হোটেলে খাতির-যত্নের ফাঁকে ক্যামেরা নিয়ে পগার পার

তথ্যচিত্র বানানোর টোপ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হত আলোকচিত্রীদের। রীতিমতো জামাই আদর করে তাঁদের হোটেলে রাখা হত। সঙ্গে দামি ক্যামেরা আছে, এই যুক্তি দেখিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে ঘরের তালা-চাবি নিজের কাছেই রাখত আপ্যায়নকারী

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

একে বলে ভ্রাম্যমাণ চোর!

Advertisement

তথ্যচিত্র বানানোর টোপ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হত আলোকচিত্রীদের। রীতিমতো জামাই আদর করে তাঁদের হোটেলে রাখা হত। সঙ্গে দামি ক্যামেরা আছে, এই যুক্তি দেখিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে ঘরের তালা-চাবি নিজের কাছেই রাখত আপ্যায়নকারী। রাতে হোটেল থেকে কিছুটা দূরে সকলে যখন খেতে ব্যস্ত, সে সময়ে জল আনার কথা বলে হোটেলে ফিরে ঘর থেকে ক্যামেরা হাতিয়ে উধাও হত সে।

এ ভাবে জালে ফেলা গিয়েছিল ছ’জন আলোকচিত্রীকে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কারবার ফাঁস হয়ে যায় চোরের। শুভদীপ সরকার নামে এক আলোকচিত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম নীলেশ মণ্ডল। উদ্ধার হয়েছে ছ’টি ক্যামেরা, চারটি ল্যাপটপ-সহ ছবি তোলার একাধিক যন্ত্র। ধৃতকে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হলে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, মাস দু’য়েক আগে ছ’জন আলোকচিত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নীলেশ। শুটিং করার কথা বলে তাঁদের দু’জনকে নিয়ে পুরী যায়। পুলিশ জেনেছে, পুরীতে হোটেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে ঘরের জন্য নিজের কাছে থাকা তালা-চাবি ব্যবহার করে সে। শুভদীপ পুলিশকে জানিয়েছেন, রাতে তাঁরা বাইরে খেতে গিয়েছিলেন। তখন নীলেশ জানায়, জল আনার জন্য তাকে হোটেলে ফিরতে হবে। ওই দু’জন যেন অপেক্ষা করেন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরেও নীলেশ না ফেরায় সন্দেহ হয় শুভদীপ এবং তাঁর সঙ্গীর। তাঁরা হোটেলে ফিরে দেখেন, তাঁদের ক্যামেরা উধাও। এর পরেই শুভদীপ পুরী থানায় জেনারেল ডায়েরি করেন। কলকাতায় ফিরে জানতে পারেন, তাঁদের মতোই আরও চার আলোকচিত্রী একই ভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, শুটিং করার টোপ দিয়েই নীলেশ আরও তিন আলোকচিত্রীকে নিয়ে গিয়েছিল কটকে। আর এক জনকে হাজারদুয়ারিতে। সে সব জায়গাতেও একই কায়দায় প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল সে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর অভিযোগ পেয়ে গরফা থানার পুলিশ গড়িয়াহাটের একটি হোটেল থেকে নীলেশকে ধরে। জানা গিয়েছে, সে নাম ভাঁড়িয়ে ওই ছ’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘একই কায়দায় ওই যুবক একাধিক লোককে ঠকিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন