প্রচারসভায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও বিধায়ক তথা তৃণমূলের পুর প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত। রবিবার, সল্টলেকে। — নিজস্ব চিত্র।
তিরিশ শতাংশেরও বেশি ভোট। লোকসভায় তার অনেকটাই গিয়েছিল বিজেপির বাক্সে। বিধাননগরে তৃণমূলের চেয়ে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার ভোটে এগিয়েছিল বিজেপি।
বিধাননগর পুরনিগমের নির্বাচনী প্রচার শুরু হতেই তাই সেই অবাঙালি ভোটারদের পেতে মরিয়া শাসক দল। রবিবার বিধাননগরে অবাঙালিদের নিয়ে একটি বৈঠকে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ব্যবসায়ী কমল গাঁধী বলেন, ‘‘উন্নয়ন ও সমাজসেবার পাশে অবাঙালিরা ছিল, থাকবে। কোনও রাজনৈতিক দল নয়, সরকারের পাশে আছি। তাই স্থানীয় স্তরে তৃণমূলকেই সমর্থন দেব।’’ স্থানীয় স্তর বলতে পুরসভা-বিধানসভার কথাই বলেছেন তাঁরা। লোকসভার ক্ষেত্রেও দেশের গদিতে যে বসবে, তাঁদেরই সমর্থন দেবেন তাঁরা। লোকসভার নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’টো লাড্ডুর গল্প শুনিয়েছিলেন রাজ্যবাসীকে, কেন্দ্রে বিজেপি আর রাজ্যে তৃণমূল। এ দিনের বৈঠকে সেই কথার প্রতিধ্বনিই উঠে এল।
এ দিন বিধাননগর পুরনির্বাচনে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে শাসক দলের প্রার্থী তথা রাজারহাট-নিউ টাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের সমর্থনে তাঁতিয়া হলে একটি বৈঠক করেন অবাঙালিরা। তাতে উপস্থিত ছিলেন বিজয় সিংহনিয়া, বিজয় গাড়োদিয়া, এস পি চন্দকের মতো উদ্যোগপতি ও ব্যবসায়ীরা। অবাঙালিরা স্লোগান তোলেন, ‘‘আমাদের ঘরের ছেলে, তাঁকে ভোট দিতে হবে।’’ এই ‘ঘরের ছেলে’ হলেন সব্যসাচী। যদিও বৈঠকে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘প্রতিটি প্রার্থীর জন্যই আপনাদের সহযোগিতার প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের পরিকল্পনা সফল করতে গেলে প্রতিটি আসনে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত করতে হবে।’’ পুরমন্ত্রীকে সেই সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন অবাঙালিরা।
এই বৈঠকের সমালোচনা করে বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভাষার ভিত্তিতে বিভাজনের রাজনীতি করে তৃণমূল ভোট চাইছে।’’ তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা বক্তব্য, এমন অভিযোগ বিজেপি-র মুখে মানায় না। সকল সম্প্রদায়কে নিয়ে কাজ করাই তৃণমূলের নীতি।
এ দিকে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য বিধাননগরের তৃণমূল নেতা অনুপম দত্ত, মানস দত্ত এবং রাজারহাটে দেবরাজ চক্রবর্তী ও সমীর হাজরাকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। এঁদের মধ্যে তিন জন নির্দল ও কংগ্রেসের টিকিটে এ বারে পুরনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ দিন সন্ধ্যায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানান খাদ্যমন্ত্রী, তৃণমূলের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।