরে তৃণমূলের কাছে হারেন বিরোধী দলনেতা সিপিএমের অশোক রায়।
খড়দহে ১টি মাত্র আসন পেয়েছে কংগ্রেস। ২২টি আসনের ১৮টি পেয়েছে তৃণমূল। সিপিএম মাত্র ২টি। প্রতি বারের মতোই ১৩ নম্বরে জয়ী নির্দল।
ব্যারাকপুরে ২৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১৭টি, সিপিএম ৪, বিজেপি ১ ও নির্দল ২টি। টিটাগড়ে ২৩টির মধ্যে তৃণমূল ১৬, নির্দল ৩, কংগ্রেস ১, বামেরা ৩টি আসন পেয়েছে। উত্তর ব্যারাকপুরে ২৩টির মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ২০, নির্দল ২ ও সিপিএম ১টি।
সোদপুর এবং ব্যারাকপুরে গণনা কেন্দ্রের সামনেই উল্লাসে মাতেন তৃণমূলকর্মীরা। দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের জোয়ারেই এই ফল।’’ সিপিএমের নেপালদেব ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘উন্নয়ন দেখাতেই কি ভোটের দিন বহিরাগত-রিভলভার আনা হয়েছিল!’’ বিজেপির গোপাল সরকারের দাবি, ‘‘এটা মানুষের রায় নয়।’’